২৮শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
২৮ জুন ইসলামী আন্দোলনের  ঢাকায় মহাসমাবেশ সফল করতে কিশোরগঞ্জে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ বগুড়ায় বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে এসে আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের আ’ত্ম’হ’ত্যা’র চেষ্টা বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বুলেট সহ আটক-১১ মোল্লাহাটে বিভাগীয় কমিশনারের নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত। কিশোরগঞ্জে ইটবাহী ট্রাক উল্টে শ্রমিকের  মৃত্যু  রাঙ্গুনিয়া পোমরায় প্রবাসীর ঘরে ডাকাতি,আহত দুই জন আগামীর বাংলাদেশ হবে জুলুম নির্যাতন ও অন্যায় দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ – মাওলানা আবদুল হালিম ফটিকছড়ির ৩৩ বছর পূর্বের হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার  লবন ও পান চাষিদের নায্য মুল্যের দাবিকে সামনে রেখে মহেশখালিতে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে কিশোরগঞ্জে চুড়ান্ত তন্ত্র-মন্ত্রের পাতা খেলায় খ্যাতিমান তান্ত্রিক মিষ্টারের বিজয়
আন্তর্জাতিক:
কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করল ইরান ইসরাইলি হামলায় ১১ দিনে ইরানে নিহত ৫০০ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। কোস্ট ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক শরনার্থী দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা ঈদের পর লন্ডন সফরে যাচ্ছেন ড. ইউনূস রাতব্যাপী আলোচনার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান, ঘোষণা ট্রাম্পের পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত’ ভারতের ১৫টি শহরে পাকিস্তানের পাল্টা হামলা, উভয় দেশে তীব্র সামরিক উত্তেজনা   ভারতের ১২ ড্রোন ভূপাতিতের দাবি পাকিস্তানে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারত পানি বন্ধ করলে যুদ্ধের ইঙ্গিত পাকিস্তানের

চট্টগ্রাম ভ্রমণ – টুম্পা পাল

  বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

কলমে টুম্পা পাল পশ্চিমবঙ্গ, ভারত:

চট্টগ্রাম জেলা >>> ভ্রমণপিপাসু মানুষদের কাছে চট্টগ্রাম অতি আকর্ষণীয়।একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তেমনই অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শনে ভরপুর। যারা ঘুরতে ভালোবাসেন তাদের কাছে চট্টগ্রাম ভ্রমণ এক অবিস্মরণীয় ও মনমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা। মানসিক তৃপ্তি ও শান্তির জন্য বারবার আসতে হবে চট্টগ্রাম ভ্রমণে।

চট্টগ্রাম বিভাগ >> (চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, নোয়াখালী, ফেনী,লক্ষীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবেড়িয়া, চাঁদপুর )

বানিজ্যিক রাজধানী নামে খ্যাত চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম বিভাগের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল। এর আয়তন ৫,২৮২.৯২ বর্গকিমি বা ২,০৩৯.৭৫ বর্গমাইল। চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয় ১৬৬৬ সালে।সুপ্রাচীন কাল থেকেই বানিজ্যিক ভাবে চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে বিখ্যাত।
চট্টগ্রাম নামকরণ সম্পর্কে তেমন কোনো ইতিহাস না থাকলেও অনেকের ধারণা চীনের রাজকীয় দলিলে চট্টগ্রামকে চাটিকান বলা হয়েছে। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের শেষ দিকে চিনা পর্যটক ইচিঙ বৌদ্ধ ধর্মীয় আহরণের জন্য চট্টগ্রামে আসার পর থেকেই চট্টগ্রাম নামকরণ শুরু হয়।
সীমানা : উত্তরে ফেনী জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে খাগড়াছড়ি, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ও বান্দারবান জেলা, এবং পশ্চিমে ফেনী জেলা মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগর।
নদ নদী : কর্ণফুলী, সাঙ্গু ইত্যাদি।
প্রাকৃতিক প্রাচুর্য ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারনে চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন জেলা হিসেবে পরিচিত।

চট্টগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ >>

চন্দ্রনাথ পাহাড়:
চন্দ্রনাথ পাহাড়টি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে অবস্থিত। সীতাকুন্ড বাজার থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পূর্বে এই পাহাড়টি অবস্থিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে পায়ে হেঁটে কিংবা রিক্সায় করে চট্রগ্রামের সুন্দর দর্শনীয় স্থান চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাওয়া যায়। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের একটু গভীরে গেলে জুমক্ষেত এবং ফুলের বাগান।
চন্দ্রনাথ পাহাড় এর উচ্চতা ১১৫২ ফুট। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাবার পথে ছোট একটি ঝর্ণা দেখা যায় । এই ঝর্ণার পাশ থেকেই পাহাড়ে উঠার রাস্তা। এইখানে মূলত দুইটি রাস্তা রয়েছে। একটি রাস্তা হলো সিড়ি দিয়ে গড়া আর আরেকটি রাস্তা পুরোপুরি পাহাড়ি। সাধারণত ১-২ ঘন্টা লাগে এই পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে। পাহাড়ের চূড়ায় মন্দিরের কাছেই রয়েছে ছোট টং দোকান সেখানে হালকা খাবার এবং পূজা দেয়ার উপকরণ পাওয়া যায়। প্রতি বছর মহাশিবরাত্রি উপলক্ষ্যে প্রচুর হিন্দুধর্মালম্বী এই পাহাড়ে এসে পুজো দেয়।

