মৌলভীবাজারের প্রতিনিধি:
ভিকটিম মৃত চাম্পা লাল মুন্ডা (৩৭), পিতা-মৃত রামজি মুন্ডা, সাং-পদ্মছড়া চা বাগান, থানা-কমলগঞ্জ, জেলা-মৌলভীবাজার প্রায় ২/৩ বছর যাবৎ ডলুছড়ায় জনক দেববর্মার লেবু বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করিয়া আসিতেছে। উক্ত লেবু বাগানে আসামী বিশ্বনাথ তাঁতী (৪৫) বিগত ২ মাস যাবৎ কাজ করে তাহার বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রীসহ বাগানের ভিতর একটি ঘরে বসবাস করিয়া আসিতেছে। ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডা নিয়মিত ভাবে ভোর বেলা বাগানের লেবু ঠেলা গাড়িতে করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে শ্রীমঙ্গল বাজারে নিয়ে যাইত। গত ১৪/০৫/২০২৩ইং তারিখ ভোর বেলা ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডা বাজারে না আসার কারনে মামলার ২নং সাক্ষী জয় কুমার দেববর্মা চাম্পালাল মুন্ডার মোবাইলে ফোন দেয়। ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডা ফোন রিসিভ না করার কারণে লেবু বাগান মালিক জনক দেববর্মা সহ তার লোকজন বাগানের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করিয়া ১৪/০৫/২০২৩খ্রিঃ তারিখ সকাল অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকার সময় লেবু বাগানের ভিতরে মাটির রাস্তায় গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় চাম্পালাল মুন্ডাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষনিক লেবু বাগান মালিক জনক দেববর্মাসহ তার লোকজন চাম্পালাল মুন্ডাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার পূর্বক চিকিৎসার জন্য শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪/০৫/২০২৩খ্রিঃ তারিখ ০৮.১০ঘটিকার সময় চাম্পালাল মুন্ডা মৃত্যু বরণ করে। এই ঘটনার সংবাদ পেয়ে মাননীয় পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শ্রীমঙ্গল সার্কেল এবং অফিসার ইনচার্জ, শ্রীমঙ্গল থানা সাহেবের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব মোঃ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই/রাবিকুল হাছান, এসআই/মোঃ রফিকুল ইসলাম, এসআই/তীথংকর দাস এবং এসআই/মোঃ জিয়াউর রহমানসহ একটি চৌকস দল রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ দ্রæত শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত দেহ ময়না তদন্তের নিমিত্তে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব মোঃ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে চৌকস দলটি ডলুছড়া লেবুর বাগানে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য যান। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বিশ্বনাথ তাঁতীকে লেবু বাগানে পাওয়া যায় নাই। বিশ্বনাথ তাঁতীর বসত বাড়ীর উঠানের বিভিন্ন জায়গায় রক্তের দাগএবং তার বসত বাড়ীর সামনের রাস্তায়ও রক্তের দাগ দেখতে পান। এই ঘটনায় বিশ্বনাথ তাঁতীকে সন্দেহ ইলে তথ্য প্রযুক্তি এবং স্থানীয় পুলিশ বন্ধুদের সহায়তায় কমলগঞ্জ থানাধীন পাত্রখলা চা বাগানের ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সাঁড়াসি অভিযান চালিয়ে বিশ্বনাথ তাঁতীকে থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে করিলে সে জানান যে, গত ১৩/০৫/২০২৩ইং তারিখ রাত অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডাকে বসত ঘরে তার স্ত্রীর পাশে শুয়া অবস্থায় দেখতে পাইয়াসে নিজেই লাঠি দিয়ে চাম্পালাল মুন্ডার কপালে ও পিঠে একাধিক আঘাত করিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে চাম্পালাল মুন্ডা গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় লেবু বাগানের ভিতরের মাটির রাস্তায় পড়ে থাকে। ঘটনার পর বিশ্বনাথ তাঁতী তাহার বাক-প্রতিবন্ধী স্ত্রী কে ঘরে রেখে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতীর নিকট থেকে ভিকটিম চাম্পালাল মুন্ডার ব্যবহৃত আইটেল মোবাইল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতী চাম্পালাল মুন্ডা হত্যান্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছে। গ্রেফতারকৃত বিশ্বনাথ তাঁতী কে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হইবে।
মন্তব্য