মো: দিদারুল ইসলাম. পেকুয়া প্রতিনিধি >>> চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জের অধীনে বনভূমির অভ্যন্তরে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সময় বনবিভাগের অভিযানে ৪টি মেশিন ও সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।বিগত ৩০ এপ্রিল বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ও টইটং সীমান্ত প্রবাহিত ছড়ার পাদদেশে কৃত্রিম উপায়ে প্রক্রিয়া করণের মাধ্যমে পাহাড় কেটে বালিতে রুপান্তর করে মেশিনের সাহায্যে বালি উত্তোলনের সময় চৌকিদার পাড়ার অংশ থেকে শফিউল আলম ও বাদশাহর মেশিনসহ বালি উত্তোলনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। অবৈধ বালি উত্তোলনের দায়ে ৪টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।স্থানীয় সচেতন মহল বলেন,বিগত সময়ে বনবিভাগের লোকজনকে অনুরোধ করেও আগে পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান করা যেতনা সেখানে বারবাকিয়া রেঞ্জকর্মকর্তা খালেকুজ্জমান যোগদান করার পর পাহাড় কাটা ও অবৈধ বালি উত্তোলনের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে অভিযান অব্যাহত রাখেন। তার অব্যাহত অভিযানে দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কতিপয় অসাধু সংবাদকর্মী সিন্ডিকেট করে নিজেদের ইচ্ছেমত মহাল বসাতে দেয়া চক্রটির সব হিসেব নিকাশ এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় তারা মনগড়া অপপ্রচার ছড়িয়ে বনবিভাগের অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান বলেন, পাহাড় খেকোদের কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবেনা। যতই মিথ্যা অপপ্রচার করা হোক তাদের অপরাধের বিচার হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সাবেক পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমার সময়ে টইটং মধুখালীতে জব্দ করা বালি এখনো অক্ষত থাকলেও বর্তমানে এই বালির স্তুপ বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।মূলত অসাধু একটি চক্র তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পেরে তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে এমন পাগলামি করছে বলে তিনি পেকুয়ার কর্মরত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।বাংলাদেশ পরিবেশ (বাপার)কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, রেঞ্জ কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান যদি ঘুষই নিতেন ৪টি মেশিন জব্দ করতেন না তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করতেন না।তিনি আরো বলেন, টইটং মধুখালীর বালু মহাল জব্দ করে প্রকৃতির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল এবং বালি বের করার রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে সঠিক তথ্য উদঘাটন করুক।পরিবেশবাদী সংগঠন ধরা’র পেকুয়া উপজেলার কোঅর্ডিনেটর দেলোয়ার হোসাইন বলেন, আমরা যারা পরিবেশ নিয়ে কাজ করি খোঁজ নিয়ে দেখেছি ৩/৪বছর ধরে বারবাকিয়া রেঞ্জ অফিসের আওতায় বনভূমির অভ্যন্তরে পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও বালি উত্তোলনের সাথে বনবিভাগের ও স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট জড়িত। সরকার পরিবর্তন হলে নতুন রেঞ্জ কর্মকর্তা যোগদানের পর ধারাবাহিক অভিযান চালানো হলে ওই সিন্ডিকেটটি ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে তাদের এখনই থামাতে হবে। স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানাযায়, বিশেষ করে টইটং বিট কর্মকর্তা জমির বনবিভাগের দায়িত্ব নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে আঁতাত করে কতিপয় সাংবাদিকদের একটি সেন্ডিকেট করে পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল নিধনে লীপ্ত ছিল। বর্তমান রেঞ্জ কর্মকর্তা যোগদানের পর সেন্ডিকেটের সাথে আঁতাত না করায় ওই সিন্ডিকেট বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। একজন বিট কর্মকর্তা কয়েকজন অসাধু সাংবাদিক সিন্ডিকেট করে পাহাড় কেটে বালি উত্তোলনের সময় জব্দ করা মেশিন ছাড়িয়ে নিতে রেঞ্জকর্মকর্তাকে বল প্রয়োগ করা ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করার বিষয়টি চাউর হলে স্থানীয় সচেতন লোকজনের মাঝে বিরোপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মইনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ৫আগষ্টের পটপরিবর্তনের আগে থেকে পেকুয়া উপজেলার পাশ্ববর্তী দায়িত্ব পালনের সুবাদে বনবিভাগের কার্যক্রম নিয়ে অনেক কথা আইনশৃংখলা সভায় পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে। দায়িত্বের সুবাদে পেকুয়ায় আসার পর তখনকার রেঞ্জকর্মকর্তাকে বলে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নিতে শুরু করি। বর্তমান রেঞ্জকর্মকর্তা খালেকুজ্জামান আসার পর পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং করেছি, তাকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তিনি কয়েকটি অভিযান চালিয়ে পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছেন। কিন্তু সংঘবদ্ধ চক্রটি তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লীপ্ত হয়েছে। পাহাড় রক্ষায় কোন ছাড় দেয়া হবেনা।
মন্তব্য