চন্দনপুরা মসজিদ: >>
চট্টগ্রামের অতি প্রাচীন একটি মসজিদ হলো চন্দনপুরা মসজিদ। চট্টগ্রাম শহরের চকবাজারের সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কে এটি অবস্থিত। ইতিহাস অনুযায়ী, মসজিদটি ১৮৭০ সালে নির্মিত। কথিত আছে, লখনৌ এবং মুম্বাই থেকে আর্কিটেক্ট আনিয়ে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়। অপরূপ সুন্দর এই মসজিদের নকশা দেখলে যে কেউ মুগ্ধ হবে। এটি আন্দরকিল্লা এবং চকবাজার চৌরাস্তার মধ্যে অবস্থিত। মসজিদ-ই-সিরাজ উদ-দৌলা (চন্দনপুরা জামে মসজিদ হিসেবে পরিচিত) বাংলাদেশের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ডের নবাব সিরাজ উদ-দৌলা সড়কের চন্দনপুরা অংশে অবস্থিত একটি মসজিদ। স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত চট্টগ্রামের অতি প্রাচীন চন্দনপুরা মসজিদ। নগরীর চকবাজার ওয়ার্ডের সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কে এটি অবস্থিত। অনেকের কাছে এ মসজিদটি চন্দনপুরা বড় মসজিদ বা তাজ হামিদিয়া মসজিদ নামে পরিচিত। মসজিদটির বয়স ১৫০ বছর।

সাহেব বিবি মসজিদ >>
সাহেব বিবি নামক এই মসজিদটি প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী একটি মসজিদ যা চট্টগ্রামের রাউজানে অবস্থিত। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা হলেন জমিদার আমির মোহাম্মদ চৌধুরীর পত্নী এবং চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ মালকা বানুর মাতা। এতে প্রবেশেএ জন্য ৪ ফুট উভু একটি ফটক রয়েছে। এই মসজিদে রয়েছে একটি গম্বুজ,৮ টি পিলার,৩ টি দরজা ও ২ টি জানালা। মসজিদের পাশেই রয়েছে মরহুম সাহেব বিবির কবরস্থান। এর পাশে রয়েছে সাহেব বিবি দিঘী যা শাহী পুকুর নামেও পরিচিত।

ওয়ালি খান মসজিদ >>
চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকায় ওয়ালি খান মসজিদ নামক একটি মসজিদ রয়েছে যা মুসমিলদের ঐতিহাসিক নিদর্শন বহন করে। ১৮ শতকের এই মসজিদটির নির্মাতা মোঘল ফৌজদার ওয়াল বেগ। মসজিদের প্রবেশপথ ৩ টি এবং এই স্থাপনার চারপাশে রয়েছে অষ্টভুজ। বারবার সংস্করণের কারণে এই মসজিদের সুনিপুণ শৈলি নষ্ট হয়ে গেছে।

বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার >>
বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে অবস্থিত। বায়েজিদ বোস্তামী একজন পার্সিয়ান সুফি ছিলেন। ১৮৩১ সালে পাহাড়ের উপরের দিকে ওনার সমাধি আবিষ্কৃত হয়। এই পাহাড়টির পাদদেশে রয়েছে একটি মসজিদ যা তিন গম্বুজবিশিষ্ট এবং সেখানে রয়েছে একটি দিঘী।এই মাজারের পাদদেশে যে দিঘী অবস্থিত তাতে বায়োজিদ বোস্তামীর কিছু কাছিম এবং গজার মাছ রয়েছে, আঞ্চলিকভাবে এরা মাজারী এবং গজারী নামে পরিচিত। এই কাছিমের প্রজাতি বর্তমানে পৃথিবীতে বিরল এবং বিপনাপন্ন। প্রজননের সময় এদের জন্য পাহাড়ের পিছনে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। কাছিমগুলো মূলত এই মাজারের বিশেষ আকর্ষণ।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত >>
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত এবং চট্রগ্রামের সবচেয়ে সুন্দর দর্শনীয় স্থান। চট্টগ্রাম শহর থেকে এই সৈকতের দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার। শহরের খুব কাছাকাছি হওয়ায় পর্যটকদের জন্য এই স্থানে যাওয়া অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। সৈকতটির দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার। এই স্থানটিকে ঘিরে আরো কিছু প্রকল্প করা হচ্ছে যা সৈকতকে করে তুলবে আরো আধুনিক এবং নান্দনিক। পতেঙ্গা সী বিচে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তর অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যায়। কর্ণফুলী নদী এবং সাগরের মোহনায় অবস্থিত পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বিকেল, সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় সময়টা উপভোগ্য।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের কাছাকাছি আরো কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে; শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ,বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ঘাটি, প্রজাপতি পার্ক ইত্যাদি।

আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ >>
আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ মোঘল স্থাপত্যে নির্মিত একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। ১৬৬৭ সালে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। এই মসজিদটির সাথে মোঘলদের বিজয়ের আনন্দ জড়িত। এই কেল্লায় মগ এবং পর্তুগিজ জলদস্যুদের আস্তানা ছিলো।১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে জানুয়ারি শায়েস্তা খাঁ’র ছেলে উমেদ খাঁ আন্দরকিল্লা জয় করেন। চট্টগ্রাম বিজয়ের এই স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখার জন্য সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে শায়েস্তা খাঁ “আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ” নির্মান করেন। এই মসজিদ তিন গম্বুজবিশিষ্ট যার একটি দেয়াল পোড়ামাটির এবং অন্য ৩ টি পাথরের তৈরি।তাই মসজিদটিকে পাথরের মসজিদ বা জামে সঙ্গীন বলা হয়ে থাকে।
২.৪২ একর জায়গা জুড়ে মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১৬ মিটার ও প্রস্থ ৭.৫ মিটার। এই স্থানটি মুসলিম ধর্মালম্বীদের জন্য পবিত্র স্থান হিসেবে গন্য। নিপুন নির্মাণের এই মসজিদটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৭.৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
চট্টগ্রাম বিজয়ের স্মৃতি সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে সম্রাট আরঙ্গজেবের নির্দেশে শায়েস্তা খাঁ ১৬৬৭ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন।

