১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
গোয়ালন্দে আসলাম মিয়ার পক্ষে লিফলেট বিতরণ  বান্দরবানে এসএসসি পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা এসএসসি পরীক্ষায় পটুয়াখালী  ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে  শিক্ষার্থীরা ফেল। নবীগঞ্জে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ বিশ্বমঞ্চে আলোকিত কুমিল্লার সন্তান । মাদ্রাসা থেকে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়: অধ্যাপক ইমরান আনসারীকে সংবর্ধনা” পাহাড় ধসের আশঙ্কায় লামার সব পর্যটনকেন্দ্র ও রিসোর্ট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে সব প্রস্তুতি আছে: বিজিবি মহাপরিচালক রাঙ্গুনিয়ায় মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি রাষ্ট্রপতির শাহ মোহাম্মদ বদিউল আলমের WHAT IS MAN বইয়ের ৩য় সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন
আন্তর্জাতিক:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৮২ ইরানী’র ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ‘মূল প্রযুক্তির গুঁড়িয়ে দিয়েছে কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করল ইরান ইসরাইলি হামলায় ১১ দিনে ইরানে নিহত ৫০০ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। কোস্ট ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক শরনার্থী দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা ঈদের পর লন্ডন সফরে যাচ্ছেন ড. ইউনূস রাতব্যাপী আলোচনার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান, ঘোষণা ট্রাম্পের পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত’ ভারতের ১৫টি শহরে পাকিস্তানের পাল্টা হামলা, উভয় দেশে তীব্র সামরিক উত্তেজনা   ভারতের ১২ ড্রোন ভূপাতিতের দাবি পাকিস্তানে
  • প্রচ্ছদ
  • অন্যান্য
  • তন্ত্র-মন্ত্রের ঐতিহ্যের পাতা খেলা দেখতে বিনোদন প্রেমীদের ঢল
  • তন্ত্র-মন্ত্রের ঐতিহ্যের পাতা খেলা দেখতে বিনোদন প্রেমীদের ঢল

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    আনোয়ার হোসেন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)প্রতিনিধি >>> নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ঢোলের তালে আর তন্ত্র-মন্ত্রের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রাম বাংলার লোকজ ঐতিহ্যের চিত্তাকর্ষক ও মনোমুগ্ধকর পাতা খেলা। গত বুধবার (১৮ জুন) বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের নয়ানখাল চেয়ারম্যান হাট নামক স্থানে এ খেলার অনুষ্ঠিত হয়। ওই ইউনিয়ন শাখা বিএনপির সহ-সভাপতি ওবায়দুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ও যুব সমাজের আয়োজনে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় পাতা খেলার আয়োজনের কথা শুনে দূর-দূরান্তরসহ স্থানীয় নানা বয়সি বিনোদনপ্রেমী মানুষ বেলা গড়ার সাথে সাথে খেলা প্রাঙ্গণে ভিড় জমায়।এসময় মাঠের চারপাশ হাজার হাজার মানুষের পদচারণা, শোরগোল আর উপচে পড়া ভিড়ে পাতা খেলাটি জীবন্ত উৎসবে পরিণত হয়। মন্ত্র শক্তির মনোমুগ্ধকর এ খেলা দেখে তারা উল্লেসিত ও উচ্ছ্বেসিত হয়ে পড়েন। আয়োজকরা জানান, এ উৎসবে সব বয়সী এত মানুষের উপস্থিতি জানান দেয় যে, পাতা খেলা প্রায় হারিয়ে গেলেও এখনো এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই হাট সংলগ্ন একটি বিশাল ফসল শুন্য মাঠের চারপাশ গোলাকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার নানা বয়সী মানুষ। এতে বাদ পড়েনি নারী ও শিশুরাও। তার (মাঠের) মধ্যে খানে পুঁতে রাখা কলা গাছের চারপাশ বসে আছে ৫/৬ জন লোক। যা গ্রামীণ ভাষায় তাদেরকে পাতা বলা হয়।