মোহাম্মদ সোহেল রানা বান্দরবান প্রতিনিধি >>> কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন,কৃষকদের শ্রম ও সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা, সম্প্রসারিত হচ্ছে আধুনিক কৃষির ।।২০২৫ এর এই সময়ে কৃষিতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন,গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাতের উদ্ভাবন,চাষাবাদে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ বেশি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় চাষাবাদের ক্ষেত্রে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার উদ্ভাবিত প্রযুক্তির।কৃষিতে প্রযুক্তিগত ব্যবহারে পিছিয়ে নেই পার্বত্য জেলা বান্দরবানের কৃষক ।বান্দরবানে চলতি বছরের ৭ই জানুয়ারি সদর উপজেলার রাজবিলা,উদালবনিয়ায়, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর বাস্তবায়নে ২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি পূর্নবাসন সহায়তা খাত হতে রবি মৌসুমে উপজেলার ৫০ একর কৃষি জমিতে বোরো ধানের “সমলয় চাষাবাদের” যাত্রা শুরু হয়েছিলো।এই পদ্ধতিতে ৫০ জন কৃষককে মাঠ পর্যায়ে বীজতলা তৈরী থেকে শুরু করে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ধানের চারা রোপন ও জমি হতে ধান কাটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।দীর্ঘ পাঁচ মাস পর উৎসব আর আনন্দের মধ্য দিয়ে, সমলয় চাষাবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট ৫০ জন কৃষকের ৫০ একর জমির ধান মেশিনের মাধ্যমে কেটে ঘরে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।সল্প সময় আর অল্প পরিশ্রমে ঘরে তুলতে পারায় খুশি কৃষকরা।মঙ্গলবার (১৩ই মে) সদর উপজেলার,রাজবিলা,উদালবুনিয়ায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে শস্য কর্তনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।এসময় জেলা প্রশাসক মাঠ পর্যায়ে সমলয় পদ্ধতিতে চাষকৃত ৫০ একর জমির ধান কর্তনের উদ্বোধন পরবর্তী কৃষকদের চাষাবাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার বিষয়ে কথা বলেন।এ সময় তিনি বলেন সবাই মিলে একসাথে চাষাবাদ করার এই পদ্ধতি,কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার করে উৎপাদন খরচ কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করে,এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়েছে।৭-৮ জন লেবারের কাজ একটি মেশিনে করে দিচ্ছে। কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সরকারের পক্ষ হতে কৃষকদের জন্য উপহার।কৃষকদের মুখের হাসি দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলনও ভালো হয়েছে।এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এম এম শাহ নেওয়াজ বলেন আমাদের উদ্দেশ্য কৃষকদের সমকালীন চাষাবাদে, কৃষকদের একসাথে চারা রোপন থেকে শুরু করে ফসল কর্তন,কৃষিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যাবহার সম্পর্কে কৃষকদের অবগত করা।আমরা আগামীতেও এই অঞ্চলের কৃষিকে উন্নত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের একসাথে সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদে উদ্ভুদ্ধ করার পাশাপাশি চাষাবাদে প্রযুক্তির ব্যবহারের উপকারীতা তুলে ধরবো।পরে প্রধান অতিথি এই এলাকায় চাষাবাদে কৃষকদের বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধার বিষয়ে জানতে তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।মতবিনিময় কালে স্থানীয় কৃষকরা চাষাবাদে তাদের বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিষয় তুলে ধরেন।এসময় জেলা প্রশাসক কৃষক, কৃষাণীদের উদ্দেশ্যে বলেন এই পদ্ধতিতে কৃষকরা উপকৃত হবে,আগামীতে উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে।এসময় স্থানীয় কৃষকদের সকলের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন জেলা প্রশাসক,এবং যে কৃষক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না তাদের কৃষি প্রণোদনা দেয়া হবে না বলে জানান।মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মারুফা সুলতানা খান হীরামনি,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, আবু তালেব,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিঃউপ-পরিচালক(উদ্যান) তৌফিক আহমেদ নুর।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,সমলয় চাষাবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক,কৃষাণী।প্রসঙ্গত জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে এ বছর মোট ১১২৪১ হেঃ জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়েছে।এদিকে চাষাবাদে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকদের সমবায় চাষাবাদে সরকারের নেয়া এই উদ্যোগে খুশি পাহাড়ের সাধারণ কৃষক।এই পদ্ধতিতে জমিতে ফলনের উৎপাদন পরিমান বাড়ার পাশাপাশি,স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে পাহাড়ের কৃষি।
মন্তব্য