মোঃ দিদারুল ইসলাম,চট্টগ্রাম >>> চট্টগ্রামে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা জাফর আলী চৌধুরী শাওনের মৃত্যু রহস্য ঘুরপাক খাচ্ছে আলো আঁধারীর মাঝে। ২২ জানুয়ারী শনিবার ইফতারের পর চাদগাঁও আবাসিক এলাকাস্থ ভাড়া বাসায় ব্যাংকার জাফর আলী চৌধুরী শাওনের রহস্যজনক মৃত্যুবরন করে। ব্যাংকার শাওনের মৃত্যুর পর স্বজন ও পরিচিত মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, শাওনের মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যা! নিহত শাওন উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ৩ নং নারায়ণহাট শৈলকোপা এলাকার জানে আলম চৌধুরীর চতুর্থ পুত্র ও বড় বেতুয়া সাবেক মেম্বার হাবিব উল্লাহ’র বোনের ছেলে। জানা যায় শাওন চট্টগ্রাম শহরে স্ত্রী ও ২ ছেলে সন্তান নিয়ে চাঁদগাও আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।এটি হত্যা না আত্মহত্যা এই নিয়ে তার পরিবার ও শুভাকাঙ্খীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাওনের মৃত্যু বিষয়ের সঠিক কোন কারণ কেউ জানাতে পারেনি। তবে চট্টগ্রাম জেলা দায়রা জজ আদালতের সরকারি এসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এবং ব্যাংকার শাওনের খালাত ভাই এডভোকেট মোঃ ইমরান নাঈম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেন, শাওন স্ত্রী কর্তৃক খুন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এডভোকেট নাঈমের স্ট্যাটাসে যেমনটি লেখা ছিলঃ “চান্দগাঁও আবাসিকে, আল আরাফাহ ব্যাংক কর্মকর্তা শাওন সম্ভাব্য স্ত্রী কর্তৃক খুন হয়েছেন, গ্ৰামের বাড়ি ভুজপুর নারায়নহাট, উনি বড় বেতুয়া সাবেক মেম্বার হাবিব উল্লাহ’র বোনের ছেলে, শহরে স্ত্রী সন্তানসহ বসবাস করতো, গত সপ্তাহে ও আমার কোর্ট চেম্বারে এসেছিল খালাতো ভাই শাওন।”ওই স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে সাদিয়া রুমা নামের একজন ফেসবুক ইউজার লিখেন, খুন করা হয়েছে, আমি দেখে আসছি, ওরা বউয়ের ভাই মামা শাওন ভাইকে মেডিকেল হাসপাতালে ইমার্জেন্সিতে রেখে পালিয়ে গেছে।নিহত শাওন, ২০০৮ সালে ইসলামী ব্যাংক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে কম্পিউটার ট্রেড থেকে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১২ সালে ঢাকায় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসসি) সম্পন্ন করার পর কর্মজীবনে পদার্পণ করেন তিনি। ২০১৫ অক্টোবরের দিকে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকে চাকুরিতে যোগদান করেন।পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শাওন দম্পতির ঘরে ফুটফুটে দুইটা ছেলে সন্তান রয়েছে। শাওন সদালাপি নম্র ভদ্র মিষ্টিবাসি প্রকৃতি লোক ছিলেন। মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী বিশেষ করে ইসলামী ব্যাংক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইবিআটি) বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজনের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে ইসলামী ব্যাংক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইবিআটি) সহকর্মীরা তার রুহের মাগফেরাত কামনা করার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।ইসলামী ব্যাংক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইবিআটি) সহপাঠী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহিউদ্দিন, রায়হান, আনোয়ার, তায়ফুর রহমান, দেলোয়ার, জসিম, আলমগীর, ইশতিয়াক, শহিদুল, পারবেজ,হানিফ প্রতিবেদককে জানান, শাওন খুবই মিশুক প্রকৃতির সদালাপী একজন প্রিয় বন্ধু ছিল আমাদের। দীর্ঘদিন থেকে আমরা তাকে চিনি।সে অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন ভালো ছেলে। তার মৃত্যুটা আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আশা করি প্রশাসন সঠিক তদন্ত পূর্বক মৃত্যুর আসল কারণ কি তা বের করে আনবেন।চান্দগাঁও থানার এসআই নুরুল আমিন জানান, পুলিশ খবর পাওয়ার পর ঘটনার স্থলে যাওয়ার পূর্বেই তার স্ত্রী তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিকভাবে ধারণ করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। তবে ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। ময়নাতদন্তের জন্য শাওনের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
মন্তব্য