১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
তানোরে রাতের আধাঁরে ঘাস মারা বিষ দিয়ে ৪ বিঘা জমি বোরো ধান পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ ৫২ লাখ টাকার ইলিশ নিয়ে মহেশখালীতে তোলপাড় ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কেএনএফসহ সকল সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন নিষিদ্ধের দাবি বাঙালি ছাত্র পরিষদের তানোরে ফসলী জমি হ্রাস খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা চট্টগ্রাম নগরীর শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না গ্রেফতার সাতকানিয়ায় পুলিশের অভিযানে ২ আসামি গ্রেফতার পুঠিয়ায় রাজশাহী পূর্ব জেলা মজলিসে সুরা অধিবেশন অনুষ্ঠিত মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার, মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন। ছলচাতুরি না করে আ.লীগের বিচার ত্বরান্বিত করতে হবে ইসরাইলি হামলায় একদিনে ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত, আহত শতাধিক
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয় >> চট্টগ্রাম >> চট্টগ্রাম >> দেশজুড়ে
  • এক দিনে দলিল, এক দিনে নামজারি
  • এক দিনে দলিল, এক দিনে নামজারি

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন
    কলামিস্ট: আব্দুল্লাহ আল মারুফ >>>
    দলিল এবং নামজারি এক দিনেই করা সম্ভব। ‘ই-নামজারির’ মতো ‘ই-দলিল’ অনলাইনে করা যেতে পারে। এখন ‘ক্যাশলেস ভূমি অফিস’ সরাসরি কোনো টাকা লেনদেন নিষিদ্ধ। তাই, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এবং উপজেলা ভূমি অফিসে কোনো রকম দূর্নীতি করার সুযোগ নেই। অনলাইন ফাইল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে না পারলে, অনলাইনে অটো শোকজ লেটার চলে আসে। প্রয়োজনে, ‘সিনিয়র সহকারি কমিশনার (ভূমি)’ পদ সৃজন করে ভূমি সঠিক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। ‘সিনিয়র সহকারি কমিশনার (ভূমি)’ শুধু ই-দলিল সম্পাদন করবেন। অন্যদিকে ‘সহকারি কমিশনার (ভূমি)’ ১৯৬৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যে দলিলগুলো হয়েছে সেই দলিলগুলোর নামজারি/খারিজ, মিসকেস এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর দায়িত্ব পালন করবেন। বন্টননামা দলিল বাধ্যতামূলকভাবে করার ব্যবস্থা করতে হবে। বন্টননাম দলিল ছাড়া একটি এজমালি জমিতে পূর্ণাঙ্গ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। তাই আইন থাকতে হবে যে, কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করার পর ৩ মাস থেকে ৬ মাসের মধ্যে মৃত ব্যক্তি ওয়ারিশগণ বাধ্যতামূলকভাবে বণ্টননামা দলিল করতে হবে। ওয়ারিশগণের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে প্রয়োজনে, নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) এবং জেলা জজ কোর্ট এর একজন বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট এর মাধ্যমে বন্টননামা দলিল করা যেতে পারে। কারণ উক্ত দলিলের এক বা দুই পক্ষ মিলে যাতে আদালতে মামলা করতে না পারে। উক্ত বন্টননামা দলিলে এসিল্যান্ড এবং জজ কোর্ট এর একজন ম্যাজিস্ট্রেট এর স্বাক্ষর সহ সেই বন্টননামা দলিলের স্বাক্ষী থাকবেন। এই প্রক্রিয়ায় বণ্টননামা দলিল সম্পন্ন হলে নতুন করে এই জমি নিয়ে কোনো বিরোধ বা মামলার সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। বাংলাদেশে ৮ প্রকার দলিল রয়েছে। তাই ৮টি ‘ই-দলিল’ অনলাইন ফরমেট এবং ১টি ‘ই-নামজারি’ অনলাইন ফরমেট থাকবে। দলিল গ্রহীতা