জাম্বুরী পার্ক >>
জাম্বুরি পার্ক বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের একটি উন্মুক্ত উদ্যান। এটি আগ্রাবাদের এস এম মোরশেদ সড়কে অবস্থিত। ২০১৮ সালে ৮ দশমিক ৫৫ একর জমির ওপর উদ্যানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর, শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন পার্কটি উদ্বোধন করেন।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা >> চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত চিড়িয়াখানা। এটি শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে পাহাড়তলী ইউএসটিসি মেডিকেল কলেজের বিপরীত পাহাড়ের পাদদেশে ১০.২ একর ভূমির উপর অবস্থিত।

ফয়েজ লেক কনকর্ড হল >> ফয়েজ লেক কনকর্ড হল একটি থিম পার্ক কমপ্লেক্স যা বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর ফয়’স লেকে প্রায় ৩২০ একর (১৩০ হেক্টর) জুড়ে ২০০৪ সালে এটি কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কমপ্লেক্সটি ফয়েজ লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড, সি ওয়ার্ল্ড কনকর্ড ও ফয়েজ লেক রিসোর্ট নিয়ে গঠিত।

নজরুল স্কয়ার >> চট্টগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্টের কাছে অবস্থিত ডিসি হিল/ডিসির পাহাড়ের বর্তমান নাম নজরুল স্কয়ার । চারপাশে সুউচ্চ গাছগাছালিতে ঘেরা এই পাহাড়ের চূড়ায় চট্টগ্রাম জেলা কমিশনারের সরকারী বাসভবন রয়েছে। ইংরেজ শাসনামলে শুরুর দিকে এই পাহাড়ের চূড়ায় চাকমা রাজার বাড়ি ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় এখানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের বাংলো তৈরী করা হলে পাহাড়টি ডিসি হিল নামে পরিচিত হয়ে উঠে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রায়শই এখানে অবসর সময় কাটাতে আসতেন। তাঁর এই আগমনকে অম্লান করে রাখতে ২০০৫ সালের ১০ এপ্রিল ডিসি হিলের নাম পরিবর্তন করে নজরুল স্কয়ার রাখা হয়। সত্তরের দশকের শেষ ভাগ (১৯৭৮ সাল) থেকে প্রতিবছর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নজরুল স্কয়ারে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। পহেলা বৈশাখ ছাড়াও এখানে বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও উৎসবে মঞ্চনাটক, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে এই নজরুল স্কয়ার।

জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর >> বিশ শতকের ষাটের দশকের গোড়ার দিকে, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উদ্যোগে জাদুঘরটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়, এবং ১৯৭৪ সালের ৯ জানুয়ারি সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য জাদুঘরটি উন্মুক্ত করা হয়। পরবর্তীকালে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে জাদুঘরে দুটি কক্ষ অন্তর্ভুক্ত হয়। জানুয়ারি ৯, ১৯৭৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলী এই জাদুঘর উদ্বোধন করেন। জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদে অবস্থিত দেশের একমাত্র জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর, যেটি মূলত বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবনপ্রণালী, এবং পারষ্পরিক বোঝাপড়া ও সহকর্মী-অনুভূতি লালনের জন্য প্রতিষ্ঠিত। জাদুঘরে বাংলাদেশের উপজাতি গোষ্ঠীর ইতিহাস সমন্বিত উপকরণের প্রদর্শন করা হয়েছে।এশিয়া মহাদেশের দুইটি জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘরের মধ্য চট্টগ্রামের জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর অন্যতম, অন্যটি রয়েছে জাপানে। এটি গবেষণাকাজেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ২০১৫ সালের হিসেবে, জাদুঘর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন দেশি-বিদেশি গবেষকসহ ২০০-৩০০ জন দর্শনার্থী জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

জিয়া স্মৃতি জাদুঘর >> জিয়া স্মৃতি জাদুঘর চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত একটি জাদুঘর। বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর স্মৃতি রক্ষার্থে বর্তমানে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯১৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ভবনটি নির্মাণ করে। পূর্বে এটি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হত। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম সফরকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের ৪ নং কক্ষে উঠেন। ৩০ মে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হন। সে বছরের ৩ জুন সার্কিট হাউসকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য সরকারি প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং ১৯৯৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এর উদ্বোধন করা হয়। এখানে জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত বেশ কিছু সামগ্রী সংরক্ষিত রয়েছে। এটি মূলত রাষ্ট্রপতি বীরউত্তম জিয়াউর রহমান স্মৃতি জাদুঘর। এখানেই ইতিহাসের অন্যতম একটি হত‍্যাকান্ডের কিছু নমুনা আছে। এখানে একটি লাইব্রেরীও আছে। এটি জিয়াউর রহমান কেন্দ্রিক স্মৃতি জাদুঘর হলেও এখানে তাঁর ব্যক্তিগত বেশ কিছু সামগ্রী ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন নিদর্শন ও দুর্লভ ফটোগ্রাফ সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের ট্রান্সমিটারটি যা দিয়ে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর জিয়াউর রহমান প্রথমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ও পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা জারী করেছিলেন।২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে শহীদ জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে এটিকে স্বাধীনতা কমপ্লেক্স নামে নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর সমন্বয়ে থিম পার্ক হওয়ায় এটি মিনি বাংলাদেশ নামেও পরিচিত। এটি মূলত একটি থিম পার্ক যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোকে অবিকল নতুন করে রূপায়ণ করা হয়েছে। স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন, আহসান মঞ্জিল, সুপ্রিম কোর্ট, কৃত্রিম জলরাশি, কার্জন হল, কান্তজীর মন্দির, দরবার হল, বড়কুঠি, ছোটকুঠি, ছোট সোনা মসজিদ, লালবাগ কেল্লা, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার, সেন্ট নিকোলাস চার্চ, চিরন্তন পল্লি, ট্রেনের নিচে ব্রিজ, ছয়টি কিউচ , পাঁচটি জলের ফোয়ারা ও তিনটি কিডস জোন।এছাড়াও রয়েছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিল রেখে ৭১ মিটার বা ২৩০ ফুট উচ্চতার স্বাধীনতা টাওয়ার। স্বাধীনতা টাওয়ারে রয়েছে একটি রিভলভিং রেস্টুরেন্ট (ঘূর্ণায়মান রেস্তোরাঁ)। ২৩ তলা উচ্চতায় অবস্থিত এই রেস্তোরা থেকে এক নজরে পুরো চট্টগ্রাম শহর, কর্ণফুলী নদী এমনকি বঙ্গোপসাগরও দেখা যায়।

বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার >> বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের একটি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত। ইরানের বিখ্যাত সুফি বায়েজিদ বোস্তামীর নামে গড়ে উঠা এই মাজার চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষের পাশাপাশি চট্টগ্রামে আসা দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্যও একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান। বেশ কিছু মানুষের ধারণা যে এখানেই বায়েজিদ বোস্তামীর কবর অবস্থিত এবং তাঁরা এই বিশ্বাস থেকেই তার কবর জিয়ারত করতে যান। কিন্তু আসলে তা নয়। তাঁর কবর ইরাক (মতভেদে ভারতে) অবস্থিত।এই সমাধির অবয়ব সর্বপ্রথম ১৮৩১ সালে পাহাড়ের উপরিভাগে একটি দেয়ালঘেরা আঙ্গিনার মাঝে আবিষ্কার করা হয়। আঙ্গিনার ঠিক মাঝামাঝি একটি শবাধার অবস্থিত। পরবর্তীতে সমাধিস্থলটি আধুনিক কাঠামো দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। সমাধি পাহাড়ের পাদদেশে একটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মুঘল রীতির আয়তাকার মসজিদ এবং একটি বিশালাকার দীঘি আছে। স্থাপত্যশৈলী থেকে ধারণা করা হয় মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব এর আমলে মসজিদটি নির্মিত।বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারের পাদদেশে একটি সুবিশাল দীঘি অবস্থিত। এর বাসিন্দা হিসাবে বোস্তামীর কাছিম ও গজার মাছ সুবিখ্যাত। আঞ্চলিকভাবে এদের মাজারী ও গজারী বলে আখ্যায়িত করা হয়। বোস্তামীর কাছিম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি অত্যন্ত বিরল এবং চরমভাবে বিপন্নপ্রায় প্রজাতি। বর্তমানে বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার প্রাঙ্গণ ব্যতীত বিশ্বের আর কোথাও এদের দেখা মেলে না। মাজারের দেখাশোনার দ্বায়িত্বে থাকা মাজার তত্ত্বাবধায়ক কমিটির লোকদের দ্বারাই এদের প্রতিপালন করা হয়। বর্তমানে মাজার প্রাঙ্গণ সংলগ্ন এই দীঘিতে দেড়শো থেকে সাড়ে তিনশো কচ্ছপের আবাস রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। প্রজনন মৌসুমে মাজারের মূল পাহাড়ের পেছনে এদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে এদের ডিম পাড়ার ব্যবস্থা করা হয়।মাজারের ভক্তকূল ও আঞ্চলিক জনশ্রুতি অনুযায়ী মাজার প্রতিষ্ঠাকালে এই অঞ্চলে প্রচুর দুষ্ট জ্বীন এবং পাপীষ্ঠ আত্মার পদচারণা ছিলো। বায়েজিদ বোস্তামী তার এই অঞ্চলে ভ্রমনকালে এইসব দুষ্ট আত্মাকে শাস্তিস্বরূপ কাছিমে পরিণত করেন এবং আজীবন পুকুরে বসবাসের দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।

শাহ আমানত সেতু >> শাহ আমানত সেতু বা দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু হলো কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত তৃতীয় সেতু। ২০০৬ সালের ৮ আগস্টে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০১১ সালে শেষ হয়। সেতুটি চালু হওয়ায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ের শিল্প এলাকায় শিল্পের বিকাশে শুধু সহায়ক হওয়ার পাশাপাশি, বান্দরবান এবং কক্সবাজার পর্যটন শহরেও নতুন দিগন্তের সূচনা হয়।শাহ আমানত সেতু বা ৩য় কর্ণফুলী সেতুর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৯৫০ মিটার, প্রস্থ ২৪.৪০ মিটার সেতু যার উপর দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচলের পুরোপুরি উপযোগী। চার লেন, ফুটপাত ও ডিভাইডারসহ মূল সেতু ৮৩০ মিটার। তার মধ্যে ভায়াড্যাক্ট ১২০ মিটার। সেতুর মোট পিলার সংখ্যা ১০টি। এর মধ্যে নদীর মাঝখানে রয়েছে চারটি, সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে রয়েছে ছয়টি। চার লেনবিশিষ্ট এ সেতুটির সংযোগ সড়কও সমান প্রশস্ত। কম্পিউটারাইজ নিয়ন্ত্রিত টোল আদায় হয় এ সেতুর ওপর দিয়ে। চার বছরের কম সময়ে এ সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত >> গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরত্বে নদীর মোহনায় অবস্থিত। এটি মুরাদপুর সৈকত নামেও পরিচিত। সমুদ্রসৈকতটিকে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করেছে সরকার। উপকূলীয় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ২৫৯.১০ একর জায়গা জুড়ে এই সমুদ্র সৈকতটি।প্রকৃতি ও গঠনগত দিক থেকে এটি অন্যান্য সমুদ্র সৈকত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সৈকতের পশ্চিমে দিগন্ত জোড়া জলরাশি, পূর্ব দিকে তাকালে দেখা মেলে পাহাড়ের। এলাকায় কেওড়া বন রয়েছে। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল দেখা যায়। এই বন সমুদ্রের অনেকটা গভীর পর্যন্ত চলে গেছে। সৈকতের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের সহস্রধারা ও সুপ্তধারা নামের দুটি ঝরনা।

