সোহেল রানা,প্রতিনিধি >>> দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার ৫ লাখ টাকা এবং আহতদের ১ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন।রাজশাহীর বাগমারায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসনের অপ্রত্যাশিত ব্যয় খাত থেকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেন। কিন্তু এ সময় তিনি জানতেন না যে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বা আহত ব্যক্তিদের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ট্রাস্টি বোর্ড থেকে সরকারি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার নিয়ম রয়েছে।বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বিষয়টি সামনে আসে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ।সভা চলাকালে কমিশনার বাগমারার ইউএনওকে ফোন করে ঘটনাটি জানতে চান। কথোপকথনটি মাইক্রোফোনের সামনে লাউডস্পিকারে প্রচার করা হয়। কমিশনার জানতে চান, ‘মাহবুবুল ইসলাম, তোমার এলাকায় যে দুর্ঘটনায় এক মা দুই শিশু রেখে মারা গিয়েছিল, সেই বাড়িতে গিয়েছিলে?’ ইউএনও জবাব দেন, ‘জি স্যার, গিয়েছিলাম। বাচ্চাদের ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছি।’তখন কমিশনার প্রশ্ন করেন, ‘এই টাকা তুমি কই পাইলা?’ ইউএনও জানান, ‘উপজেলার অপ্রত্যাশিত ব্যয় থেকে।’ এ সময় কমিশনার বলেন, ‘বিআরটিএতে কিন্তু এই ধরনের ক্ষতিপূরণের ফান্ড আছে- এইটা তুমি জানো?’ ইউএনও বলেন, ‘জি না, স্যার, জানতাম না।’ তখন কমিশনার বলেন, ‘এইটা তুমি জানো না, এইটা কেউই জানে না।’বিআরটিএর ট্রাস্টি বোর্ডের এই তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার ৫ লাখ টাকা এবং আহতদের ১ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। আবেদন করতে হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে। তবে প্রচারণার অভাবে অনেকেই তা জানেন না। বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ চালুর পর থেকে নিহতদের মধ্যে মাত্র ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও আহতদের মধ্যে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ আবেদন করেছেন। অথচ তহবিলে এখনো আড়াই শ কোটি টাকার বেশি জমা রয়েছে।সভায় বিভাগীয় কমিশনার উপস্থিত চালক, সহকারী ও মালিকদের জিজ্ঞেস করেন তাঁরা বিষয়টি জানেন কি না। বেশিরভাগই বলেন, তাঁরা কখনো শুনেননি। এ সময় কমিশনার জানান, দুর্ঘটনার এক মাসের মধ্যে আবেদন করার নিয়ম থাকলেও রাজশাহীতে এক বছর পর্যন্ত আবেদন গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে তিনি বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান।রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি গাড়ির ফিটনেস নবায়নের সময় ১ হাজার ৭০০ টাকা করে এই ফান্ডে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রচারের অভাবে চালক-মালিক কেউই জানে না, কীভাবে আবেদন করতে হয়।’তিনি বিষয়টি প্রচারের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান এবং এক বছরের আবেদনের সময়সীমা দেওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান।সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। সভার আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, বিআরটিএর সহকারী পরিচালক ফয়সাল হাসানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।











মন্তব্য