এম নুর নবী আহমেদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন >>> নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল ফারহা মিলনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন তদন্তে যান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম।১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় আটশ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। বিদ্যালয়টির একসময় ছিল সুনাম ও গৌরবের ইতিহাস। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের কোটায় আবুল ফারহা মিলন প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান আব্দুল কাদের মির্জার অনুকম্পায়। যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা ও প্রশাসনিক পরিবেশ নষ্ট করেছেন তিনি।স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আবুল ফারহা মিলন নিজের ইচ্ছামতো বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। পাঠদানের মান কমে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে চরম অস্থিরতা। ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনও বর্তমানে আদালতে ঝুলে রয়েছে, সাবেক সভাপতি এনামুল হক এনাম মাস্টার আদালতে মামলা করায় ৫ আগস্টের পর থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ইউএনও।পরিদর্শনকালে ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, “বিদ্যালয়ের কাগজপত্র ও বাস্তবতার মধ্যে কোনো সামঞ্জস্য পাইনি। অচিরেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”পরিদর্শনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের জন্য প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার সামগ্রী যেমন সেক্রেটারি টেবিল, বুকশেলফ ও পাঠক টেবিল ক্রয়ের হিসাব দেখানো হলেও বাস্তবে এসবের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নথিপত্রও ছিল অনুপস্থিত।এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদার বলেন, “মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ইউনিয়নের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অথচ আজ দেখা যাচ্ছে, বিদ্যালয়ে ন্যূনতম ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত নেই। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় শিক্ষার পরিবেশ ভেঙে পড়েছে।”স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে প্রধান শিক্ষক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন। ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন ছাড়াই ছুটি মঞ্জুর করা, বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যয়সহ নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন নিজের ইচ্ছামতো, যা প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।প্রধান শিক্ষক আবুল ফারহা মিলন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কোনো সরাসরি মন্তব্য না করে বলেন, “তদন্ত হবে, তখন সব পরিষ্কার হবে।”বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য