আব্দুল্লাহ আল মারুফ >>> চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) দীর্ঘ সাড়ে ছয় মাস বন্ধ থাকার পর আবারও ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হয়েছে। গ্যাসসংকট কেটে যাওয়ায় আজ রোববার (২ নভেম্বর) ভোর থেকে কারখানাটি পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে ফিরেছে।গত ১১ এপ্রিল গ্যাসের ঘাটতির কারণে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ১৯ অক্টোবর থেকে গ্যাস সরবরাহ পুনরায় শুরু হলে কর্তৃপক্ষ ধীরে ধীরে স্টার্টআপ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কারখানা চালুর প্রস্তুতি নেয়। অবশেষে ভোরে উৎপাদন শুরু হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমান বলেন, “গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় ভোরে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হয়েছে। এতে কারখানার সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।”কারখানা সূত্রে জানা গেছে, সিইউএফএল সচল থাকলে দৈনিক প্রায় ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। তবে বন্ধ থাকার সাড়ে ছয় মাসে প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকার ইউরিয়া উৎপাদন সম্ভব হয়নি।১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে আনোয়ারার রাঙ্গাদিয়া এলাকায় সিইউএফএল প্রতিষ্ঠিত হয়। চালুর সময় এর দৈনিক উৎপাদনক্ষমতা ছিল ১,৭০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া ও ৮০০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া। বর্তমানে দৈনিক ১,১০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া এবং ৮০০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে কারখানাটির।সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এ কারখানায় পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন। গত কয়েক বছর ধরে গ্যাসসংকট ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কারখানাটি বারবার বন্ধ হয়ে পড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাত্র পাঁচ দিন চালু ছিল সিইউএফএল।কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের বছরে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা মিলে উৎপাদন করে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন সার উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয় সরকারকে।গ্যাস সরবরাহ স্থিতিশীল থাকলে দেশীয় উৎপাদন বাড়বে এবং আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে আশা করছেন সিইউএফএলের কর্মকর্তারা।











মন্তব্য