মন্ত্রের মাধ্যমে নিদিষ্ট বৃত্তের মধ্যে রাখা হয়েছে গাছটি। গাছের পাশে রাখা হয়েছে তন্ত্র-মন্ত্রের পানি ও বাঁশের চাইলনে কলা-ধুপকাটি। আর দর্শক সারিতে অবস্থান নেয় স্থানীয়সহ বিভিন্ন প্রান্তের ৫/৬টি মন্ত্র পাঠক বা ওঝা বুড়ির দল। তারা ঢাকের বাজনার তালে তালে তন্ত্র মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে কলা গাছের বৃত্তের মধ্যে মন্ত্রবানে আবদ্ধ থাকা পাতা গুলোকে নিজেদের কাছে টানার জন্য চলে টান টান উত্তেজনার শারিরীক অঙ্গভঙ্গির নানা কলাকৌশল। এসময় মন্ত্রবানে ভর হওয়া পাতাগুলোর মধ্যে কেউবা কলা গাছের উপরে উঠে বসে থাকে। এই পাতাকে হনুমান পাতা বলা হয়। আবার এদের মধ্যে কেউবা বেহুশ হয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করাসহ নানা অঙ্গীর মাধ্যমে মন্ত্র টানা ওঝা বুড়ির দিকে ছোটা ছুটি করে। এরই মধ্যে পাতা বুড়ির ঘরে প্রবেশ করলে যে যত বেশি পাতা নিজের কাছে টানতে পারবে সে এই খেলায় বিজয়ী হয়। অনুষ্ঠিত এ সেমিফাইনাল খেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যতম তান্ত্রিক মাজহারুল ইসলাম মিষ্টিার হনুমান পাতাকে টেনে সেরা কৃতিত্ব অর্জন করেন। অন্য অংশগ্রহণ কারী শ্রৗ কৃষ্ণ চন্দ্র ১টি, রহমত আলী কোরবান ১টি, দেলোয়ার রহমান ১টি, শ্রী পোটোল চন্দ্র ১টি পাতা টানার মধ্যে দিয়ে খেলা ড্র হয়।তান্ত্রিক মাজহার বলেন, এই পাতা খেলা গ্রামীণ মানুষের আন্ন্দ-বিনোদনের একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। এ খেলায় তান্ত্রিকদের মন্ত্রের শক্তি পরিক্ষা হয়। যে যত মন্ত্রের শক্তি দেখাতে পারবে সে বিজয়ী হবে। বিগত কয়েক বছর ধরে এ খেলায় অংশগ্রহণ করে অনেক শুনাম কুড়িয়েছি।খেলা দেখতে আসা যুবক মিজু সরকার, মিজানুর রহমান,স্বপন মিয়াসহ কয়েকজন দর্শক জানান, সময়ের বির্বতনে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। মন্ত্রবানে পাতা খেলাটি মনোমুগ্ধকর ও অত্যন্ত আনন্দের। লোকমুখে এ খেলার কথা শুনে আমরা বাড়িতে থাকতে পারিনি। খেলাটি দেখতে হ্ইুহুল্লোর করে এখানে ছুটে এসেছি। বেশ আনন্দ চিত্তে খেলাটি আমরা উপভোগ করলাম। নারী দর্শক মনিরা আক্তার ও কুলসুম বেগম বলেন, জীবনের এই প্রথম দেখলাম এমন অদ্ভুত খেলা পাতা খেলা । তান্ত্রিকদের মন্ত্র ভিত্তিক খেলাটি সত্যিই উপভোগ্য। অনেক আনন্দ ভরে খেলাটি উপভোগ করলাম। এ খেলা যাতে হারিয়ে না যায় তা নিয়মিত আয়োজনের দাবি জানান তারা।আয়োজক ওবায়দুর রহমান বলেন, আগে গ্রামীণ মানুষের আনন্দ-বিনোদনের জন্য পাতা খেলার ধুম ছিল। এখন নানাবিধ কারণে এ খেলার আয়োজন নেই বললে চলে। এতে করে নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে, সমাজ থেকে অন্যায় অপরাধ দুর করতে এবং বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির একটি অনন্য প্রতীক পাতা খেলা ধরে রাখতে এই আয়োজন। বিশেষ করে গ্রাম বাংলার মানুষের সংস্কৃতির খেলা উপভোগ করার জন্য নারী-পুরুষ ও শিশুরাও এই পাতা খেলা উপভোগ করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন। তারা এই খেলা প্রাণভরে উপভোগ করে মুগ্ধ হয়েছেন। যা আগামীতেও এই ধারা অব্যহত থাকবে বলেও তিনি জানান। স্থানীয় সচেতন মহল জানান, যুবসমাজের অবক্ষয়রোধে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এরকম আয়োজন রাখতে পারে কার্যকরী ভূমিকা। এজন্য দরকার সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এমনটাই দাবি তাদের।

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page