হাতি বাংলো >> বন্দর নগরী চট্টগ্রামেই আছে দৃষ্টিন্দন হাতি বাংলো। হাতির আদলে নগরীর সি আর বি এলাকায় নির্মাণ করা হয় হাতির আদলে ডুপ্লেক্স এই বাড়িটি। সাধারণ লোকজনের কাছে এটি ‘হাতি বাংলো’ নামে পরিচিত।

বাটালি পাহাড় >> বাটালি পাহাড় যা বাটালি হিল নামেও পরিচিত, চট্টগ্রামের টাইগার পাস এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রামের শহরের সর্বাধিক উঁচু পাহাড়। এর উচ্চতা প্রায় ২৮০ ফুট। এর চূড়া থেকে বঙ্গোপসাগর এবং চট্টগ্রাম শহরের বড় অংশ পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। চট্টগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে টাইগারপাস এলাকায় বাটালি হিল অবস্থিত।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বাটালি পাহাড়ের চূড়ায় বিমান বিধ্বংসী কামান স্থাপন করা হয়েছিল। অনেক বছর পূর্বে দূর সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজের দিক নির্দেশনার জন্য বাটালি পাহাড়ের উপর একটি বাতিঘর ছিল। শহরকে উপর থেকে দেখার জন্য এটি একটি উত্তম স্থান। বাটালি পাহাড় জিলাপি পাহাড় নামেও পরিচিত। এর কারণ হচ্ছে বাটালি পাহাড়ের পাহাড়ি রাস্তাটিও জিলাপির মত দেখায়, এ কারণে তাকে জিলাপি পাহাড় বলা হয়। এ পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়াটিকে বলা হয়- শতায়ু অঙ্গন। বাটালি পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠলে পুরো চট্টগ্রাম শহরকে এক নজরে দেখে মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যায়। বিপুল সংখ্যক লোক পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করে সতেজ বাতাসে শ্বাস নেয় এবং বঙ্গোপসাগরে সূর্যাস্তের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করে। বিগত ২০০৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাটালি পাহাড়ে বাংলাদেশ পুলিশের সৌজন্যে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় সাড়ে ১২ হাজার গাছ রোপণ করা হয়। এসব গাছের মধ্যে আছে জলপাই, কাঁঠাল, কালজাম, লিচু, কমলা, আম, জাফরান, চন্দন, কফি, অর্জুন। এ পাহাড়ের বিভিন্ন চূড়ায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অফিস ও বেশ কয়েকটি বাংলো রয়েছে।

প্রজাপতি পার্ক >> প্রজাপতি পার্ক বা বাটারফ্লাই পার্ক বাংলাদেশের চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি সড়কে অবস্থিত একটি পার্ক। প্রায় ৬ একর (২.৪ হেক্টর) জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত পার্কটিতে আনুমানিক ৬০০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। ধারণা করা হয় পার্কটি ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম প্রজাপতি পার্ক।দেশের একমাত্র এ প্রজাপতি পার্কে রয়েছে ট্রপিক্যালগার্ডেন, বাটারফ্লাই জোন, বাটারফ্লাই মিউজিয়াম, বাটারফ্লাই রিয়ারিংরুম, কৃত্রিম হ্রদ-ঝর্ণা, ফিশফিডিং জোন ও বাটারফ্লাই ফিডিং জোন। দর্শনার্থীদের জন্য পার্কটি প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে রাত এগারটা পর্যন্ত খোলা থাকে।

মহামায়া হ্রদ >> মহামায়া হ্রদ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হৃদ।এর আয়তন প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটার।চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। মহামায়া হ্রদ সেচ প্ৰকল্প মহামায়া হ্রদ এই এলাকার জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢল নিরসন এবং শুষ্ক মৌসুমে কৃষিখাতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড মহামায়া সেচ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে উক্ত মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপন করে। তৎকালীন সড়ক ও জনপথের মহাসড়কের অধিগ্রহণের অংশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ অংশে স্লুইস গেট অপারেটিংয়ের জন্য সেখানে সড়ক নির্মাণ করে পাউবো। তখনকার সময়ে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য মিরসরাই উন্নয়ন সংসদ নামের স্থানীয় সামাজিক উন্নয়ন সংগঠন সড়কের দু’পাশে শতাধিক গাছ রোপণ করে।২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহামায়া সেচ প্রকল্প উদ্ভোধন করেন। উদ্বোধনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং মৎস্য বিভাগ পর্যায়ক্রমে এই হ্রদ প্রায় ৩০ টন পোনা অবমুক্ত করে।

ওয়াশিল চৌধুরীপাড়া মসজিদ >> চট্রগ্রাম শহরের যেকোন প্রান্ত থেকে খুব সহজেই বড়পুলে আসতে পারবেন। সেখান থেকে রিকশা অথবা টমটম ভাড়া করে আপনাকে চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাইমারি স্কুলে পৌছাতে হবে। ওয়াশিল চৌধুরীপাড়া মসজিদটি স্কুলের পাশেই অবস্থিত।  ১৭৯৫ সালে জমিদার আসগার আলী চৌধুরী এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন।

শেখ রাসেল পক্ষিশালা ও ইকোপার্ক >> শেখ রাসেল পক্ষিশালা ও ইকোপার্ক বাংলাদেশের চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় অবস্থিত পক্ষিশালা ও ইকোপার্ক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে নামকরণ করা হয়।এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা বন বিটের হোসনাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর এলাকায় অবস্থিত।পার্কটি ৫২০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করেন, যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০১০ সালের ৭ আগস্ট।

