এম ইদ্রিস ইমন, মোংলা (বাগেরহাট):
মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে শনিবার (২০ মে) থেকে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদী- খালে সব ধরনের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য অধিদপ্তর ও বন বিভাগ। এই নিষেধাঞ্জার ফলে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে ও ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ শিকার করতে পারবেন না জেলেরা।পাশাপাশি প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন রাখতে আগামী ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে পর্যটনবাহী নৌযান চলাচলও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ সুন্দরবনে তিন মাস বন্ধ থাকবে পর্যটকদের যাতায়াত।শুক্রবার নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি জানিয়ে মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এই সময়টাতে কোনোভাবেই জেলেরা সমুদ্রে মাছ আহরণ করতে পারবেন না।নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে সমুদ্রনির্ভর নিবন্ধিত ২ হাজার ৬৪০ জেলের প্রত্যেককে দুই দফায় ৮৬ কেজি করে চাল দেয়া হবে বলেও জানান মৎস্য কর্মকর্তা।সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, ২০ মে থেকে মৎস্য অধিদপ্তরের জারিকৃত সাগরে নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে বন বিভাগেরও একাত্মতা আছে, অর্থাৎ এ সময়ে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে সুন্দরবনেও। এ ছাড়া ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাছ ও বন্য প্রাণীর প্রজনন মৌসুম হওয়ায় এই সময়ও সুন্দরবনের নদী-খালে কোনো প্রকার মাছ শিকার করতে পারবেন না জেলেরা। সেই সঙ্গে মাছ ও বন্য প্রাণীর প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে বন্ধ থাকবে সুন্দরবনে পর্যটনবাহী নৌযান চলাচলও।বেলায়েত হোসেন আরো বলেন, নৌযান চলাচলে মাছের প্রজনন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত ও নৌযানের বিকট শব্দে বন্য প্রাণীর বিচরণসহ প্রজনন কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়ে থাকে। তাই সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে তিন মাস।মোংলা উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, মোংলা উপজেলায় সরকারী ২ হাজার ৬৪০ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এছাড়া মৎস্য আহরনের উপর নির্ভিরশীল আরও আড়াই হাজার জেলে রয়েছেন।তবে জেলেদের দাবি, মোংলায় সাগরনির্ভর জেলে রয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি। আর সুন্দরবন নির্ভর জেলে রয়েছেন পাঁচ হাজার। ফলে ১০ হাজারেরও বেশি জেলেকে এই নিষেধাজ্ঞাকালে মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতে হবে তাদের। এর ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে তাদের।
মন্তব্য