পেকুয়া প্রতিনিধি >>> কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান আজিজুল হকের বিরুদ্ধে বিধবার বসতবাড়ি জবর দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত ৩০শতক যায়গা বিধবা মহিলাসহ তাঁরা তিন ভাই বোন মালিক। সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জায়গার ওয়ারিশরা পরষ্পর নিকটাত্মীয় হন। বিগত এক যুগ পুর্বে ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হককে ওই জায়গা দেখভাল এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জায়গাটি সোনালী বাজার সংলগ্ন হওয়ায় দেখভাল’র দায়িত্বে থাকা আজিজ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ওই জায়গা ভাড়া দেন। এমনকি কৌশলে জায়গার মালিকদের কাছ থেকে একটি ননজুডিশিয়াল খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। পরবর্তীতে ওই ষ্ট্যাম্পটি বিক্রিনামা চুক্তিপত্র দেখিয়ে বিধবা, তাঁর বোন ও মানসিক প্রতিবন্ধী একমাত্র ভাইকে চিরতরে জায়গা থেকে উচ্ছেদ করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।এদিকে ওই জায়গা নিয়ে চকরিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে অপর মামলা ১৩৮/২০১৮ চলমান আছে। গৃহ উচ্ছেদের খাস দখল পাওয়ার জন্য বিভাগের মামলা রজু করা হয়েছে। উজানটিয়া ৫ নং ওয়ার্ড নতুন ঘোনার মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র মুহাম্মদ আলী, দু’কন্যা ছেনুআরা বেগম ও মিনুআরা বেগম বাদি হয়ে একই এলাকার মৃত নুরুল ইসলাম এর পুত্র পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হককে বিবাদী করে।মামলার আরজিতে তারা উল্লেখ করেন, নতুন ঘোনা এলাকায় মৃত ছৈয়দ আহমদের ত্রিশ শতক জায়গার মালিক মুহাম্মদ আলী, ছেনুয়ারা ও মিনুআরা। ত্রিশ শতকের মধ্যে পনের শতক জায়গা তাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তি। অন্যদিকে পনের শতক জায়গা সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। জায়গাটি ছৈয়দ আহমদের বসতভিটা লাগোয়া অংশ। ছৈয়দ আহমদের পুত্র মুহাম্মদ আলী মানসিক ভারসাম্যহীন। পিতা-মাতা মারা যাওয়ার পর মুহাম্মদ আলী ভবঘুরে থাকতেন। বিয়ে হয়ে গেছে দুই মেয়ের। পৈত্রিক জায়গা দেখভাল করার ছিলনা কেউ। ভাইস চেয়ারম্যান আজিজ ও ছেনুআরা গং আপন মামাতো-ফুফাতো ভাইবোন হন। এ সুবাধে পৈত্রিক বসতভিটা দেখভাল’র দায়িত্ব দেওয়া হয় আজিজকে। তবে খাল কেটে কুমির আনার মতো দশা হয়ে গেল জায়গাটি নিয়ে। লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির অসহায়ের জায়গা নিয়ে। কু-পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করে একটি স্কুল। সোনালী বাজার সাজেদা বেগম উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য এ জায়গা মাসিক ভাড়ায় দিয়ে দেওয়া হয়। সাজেদা বেগমের পুত্র আমেরিকা প্রবাসী আব্দু রহিম এ জায়গা আজিজের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল। সে সময় ছেনুয়ারা গং এ জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান আজিজ স্কুল ভাড়াসহ একটি দোকান ঘরের ভাড়া নির্ধারণপূর্বক জায়গার মালিক পক্ষের সাথে কৌশলে সমঝোতায় পৌঁছেন। দিয়েছিলেন কয়েক দফা ভাড়ার টাকাও। পরবর্তীতে একটি ননজুডিশিয়াল অলিখিত ষ্ট্যাম্পে মালিক পক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে নেন আজিজ। ওই ষ্ট্যাম্পটি পরবর্তীতে বিক্রি চুক্তিনামা সম্পাদন দেখিয়ে উচ্ছেদ পায়তারা করছে। সম্প্রতি বসতভিটা থেকেও বিধবা মহিলাকে উচ্ছেদের পায়তারায় মেতেছে প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি। জায়গা জবর দখল নিতে ইতিমধ্যে কয়েক দফা হানা দেয়। মালিক পক্ষের উপর চলমান আছে মানসিক নির্যাতন ও হয়রানি। একাধিক কাল্পনিক ঘটনার দেখিয়ে মামলার আসামি করে ছেনুয়ারা গংদের।এ ব্যাপারে ছেনুয়ারা বলেন, এটা আমাদের পৈত্রিক বসতভিটা। ৫০ বছর ধরে এখানে আছি। ভাইস চেয়ারম্যান আজিজ আমার আপন ফুফাতো ভাই। এত বড় বেঈমানি আল্লাহ সহ্য করবেনা। রের্কড়ীয় জায়গায় স্কুল আছে। খাস জায়গায় বসতবাড়ি। স্কুলের নাম দিয়ে কৌশলে আমাদের জায়গা জবর দখল করে রেখেছে। এখন বসতভিটা থেকেও উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। বাপের ভিটায় আমি একাই থাকি। এখন চরম ভয়ে আছি। আজিজ যেকোন মুহুর্তে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে হানা দিতে পারে।অভিযুক্ত ভাইস-চেয়ারম্যান আজিজুল হকের কাছে জানতে তার ব্যবহৃত মুটোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ না দেয়ায় বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য