পারকি সমুদ্র সৈকত >> পারকি সমুদ্র সৈকত বা পারকি সৈকত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি কিংবা বিমানবন্দর এলাকা থেকে কর্ণফুলী নদী পেরোলেই পারকি চর পড়ে।চট্টগ্রাম শহর থেকে “পারকি সৈকতের” দূরত্ব প্রায় ৩৫ কি.মি.। এটা মূলত কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। অর্থাৎ কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং পূর্ব-দক্ষিণ তীরে পারকী সমুদ্র সৈকত। পারকী একটি উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত। এ সৈকত চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার থানায় অবস্থিত। বারাসত ইউনিয়ন পরিষদ ২০১৩ সাল থেকে সৈকতকে পর্যটন স্পট হিসাবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।পারকী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে দেখা মিলে অন্যরকম এক দৃশ্য। আঁকা বাকা পথ ধরে ছোট ছোট পাহাড়ের দেখা মিলে। চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ (সিউএফল) এবং কাফকোর দৃশ্যও পর্যটকদের প্রাণ জুড়ায়। পারকী সৈকতে যাওয়ার পথে কর্ণফুলী নদীর উপর প্রমোদতরীর আদলে নির্মিত নতুন ঝুলন্ত ব্রীজ চোখে পড়ে। বীচে ঢুকার পথে সরু রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ, সবুজ প্রান্তর আর মাছের ঘের দেখা যায়। সৈকতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো অসংখ্য ঝাউ গাছ আর ঝাউবন রয়েছে।

চুনতি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য >> চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বাংলাদেশের একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এটি চুনতি অভয়ারণ্য নামেও পরিচিত। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে এর অবস্থান। এর আয়তন ৭,৭৬৪ হেক্টর।বনের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও বিপন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ১৯৮৬ সালে এই অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করা হয় । বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বন্য এশীয় হাতির যাতায়াতের একটি সংযোগপথ বা করিডোর হিসেবে এই অভয়ারণ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। এই বনের ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততায় এখানে সহব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই অভয়ারণ্য তার বিশালাকায় শতবর্ষী মাদার গর্জন গাছের জন্য সুপরিচিত যা এই বনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তবে ক্রমাবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, নির্বিচারে গাছ কাটা, কৃষি জমিতে রূপান্তরের মাধ্যমে বন্যপ্রানীর আবাসস্থান ধ্বংস প্রভৃতি কারণে এ বনের অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। চুনতি অভয়ারণ্য চট্টগ্রামের বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা এবং কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৭৭৬৪ হেক্টর বা ৭৭ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) বন বিভাগের চুনতি রেঞ্জ ও জলদি রেঞ্জ নিয়ে এ অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ২০০৩ সালে চুনতি ও জলদি রেঞ্জের অধীনে সাতটি বিট অফিস স্থাপন করা হয়।এই অভয়ারণ্য মূলত টিলাময় এবং অনেক জায়গায় পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি, প্রচুর অগভীর ও গভীর খাদ রয়েছে। কোথাও সামান্য ঢালু জায়গা আবার কোথাও খাড়া ঢাল দেখা যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ৩০ থেকে ৯০ মিটার। বনের ভেতর দিয়ে প্রচুর খাঁড়ি বা পাহাড়ি ছড়া এঁকেবেকে বয়ে গেছে, এদের তলদেশ বালুময় বা পাথুরে। এই ছড়াগুলো বন্যপ্রানীদের জলের উৎস। চুনতি অভয়ারণ্য এক সময় জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ ছিল। বন ধ্বংসের কারণে যা দিন দিন কমে আসছে। বন্য এশীয় হাতি এই বনের অন্যতম আকর্ষণ এবং এরা বাংলাদেশ ও মায়ানমারের বনের মধ্য দিয়েই চলাচল করে। এই বনে ১২০০ প্রজাতির উদ্ভিদ দেখা যায়। যার মধ্যে ৪৫ প্রজাতির উচু গাছও রয়েছে। বড় প্রজাতির গাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: গর্জন, রাকতান, জাম, উরি আম, চাপালিশ, শিমুল, কড়ই প্রভৃতি। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ এবং লতাগুল্ম এই বনে পাওয়া যায়।পূর্বে এই বনে ১৭৮ প্রজাতির জীবজন্তু ও পাখি পাওয়া যেতো, যার মধ্যে রয়েছে ৬ প্রজাতির উভচর, ৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৩৭ প্রজাতির পাখি এবং ২৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী। তবে এদের একটি বড় অংশ বর্তমানে আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে, বেশ কিছু প্রজাতি একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে বা বিলুপ্তির পথে।জীবজন্তুর মধ্যে ২ প্রজাতির উভচর, ২ প্রজাতির সরীসৃপ, ২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী এবং প্রায় ১১ ধরনের পাখি বর্তমানে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। বন্য প্রানীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: হাতি, কয়েক ধরনের বিড়াল, দেশি বন শুকর, হনুমান প্রভৃতি এবং পাখির মধ্যে আছে: কাঠঠোকরা, ছোট বসন্তবৌরি, বনস্পতি, বড় কুবো, আবাবিল, তিলা ঘুঘু, ফিঙে, ময়না, ভাত শালিক প্রভৃতি। এছাড়াও বেশ কিছু জলজ প্রানীও এই বনে পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি >> কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি চট্টগ্রাম কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশনের একটি সৌধ যেটি সাধারণভাবে চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি নামে পরিচিত। সবুজ পাতাবাহারের বেষ্টনী ঘেরা কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি চট্টগ্রামের দামপাড়া এলাকায়, ১৯ নং বাদশা মিয়া চৌধুরী সড়কে অবস্থিত। এটি মেডিকেল কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে, চট্টেশ্বরী সড়কের চারুকলা ইনস্টিটিউটের কাছাকাছি এবং ফিনলে গেস্ট হাউসের নিকটবর্তী পাহাড়ি ঢালু আর সমতল ভূমিতে গড়ে উঠেছে। এটি শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ২২ কিমি উত্তরে এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৮ কিমি দূরে অবস্থিত। সমাধি এলাকা সবুজ বৃক্ষ আর পাতাবাহারের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। ওয়ার সিমেট্রির প্রতিষ্ঠাকালে এলাকাটি বিশাল ধানক্ষেত ছিলো, যদিও বর্তমানে এটি বেশ উন্নত এলাকা এবং শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত। পঞ্চাশের দশকের প্রথমার্ধে নির্মিত এ সিমেট্রির বাইরের অংশে খোলা মাঠ রয়েছে। কোলাহলমুক্ত এই সমাধি এলাকায় দর্শনার্থীদের উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার থাকলেও এখানে বসা নিষেধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এই সমাধিসেৌধ প্রতিষ্ঠা করে। সূচনালগ্নে এখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈন্যদের প্রায় ৪০০টি সমাধি ছিলো। তবে বর্তমানে এখানে ৭৩১টি সমাধি বিদ্যমান যার ১৭টি অজানা ব্যক্তির। এখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত জাতীয় বিদেশী সৈন্যদের প্রায় ২০টি (১জন ওলন্দাজ এবং ১৯জন জাপানি) সমাধি বিদ্যমান। এছাড়াও এখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) চট্টগ্রাম-বোম্বের একটি স্মারক বিদ্যমান।যুদ্ধ চলাকালীন সময় সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং ১৫২ নং ব্রিটিশ জেনারেল হাসপাতালের সুবিধার কারণে চট্টগ্রামে মিত্র বাহিনী চতুর্দশ সেনাবাহিনীর এই পথিকৃৎ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। হাসপাতালটি ডিসেম্বর ১৯৪৪ থেকে অক্টোবর ১৯৪৫ পর্যন্ত সক্রিয় ছিলো। প্রাথমিকভাবে এই সমাধিতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রায় ৪০০ মৃতদেহ সমাহিত করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও যুদ্ধ শেষে অতিরিক্ত মৃতদেহ লুসাই, ঢাকা, খুলনা, যশোর, কক্সবাজার, ধোয়া পালং, দোহাজারি, রাঙ্গামাটি, পটিয়া এবং অন্যান্য অস্থায়ী সমাধিস্থান থেকে এই সমাধিস্থানে স্থানান্তর করা হয়।

