সোহেল রানা,তানোর(রাজশাহী) প্রতিনিধি>>> রাজশাহীর তানোরের আলোচিত মেসার্স তামান্না পটেটো কোল্ড স্টোরেজে (হিমাগার) অল্প সময়ের মধ্য কৃষকের রাখা আলুতে গাছ গজানো ও ভারতীয় আলু স্টোরজাত করার অভিযোগ উঠেছে।ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ কোল্ডস্টোর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলা ও গ্যাস সংকটের কারণে এতো অল্প সময়ে আলুতে গাছ গজিয়েছে।তারা আরো বলেন, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারতীয় আলু আমদানি করছে।কিন্ত্ত স্টোর কর্তৃপক্ষ ভুয়া কৃষকের নাম দিয়ে ভারতীয় আমদানি করা প্রায় ১০ হাজার বস্তা আলু স্টোরজাত করেছেন।এতে সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণের মহতী উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।এদিকে ভারতীয় এসব আলু স্টোরে ঢোকাতে-বাহির করার সময় গ্যাস সংকটের কারণে কৃষকের আলুতে গাছ গজিয়ে যাচ্ছে।এসব গাছ গজানো আলুর ওজন কমে যাচ্ছে ও বাজারে দাম কম।এতে বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়েছে আলু রাখা কৃষক ও ব্যবসায়ীগণ।তারা বলেন,কোল্ডস্টোরে অভিযান দিলে ভারতীয় আমদানি করা আলু রাখার সত্যতা মিলবে।এদিকে ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন ১লা মে বুধবার দুপুরে মেসার্স তামান্না পটেটো কোল্ড স্টোরেজে (হিমাগার) গিয়ে দেখা যায়, আলু রাখা সেটে বাছাই প্রক্রিয়া চলছে।এ সময় একাধিক ব্যক্তি বলেন,আলুতে ট্যাক বা গাছ গজানো দেখতে হলে সকালের দিকে আসতে হতো।আলু সেটে ঢালার পর প্রায় আলুতেই এক ইঞ্চি থেকে দেড় ইঞ্চি করে গাছ গজিয়েছে।প্রায় আলুর গাছ পরিস্কার করা হয়েছে।এজন্য এখন কম দেখা যাচ্ছে।গাছ গজানো আলু বিক্রি করা কষ্টকর এবং বাজার দামও কম হবে।কি কারনে গাছ গজিয়েছে জানতে চাইলে তারা জানান ভারত থেকে আমদানি করা আলু হিমাগারে রাখছে আবার সেই আলু বাহির করছে।যার কারনে ঠিকমত গ্যাস দিতে পারেনি।মুলত একারনেই আলুতে গাছ গজিয়েছে।এটার জন্য দায় হিমাগার কর্তৃপক্ষ।তালন্দ ইউনিয়ন ইউপির মোহর গ্রামের ও তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া মহল্লার আলু রাখা জনৈক কৃষক বলেন হিমাগার কর্তৃপক্ষ আলু নিয়ে সিন্ডিকেট করে থাকেন। আলু বিক্রি করার জন্য সকালের দিকে সেটে ফেলার পর প্রতিটি আলুতে গাছ গজিয়ে পড়েছে।দেখে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে পড়েছে।আলু ভালো থাকার জন্য হিমাগারে রাখা হয় অথচ ভালো থাকার পরিবর্তে গাছ গজাচ্ছে।তারা ইদুল ফিতরের পর ভারত থেকে আমদানি করা আলু হিমাগারে রাখার কারনে গ্যাস সংকটে আলুতে গাছ গজিয়েছে।এবিষয়ে জানতে চাইলে মেসার্স তামান্না কোল্ড স্টোরেজের (হিমাগার) ম্যানেজার আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বা তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে হেড অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন।এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান,আমরা তামান্না হিমাগারকে একাধিক বার সতর্ক করেছি।কিন্তু আমাদের তো অভিযান দেয়ার ক্ষমতা নেই।বিষয়টি নিয়ে ইউএনএ স্যারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,বিষয়টি নিয়ে কৃষি বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় অসমর্থিত একাধিক সুত্রও জানান,হিমাগার ভাড়া লুজ প্রতি বস্তা ৩২৫ টাকা,কন্ট্রাক বুকিং প্রতি বস্তা ২৫০-৬০ টাকা, পেট বুকিং ২৩৫-৪০ টাকা,লেবার খরচ প্লাটল বাবদ প্রতি বস্তা ২৫ টাকা,সেট খরচ প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা,লোড প্রতি বস্তায় ৬ টাকা,ওজন প্রতি বস্তায় ৫ টাকা দিতে হয়। তারা আরো বলেন,কৃষককে ঋণ দিলে হিমাগার প্রায় ২৮ শতাংশ সুদ নেয়, বাজার দর থেকে বাকিতে কৃষকের কাছ বস্তা প্রতি ৩০ টাকা বাড়তি নেয়।এছাড়াও যে সব কৃষকরা একজনের নামে বুকিং কেটে ১০ জন মিলে হিমাগারে ৫ হাজার বস্তা আলু রাখলে মজুদদার হিসেবে হিমাগার কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছে তাদের তালিকা দিয়েছে।অথচ যারা ফড়িয়া ব্যবসায়ী হাজার হাজার বস্তা আলু মজুদ করে রেখেছেন তাদের তালিকা দেয়নি হিমাগার কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য