সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ফরিদুল ইসলাম কুটি মিয়াকে মোবাইল ফোনে ডাবর পয়েন্টে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এমন দাবী করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও দরগাপাশা গ্রামের মৃত আজীম উল্ল্যাহ’র ছেলে ফরিদুল ইসলাম কুটি মিয়া।শনিবার দুপুর ১২টায় নিহত ফরিদুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সুনামগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন নিহত ফরিদুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী আয়েশা বেগম। তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন গত ৩রা ডিসেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় তার স্বামী কুটি মিয়ার মোবাইল ফোনে পাশ্ববর্তী বুড়মপুর গ্রামের গেদা মিয়ার ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন একাধিকবার ফোন করে তাকে ডাবর পয়েন্টে যেতে বলেন।
ফোন পেয়ে তাৎক্ষনিক ফরিদুল ইসলাম কুটি মিয়া নিজের মোটর সাইকেলে করে ডাবর পয়েন্টে যান এবং অন্য আরেকটি মোটর সাইকেল দিয়ে ফরিদুলের মোটর সাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে তিনি ডাবর পয়েন্টে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। ঘটনার সময় মূল পরিকল্পনাকারী দেলোয়ার হোসেনের সাথে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথপুর থানার বালিকান্দি গ্রামের হারুণ মিয়ার ছেলে সুয়েব মিয়া(২২),সমর আলীর ছেলে জাকির হোসেন(১৮) ও আব্দুল আহাদের ছেলে সোহাগ মিয়া। নামাংঙ্কিত ব্যাক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফরিদুল ইসলাম কুটি মিয়ার মোটর সাইকেলের সাথে অন্য আরেকটি মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের নাটক বানিয়ে কুটি মিয়ার হত্যা নিশ্চিত করে ডাবর পয়েন্টে লাশ ফেলে রাখেন। পরে নিহত কুটি মিয়ার মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রী আয়েশা বেগমকে ফোন করে ফুরিদুল ইসলাম কুটি মিয়া সড়ক র্দূঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে নিহতের প্রথম স্ত্রী আয়েশা বেগম,দ্বিতীয় স্ত্রী রাশেদা বেগম ও স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরিদুল হককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কৈতক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার ফরিদুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রাতেই সিলেট নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন এবং ময়না তদন্ত শেষে ফরিদুল ইসলামের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার পর দাফন কাফন করা হয়। এদিকে নিহতের ছেলে মাহিন মিয়া বাদি হয়ে গত ৫ ডিসেম্বর হয়ে জেলার জগন্নাথপুর থানার বালিকান্দি গ্রামের হারুণ মিয়ার ছেলে সুয়েব মিয়া(২২),সমর আলীর ছেলে জাকির হোসেন(১৮) ও আব্দুল আহাদের ছেলে সোহাগ মিয়াকে আসামী করে শান্তিগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ঘটনাটি কয়েকদিন অতিবাহিত হলে ও আসামীরা রয়েছেন ধরাছোয়ার বাহিরে। অবিলম্বে মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন নিহতের স্বজনরা।সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিহতের মাতা খায়রুন নেছা,দ্বিতীয় স্ত্রী রাশেদা বেগম,জামিল আহমদ ছব্দর,হাবিবুল ইসলাম বাদশা,ওয়ালিছ আহমেদ,জিহাদ ও কালাশাহ প্রমুখ।এ ব্যাপারে দিলোয়ার হোসেনের(০১৩২৯-১৮৩১৮৯) নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ চৌধুরী মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মন্তব্য