ভাটিয়ারী লেক >> চট্রগ্রাম সিটি গেট থেকে মাত্র ২০ মিনিটের দূরত্বে ভাটিয়ারী লেক (Bhatiary Lake) অবস্থিত। পাহাড়ের পাদদেশে জমে থাকা পানি থেকে সৃষ্ট রূপ বৈচিত্রে ভরপুর ভাটিয়ারী লেকের স্বচ্ছ পানি, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত গলফ কোর্স এবং ভাটিয়ারী সান সেট পয়েন্টে সূর্যাস্তের দৃশ্য মনকে ভাল লাগার মূর্ছনায় ভরিয়ে তোলে। ভাটিয়ারী লেকটি দেখতে অনেকটা সাপের মতো এঁকে বেঁকে বয়ে চলেছে। সূর্য্যের সোনালী আলো লেকের জলে প্রতিফলিত হয়ে যেন সোনার মত চকচক করে।বর্ষাকালে ভাটিয়ারী লেক তার যৌবন ফিরে পায়, এ সময় লেকের সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি পায়। ভাটিয়ারী লেকে নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে নৌকায় চড়া এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা রয়েছে। আর সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় ভাটিয়ারী লেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোন সুযোগ নেই।

বিপ্লব উদ্যান >> বিপ্লব উদ্যান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের একটি উদ্যান। এটি নগরীর ২ নম্বর গেইটে নিকট অবস্থিত। উদ্যানটি চট্টগ্রামের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নারী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের স্মরণে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৭৯ সালে ২ একর (০.৮১ হেক্টর) জায়গার ওপর উদ্যানটি চালু হয়। ২০১৯ সালের শেষের দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন উদ্যান আধুনিকায়নের করার প্রকল্প গ্রহণ করে। একই বছরের নভেম্বরে ঢাকার রিফর্ম লিমিটেড এবং চট্টগ্রামের স্টাইল লিভিং আর্কিটেক্ট লিমিটেড চসিকের কাছ থেকে উদ্যানটি ২০ বছরের জন্য ইজারা নেয়। উদ্যান ও চারপাশের ফুটপাতসহ আনুমানিক ১ একর (০.৪০ হেক্টর) জমি এই প্রতিষ্ঠান দুটিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। উদ্যানে নানা প্রজাতির ফুলের গাছ রয়েছে। গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে তোরণ, এবং ফটকে গাছ দিয়ে লেখা রয়েছে ‘বিপ্লব উদ্যান’। এছাড়াও রয়েছে কংক্রিটের ছাতা। শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা জোন। এখানে

বিপ্লব উদ্যান >> বিপ্লব উদ্যান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের একটি উদ্যান। এটি নগরীর ২ নম্বর গেইটে নিকট অবস্থিত। উদ্যানটি চট্টগ্রামের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নারী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের স্মরণে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৭৯ সালে ২ একর (০.৮১ হেক্টর) জায়গার ওপর উদ্যানটি চালু হয়। ২০১৯ সালের শেষের দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন উদ্যান আধুনিকায়নের করার প্রকল্প গ্রহণ করে। একই বছরের নভেম্বরে ঢাকার রিফর্ম লিমিটেড এবং চট্টগ্রামের স্টাইল লিভিং আর্কিটেক্ট লিমিটেড চসিকের কাছ থেকে উদ্যানটি ২০ বছরের জন্য ইজারা নেয়। উদ্যান ও চারপাশের ফুটপাতসহ আনুমানিক ১ একর (০.৪০ হেক্টর) জমি এই প্রতিষ্ঠান দুটিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। উদ্যানে নানা প্রজাতির ফুলের গাছ রয়েছে। গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে তোরণ, এবং ফটকে গাছ দিয়ে লেখা রয়েছে ‘বিপ্লব উদ্যান’। এছাড়াও রয়েছে কংক্রিটের ছাতা। শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা জোন। এখানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নামে একটি ভাষ্কর্য রয়েছে। উদ্যানে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের বিজয় দিবসের ইতিহাস আলাদা করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

