মিজানুর রহমান বিশেষ প্রতিনিধি ফরিদপুর >>> ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা লস্করদিয়া ইউনিয়নের শশা গ্রামের মানব পাচারকারী ( দালাল) তানভীর শরীফ ওরফে তানজীম (২৫) পিতাঃ জাকারিয়া শরীফ গ্রামঃ শশা থানাঃ নগরকান্দা সে অবৈধ ভাবে সমুদ্র পথে লিবিয়া থেকে ইতালি নেওয়া কথা বলে এলাকার দুই যুবক কাজী সোহাগ হোসেন (৩৫)পিতাঃ কাজী সেকেন্দার আলী ও লালন শেখ পিতাঃ মুন্নু শেখ গ্রামঃ জুঙ্গুরদী থানাঃ নগরকান্দা জেলা ফরিদপুর কে বাংলাদেশ বিমানবন্দর থেকে লিবিয়া নেয়।জনপ্রতি ১৫ লাখ টাকা চুক্তিতে প্রথমে ভিসা ও পাসপোর্ট করার জন্য ৫ লাখ টাকা করে নেয় এবং বাকি টাকা ইতালি পৌঁছায় দিতে হবে দালাল চক্রকে।দুই যুবকে লিবিয়া নিয়ে আজকাল করে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি নিয়ে যাবে বলে কালক্ষেপণ করে।এবং তাদের উপর শারিরীক মানসিক নির্যাতন চালিয়ে চাপসৃষ্টি করে জিম্মি করে বাকি সব টাকা নিয়ে নেয় দালাল চক্র। দালাল চক্রের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বারে টাকা পাঠায় ভুক্তভোগীর পরিবার।প্রায় তিন মাস লিবিয়া রেখে ইতালি নিতে না পারায় ভুক্তভোগীর পরিবার দালাল চক্রদের চাপ সৃষ্টি করে তাদের ছেলেদের দেশে পাঠানোর।একপর্যায়ে দুই যুবক দেশে ফিরে আসে।দেশে ফিরে দালালের পরিবার কে টাকা ফিরিয়ে দিতে বলে।আজকাল করে টাকা ফেরত না দেওয়ায় ভুক্তভোগী কাজী সোহাগ হোসেন (৩৫) বাদী হয়ে মানব পাচার চক্রের তিন সদস্যকে আসামী করে জেলা ও দায়রা জজ মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যাল ফরিদপুর পিটিশন দাখিল করেন মানব পাচার (পিটিশন) মামলা নং- ৩৩/২০২৫ ইং তারিখ ২৪/০৩/২৫ ইং।আসামীরা হলেন ১। জাকারিয়া শরীফ (৫০),তার স্ত্রী ২। মোসাঃ রোকেয়া বেগম (৪২), ৩। তানভীর শরীফ ওরফে তানজীম (২৫) গ্রামঃ শশা থানাঃ নগরকান্দা জেলাঃ ফরিদপুর। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মামলা রুজু করতে নগরকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ কে নির্দেশ করে নোটিশ জারী করেন।সুত্রঃ নগরকান্দা থানার মামলা নং- ২৬ তারিখ ২৭/০৩/২০২৫ ইং ধারা মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন,২০১২ এর ৬/৭/৯/১০ ধারা রুজু হয়।থানায় মামলা রুজু হওয়ার পর ৩০ শে মার্চ রবিবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারী মামলায় এজাহার ভুক্ত ১নং আসামী জাকারিয়া শরীফ (৫০) কে আটক করে কারাগারে পাঠায।ভুক্তভোগী কাজী সোহাগ বলেন আমি গ্রামে মুদি দোকান করি হঠাৎ একদিন আমার দোকানে ১ নং – আসামী জাকারিয়া শরীফ আসেন। পাশের গ্রাম সে পূর্ব পরিচিত। আমার ব্যবসার কেমন অবস্থা জানতে চায়। গ্রামের দোকান করি বাকি ঝুকি হওয়ায় তেমন ভালো যায়না তবুও করতে হয়।জাকারিয়া শরীফ বলেন আমার ছেলে ইতালি থাকে সে কত মানুষ বিদেশে নিল তুই যদি যাস তাহলে আমার ছেলে তানভীর শরীফের মাধ্যমে ইতালি পাঠাতে পারি।ইতালির কথা শুনে আমার যাওয়া ইচ্ছা হয় এবং পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলে তাদের সাথে টাকার চুক্তি হয়।কৃষি কাজের কথা বলে ইতালির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করি। লালন শেখ ও আমাকে বিমানে নিয়ে যায়। বিমান থেকে নেমে আমরা জানতে পারি আমরা এখন লিবিয়া পৌছাইতে পারছি।সেখানে আমাদের জিম্মি করে নির্যাতন করে বাকি টাকা তাদের একাউন্টে নিয়ে নেয়। আমাদের আজকাল করে ইতালি পাঠাতে না পারায় তাদের হাত থেকে জীবন বাচাতে দেশে ফিরি।দেশে এসে মানব পাচারকারীদের নামে মামলা করি।লালন শেখ এর পিতা মুন্নু শেখ বলেন আমিও এই চক্রের বিরুদ্ধে মামলা দিব।নগরকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সফর আলী বলেন, আদালত কতৃক মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে বাদী কাজী সোহাগ হোসেন এর করা মামলাটি রুজুর নির্দেশ দিলে মামলাটি থানায় রুজু করি এবং মামলায় সম্পৃক্ত মানব পাচারকারী চক্রের ২ নম্বর আসামী জাকারিয়া শরীফ কে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আসামীদের ধরার চেষ্টা চলছে। এদের মধ্যে একজন আসামী বিদেশে আছেন।মানব পাচার মামলার আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
মন্তব্য