২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
ফরিদপুরে মেজরের নামে বিকাশে ঘুষের টাকা লেনদেন,এসআইয়ের ভেল্কিবাজিতে ভুক্তভোগীর ৬০ হাজার টাকা উধাও পুঠিয়ায় অনৈতিক কাজে এসে স্থানীয়দের হাতে আটক নারী-পুরুষ সার সিন্ডিকেট বন্ধের দাবিতে তানোরে” কৃষক সমাবেশ” রাঙ্গুনিয়া আসনে এলডিপি’র মনোনয়ন আমরা পেয়েছি, জোটের মনোনয়নও পাবো-রাঙ্গুনিয়ায় বিশাল সমাবেশে সাবেক এমপি নুরুল আলম রাঙ্গুনিয়ার “শিলক মিনা গাজী টিলা ঐক্য পরিষদ” এর জনসভা অনুষ্ঠিত বিএডিসির ডাগওয়েল নির্মাণ: চট্টগ্রামে কাজ না করেই ২২ লাখ টাকা উত্তোলন রেলওয়ে হাসপাতাল সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা  রাজশাহীতে নিখোঁজের পর তরুণের লা’শ উদ্ধার রাজশাহীতে ৬৪ লাখ টাকার হেরোইনসহ গ্রেপ্তার ২ পার্বত্য চট্টগ্রামে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে বান্দরবানে মানববন্ধন
  • প্রচ্ছদ
  • অন্যান্য
  • ফরিদপুরে মেজরের নামে বিকাশে ঘুষের টাকা লেনদেন,এসআইয়ের ভেল্কিবাজিতে ভুক্তভোগীর ৬০ হাজার টাকা উধাও
  • ফরিদপুরে মেজরের নামে বিকাশে ঘুষের টাকা লেনদেন,এসআইয়ের ভেল্কিবাজিতে ভুক্তভোগীর ৬০ হাজার টাকা উধাও

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    মিজানুর রহমান বিশেষ প্রতিনিধি ফরিদপুর >>> ফরিদপুরের নগরকান্দায় ‘মেজর আতঙ্কের’ ভয় দেখিয়ে এক উপপরিদর্শকের (এসআই) চাঞ্চল্যকর প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগ অনুযায়ী, থানায় আটক এক যুবকের পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নগরকান্দা থানার এসআই রবিউল ইসলাম।এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের শশা গ্রামের দরিদ্র কৃষক ইকতার শেখের পরিবার। ভুক্তভোগী যুবকের নাম ইমদাদুল শেখ (২৭)।পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ইমদাদুল তার প্রতিবেশী জিসান মাতুব্বরের কাছে ২ হাজার ৫০০ টাকা পাওনা ছিলেন। জিসান জানান, তালমা মোড়ের একটি বিকাশ দোকানে গেলে সেখানে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে, এর মধ্যে নিজের পাওনা রেখে বাকিটা তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। বিকাশ দোকানদার মিন্টু খন্দকার বলেন,“একজন নিজেকে ‘মেজর’ পরিচয় দিয়ে ফোন করে বলেন, ‘যে ছেলেটি টাকা নিতে আসছে, তাকে আটকান, না হলে বিপদ হবে।’ আমি ভয় পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় থানায় খবর দিই। পরে পুলিশ এসে ছেলেটিকে ধরে নিয়ে যায়।”পরে ইমদাদুলকে থানায় নিয়ে যান এসআই রবিউল ইসলাম। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোনো অপরাধের প্রমাণ না মেলায় তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও, এরপরই শুরু হয় টাকার দাবির নাটক।ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, থানার ‘গোলঘরে’ এসআই রবিউল ইমদাদুলের মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন জিম্মি রেখে বলেন,“বিষয়টা এখন আমার হাতে নেই, মেজর আসিফ নামের একজন এটি দেখছেন।”এরপর রবিউল নিজেই তার ফোনে পরিবারের সঙ্গে ‘মেজর আসিফ’-এর কথা বলিয়ে দেন। ওই ব্যক্তি ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। রবিউল দুইটি বিকাশ নম্বর দেন এবং বলেন,“টাকা পাঠাতে দেরি করলে মামলা হবে, এখনই পাঠান।”পরিবার আতঙ্কে পড়ে তড়িঘড়ি করে দুটি বিকাশ নম্বরে ৬০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়। টাকা পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর ইমদাদুল ও তার মোটরসাইকেল ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে মোবাইল ফোনটি ফেরত পাননি।ভুক্তভোগী ইমদাদুল শেখ বলেন,“আমার প্রতিবেশী জিসান আমার কাছ থেকে ২৫০০ টাকা ধার নিয়েছিল। পাওনা চাইলে সে বলে, তালমা মোড়ে বিকাশ দোকানে যেতে, সেখানে ২০ হাজার টাকা পাঠানো আছে। দোকানে যেতেই তারা আমাকে জাল টাকার ব্যবসায়ী বলে আটকে রেখে মারধর করে এবং পরে পুলিশে দেয়।”ইমদাদুলের মা শিল্পী বেগম বলেন,“আমার ছেলেকে জিসান ফাঁদে ফেলেছে। থানায় নিয়ে গিয়ে রবিউল স্যার নানা মামলা দেয়ার ভয় দেখান। আমরা ভয়ে বিকাশে টাকা পাঠিয়েছি। এখন তারা মুখ না খোলার হুমকি দিচ্ছে।”ভুক্তভোগীর বাবা ইকতার শেখ জানান,“এসআই রবিউলের ভয়েই আমি নগরকান্দা বাজারের বাবু মোল্লা বিকাশ দোকান থেকে দুইটি নম্বরে ৬০ হাজার টাকা পাঠিয়েছি। টাকা পাঠানো শেষ হতেই ছেলে আর মোটরসাইকেল ছাড়েন, কিন্তু ফোন ফেরত দেননি।”অভিযুক্ত প্রতিবেশী জিসান মাতুব্বরের বাড়িতে গিয়ে কিংবা মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এসআই রবিউল ইসলাম বলেন,“তালমা মোড়ের বিকাশ ব্যবসায়ী ফোনে জানায়, তারা একজন জাল টাকার ব্যবসায়ীকে ধরেছে। আমি গিয়ে থানায় নিয়ে আসি। পরে কিছু না পেয়ে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিই। মেজর পরিচয়ে টাকার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”তবে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, রবিউলের ফোন থেকেই কথিত ‘মেজর আসিফ’-এর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল এবং সেই ফোনালাপের পরই টাকা পাঠানো হয়।নগরকান্দা বাজারের বিকাশের দোকানদার বাবু মোল্লা বলেন ” ২৪ তারিখ রাত ৭ টা ৪৮ মিনিটে দুটি বিকাশ নাম্বার ০১৭৩৪৭৩১৩৫৬, ০১৯০৬৮৫৫৮০১ নাম্বারে ৩০ হাজার করে মোট ৬০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। দারগা নাম্বার দিয়েছে “।নাম্বার দুটি বর্তমানে বন্ধ আছে।নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন,“জাল টাকার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছিল, কিন্তু সত্যতা না পাওয়ায় মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। টাকার লেনদেনের বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”এ ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছে, থানায় আটক ব্যক্তির কাছ থেকে ‘মেজর পরিচয়ে অর্থ আদায়ের মতো প্রতারণা কীভাবে সম্ভব হলো?

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page