সিআরবি >> সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কোতোয়ালী থানার অধীনে টাইগার পাস সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চলীয়) মহাব্যবস্থাপকের নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়। ১৮৭২ সালে সম্পূর্ণ হওয়া ভবনটি বন্দর নগরীর প্রাচীনতম ভবন। এর পূর্বদিকে, সিআরবি সড়ক জুড়ে রয়েছে রেলওয়ে হাসপাতাল যা ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সিআরবির পার্শ্ববর্তী স্থানে রেল কর্মকর্তাদের জন্য একটি আবাসিক এলাকাও গড়ে উঠেছে। সিআরবি পাহাড়ে রয়েছে হাতির বাংলো। এছাড়াও কেন্দ্রের দিকে রয়েছে শিরীষতলা নামে একটি প্রশস্ত মাঠ, যেখানে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন ইত্যাদি ঐতিহ্যগত উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। চট্টগ্রামে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের দু’শো বছরের ইতিহাস বলে কিছু বাকি ভবনগুলোর মধ্যে একটি সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং। ১৭৬০ সালে ব্রিটিশ শাসকরা নবাব মীর কাসিমের কাছ থেকে চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এবং ভারত বিভাগের আগে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এটি শাসন করেছিল। তাদের শাসনকালে ব্রিটিশরা তাদের প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে বেশ কয়েকটি ভবন তৈরি করেছিল এবং এই বিল্ডিংগুলির মধ্যে একটি হল সিআরবি।

কালুরঘাট সেতু >> কালুরঘাট সেতু কর্ণফুলী নদীর উপর প্রতিষ্ঠিত। প্রাগৈতিহাসিক যুগ হতে নদী পারাপারের জন্য স্থানটি কালুর ঘাট নামে নদী পারাপারে ভূমিকা রেখে আসলেও ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে এ রেল সেতুটি নির্মিত হয়। স্থানীয় ভাবে কালুরঘাট সেতুটি কালুরঘাটের পোল নামে বহুল পরিচিত। সেতুটির বয়স বর্তমানে ৯০ বছরেরও বেশি। বর্তমানে এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের গোড়াপত্তনকারী কর্ণফুলী নদীর মোহনা হতে ৭/৮ মাইল উজানে কালুরঘাট নামক স্থানে এটি তৈরী হয়। যা স্থানিক বিবেচনায় চট্টগ্রাম শহর হতে দক্ষিণাংশে অবস্থিত।এটি কর্ণফুলী নদীর দ্বারা দ্বিখন্ডিত বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলাকে উত্তর ও দক্ষিণাংশে সংযুক্ত করে। তিরানব্বই বছরের পুরাতন এ সেতুটি দক্ষিণাংশের একমাত্র সংযোগ মাধ্যম ছিল, এক দশক পূর্বে শাহ আমানত কর্ণফুলী সেতুর উদ্বোধনের পূর্ব পর্যন্ত। তাই একে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বারও বলা হয়। যদিও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখা কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রটি বহদ্দারহাট নামক স্থান সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত কিন্তু কালুরঘাটের দেশ ব্যাপী পরিচিতির সুবাদে এ কেন্দ্রটিও কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসে কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম ও উত্তর পাড়ের দখল নিয়ে হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তি বাহিনীর যুদ্ধের ইতিহাস চিরস্মরণীয়। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বার্মা ফ্রন্টের সৈন্য পরিচালনা করার জন্য কর্ণফুলী নদীতে সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়। ফলে ১৯৩০ সালে ব্রুনিক এন্ড কোম্পানী সেতু বিল্ডার্স হাওড়া নামক একটি সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে। মূলত: ট্রেন চলাচলের জন্য ৭শ গজ লম্বা সেতুটি সে বছর ৪ জুন উদ্বোধন করা হয়। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পুনরায় বার্মা ফ্রন্টের যুদ্ধে মোটরযান চলাচলের জন্য ডেক বসানো হয়। দেশ বিভাগের পর ডেক তুলে ফেলা হয়। পরে ১৯৫৮ সালে সব রকম যানবাহন চলাচল যোগ্য করে সেতুটির বর্তমান রূপ দেওয়া হয়।প্রতিদিনের গতানুগতির জীবন থেকে বেরিয়ে এসে একঘেয়েমি দূর করে একটু স্বস্তি ও শান্তির খোঁজে বেরিয়ে পড়া মানুষগুলোর জন্য চট্টগ্রাম অতি আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান যা নিঃসন্দেহে পরিপূর্ণ আনন্দে ভরিয়ে তুলবে৷

মন্তব্য

আরও পড়ুন

ফটিকছড়ির ৩৩ বছর পূর্বের হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার 
লবন ও পান চাষিদের নায্য মুল্যের দাবিকে সামনে রেখে মহেশখালিতে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে
ছাত্রলীগ নেতা ইমাদ সিকদারের নেতৃত্বে আবারও সক্রিয় ডাকাত শাহীন বাহিনী: কারাগার থেকে নির্দেশ দেন শাহীন
নাগেশ্বরীতে ৩১ দফা নিয়ে পথে-ঘাটে বিএনপি: তৃণমূলে জাগরণ
কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করল ইরান
ইসরাইলি হামলায় ১১ দিনে ইরানে নিহত ৫০০
ডাকাত শাহীনের চোরাচালান নিয়ন্ত্রক যুবদল নেতা রুবেল অস্ত্র ও গুলিসহ আটক
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। কোস্ট ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক শরনার্থী দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা

You cannot copy content of this page