যে দলিল সম্পাদন করতে চায় তিনি সেই ‘ই-দলিলের’ অনলাইন ফরমেট পূরন করবেন। যে কোনো কম্পিউটারের দোকান থেকে অথবা দলিল গ্রহীতা নিজেই এনড্রয়েট মোবাইল দিয়ে ‘ই-দলিলের’ আবেদন করতে পারবেন। দলিল দাতা ও গ্রহীতার ভোটার NID দিয়ে এবং সাথে পর্চা, দলিল, বায়া-দলিল, ওয়ারিশ সনদ সহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র স্ক্যান করে অনলাইনে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) এর বরাবর আবেদন করবেন। স্ক্যানকৃত সকল কাগজপত্রের একসেট ফটোকপি (হার্ড কপি) উপজেলা ভূমি অফিসে জমা করবেন। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) অনলাইন কপি এবং হার্ড কপি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রেরণ করবেন। ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা আবেদনের হার্ড কপি ও নকশা নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে জমির সঠিক S.A এবং R.S দাগ ও জমির চৌহদ্দি সহ তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন স্বাক্ষর করে, ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তার নিকট জমা করবেন। জমি দখল বা জমি নিয়ে কোনো সমস্যা থাকলে তদন্ত করার সময় ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা জানতে পারবেন। ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তার তদন্ত রিপোর্ট এর ভিত্তিতে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা জমির মালিকানা সহ সকল রেকর্ড রেজিষ্টার যেমন S.A, R.S পর্চা, খাস, বন ‘ক’ ও ‘খ’ গেজেট সহ সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র যাচাই পূর্বক ‘ই-নামজারির’ অনলাইন ফরমেট পূরণ করে, ‘ই-দলিলের’ হার্ড কপিতে ও অনলাইন কপিতে এবং ‘ই-নামজারির’ হার্ড কপিতে ও অনলাইন কপিতে স্বাক্ষর করে ‘সহকারি কমিশনার (ভূমি)’/এসিল্যান্ড এর নিকট ‘ই-দলিল’ এবং ‘ই-নামজারি’ প্রস্তাব একই দিনে, এক সাথে প্রেরণ করবেন। অর্থাৎ ‘ই-দলিলের’ মধ্যে যে R.S/B.S দাগ থাকবে সেই R.S/B.S দাগ দিয়ে অনলাইনে, ‘ই-নামজারির’ প্রস্তাব প্রেরণ করবেন। ‘ই-দলিল’ নাম্বার এবং ‘ই-নামজারি’ নাম্বার একই থাকবে। অর্থাৎ দলিল এবং নামজারি প্রস্তাব পত্র একই দিনে, এক সাথে এসিল্যান্ডের নিকট প্রেরণ করবেন। কানুনগো উক্ত ‘ই-দলিল’ এবং ‘ই-নামজারি’ প্রস্তাব পত্রের ভিত্তিতে হার্ড কপি দেখে পুনরায় জমির মালিকানা যাচাই করে এসিল্যান্ড এর নিকট প্রেরণ করবেন। এসিল্যান্ড হার্ড কপি দেখে জমির মালিকানা সঠিক আছে কিনা? তা আরও অভার যাচাই করে ‘ই-দলিল’ এবং ‘ই-নামজারি’ দুইটি এক দিনেই অনুমোদন করবেন। এতে করে, দলিল ও নামজারি এক দিনেই হবে। অর্থাৎ দলিল গ্রহীতা যেদিন দলিল পাবেন, সেই দিন নামজারি/খারিজও পাবেন। ‘ই-দলিল’ অনুমোদন হলে দলিল গ্রহীতা বিকাশ অথবা নগদ এর মাধ্যমে দলিল রেজিট্রেশন ফি এবং নামজারির DCR ফি জমা করবেন। ফি জমা হলে ‘ই-দলিল’ অনলাইন থেকে প্রিন্ট আউট করতে পারবেন। ই-দলিলের প্রতি পাতায় QR কোড থাকবে। ‘ই-দলিলের’ হার্ড কপিও থাকবে। কারন সার্ভার হ্যাক হতে পারে। তাই ‘ই-দলিল’ দেখে মোহরারগণ ‘ই-দলিলের’ তথ্য বালাম বহিতে এন্ট্রি করে রাখবেন। সার্ভার হ্যাক হলে যাতে এসিল্যান্ড অফিস থেকে সইমোহরি নকল নিতে পারেন। এভাবে দলিল সম্পাদন হলে নতুন করে ১% দলিলেও কোনো প্রকার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। যেহেতু বাংলাদেশের ৯৮% সাধারণ জনগন জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র সঠিকভাবে বুঝে না। যেখানে MBBS ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষকসহ যারা দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষিত জনগণ তারাই জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র সঠিকভাবে বুঝে না, সেখানে সাধারণ জনগণ জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র বুঝার প্রশ্নই আসেনা। তাই সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাগণ ‘ই-দলিল’ সম্পাদন করবেন। যেহেতু ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাগণ ‘ই-দলিলের’ তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তাই ‘ই-দলিলে’ কোনো প্রকার ভুল হলে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে। এরপরেও যদি ‘ই-দলিলে’ কোনো প্রকার ভুল হয়ে থাকে, তা সংশোধনের ব্যাপক ক্ষমতা বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) এর হাতে থাকবে। সাব-রেজিস্ট্রার পদটি কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদ নয়। তাই সাব-রেজিস্ট্রার সহ সকল কর্মচারি ও মোহরার/এক্সট্রা মোহরারগণ বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসিল্যান্ড) এর অধীনে থাকবেন। বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রারগণের চাকুরির মেয়াদ শেষ হলে, নতুন করে ‘সাব- রেজিস্ট্রার’ পদে নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ সাব-রেজিস্ট্রারগণ বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত। এখন, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাগণ বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত। এখানে দলিল লেখকদেরও প্রয়োজন হবে না। ‘ই-দলিল’ সম্পাদনের জন্য দলিলের ভিন্নতা অনুযায়ী কমপক্ষে ২১ থেকে ২৮ কার্য দিবস সময় লাগতে পারে। দলিল গ্রহীতা যদি জমির দাগ ও খতিয়ান জানেন, তাহলে ‘ই-দলিলের’ অনলাইন ফরমেট পূরন করবেন। যেমন- মৌজার নাম : চাঁদপুর, S.A খতিয়ান ২৩৮, R.S খতিয়ান ৩১২, S.A দাগ ৮২৬, R.S দাগ ১২৬৪ জমির পরিমান ০.২৪৫০ একর। আর দলিল গ্রহীতার যদি জমির দাগ খতিয়ান জানা না থাকে, তাহলে ‘ই-দলিলের’ অনলাইন ফরমেটে ০০ (শূণ্য শূণ্য) লিখে অনলাইন ফরমেট পূরণ করবেন। ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহাকারি কর্মকর্তা (হার্ড কপি) দেখে নকশা নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে ০০ (শূণ্য শূণ্য) এর স্থলে সঠিক দাগ, খতিয়ান ও জমির পরিমান অনলাইনে পূরণ করে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা নিকট জমা করবেন। এতে করে, ‘ই-দলিলে’ কোনো প্রকার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। মামলা-মোকাদ্দমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। দলিল গ্রহীতা জমি ক্রয় করে প্রতারিত হবে না এবং দলিল দাতা প্রতারনা করতে পারবে না। ভবিষ্যতে, ভূমি ব্যবস্থাপনা আরও গতিশীল করতে প্রয়োজনে, প্রতিটি উপজেলা ভূমি অফিসে একটি করে ‘ভূমি ক্যাডার’ পদ সৃজন করা যেতে পারে এবং প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে একজন সার্ভেয়ার এবং চেইনম্যান পদ সৃজন পূর্বক শক্তিশালী ভূমি ব্যবস্থাপনা গঠন করা যেতে পারে। বি:দ্র: একটি ‘ই-বায়ণানামা দলিলের’ অনলাইন ফরমেট থাকবে। ‘ই-বায়ণানামা’ দলিলের ফি বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে দলিল গ্রহিতা জমা দিবেন। এসিল্যান্ড ‘ই-বায়ণানামা দলিল’ একদিনেই অনুমোদন করবেন। কোন কারণে, ‘ই-দলিল’ সম্পাদিত না হলে গ্রহিতা উক্ত দলিলের বায়ণাকৃত টাকা ফেরত পাবেন। ‘ই-বায়ণানামা দলিলের’ গ্রহণযোগ্যতা আদালতেও থাকবে।

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page