আব্দুল্লাহ আল মারুফ,সাতকানিয়া,চট্টগ্রাম।। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নে ৪ নং ওয়ার্ড,ফয়জুর রহমান সওদাগরের বাড়ী) গ্রামে দেওদীঘী শাহী জামে মসজিদ কমিটি বিষয় কে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে দিদারুল আলম (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে গতরাতে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। নিহত দিদারুল আলম ওই গ্রামের মৃত এজহার মিয়ার ছেলে।এ ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে রোববার (৮ জুন) ভোরে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- দেওদীঘির ফয়েজুর রহমান সওদাগর বাড়ির মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. সরওয়ার আজম (৫০), মো. সাইফুল আজম (৪১), মো. নাজিম উদ্দীন (৩৪) ও মো. নুরুল ইসলাম আজিম (৩০)স্থানীয়রা জানান,সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ৪ নং ওয়ার্ড,এলাকার দেওদীঘী শাহী জামে মসজিদের কমিটি নিয়ে স্থানীয় সরওয়ার আজম আবু তাহের গং দের সাথে নিহত দিদারুল আলম গং, দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছিল। দুই পক্ষই মসজিদের সভাপতি হওয়ার জন্য আলাদা গ্রুপে বিভক্ত ছিল। এক পর্যায়ে কিছুদিন আগে ভিকটিমের চাচাত ভাই আবু তাহের কে সভাপতি ঘোষণা করে,সরুয়ার আজম ও আবু তাহের পক্ষকে মসজিদ কমিটি থেকে বিতাড়িত করেন।তার পর থেকে উভয় পক্ষের বিরোধ চলছে।ভিকটিমেরে ভাই শহিদুল ইসলাম বলেন।বিবাদীর সাথে স্থানীয় মসজিদ কমিটির বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধ নিয়ে ২নং বিবাদী অন্যান্য বিবাদীদের সহায়তায় আমাদের সাথে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ সহ হত্যার হুমকি প্রদান করতেন ।আমি ও আমার ভাইমৃত মোঃ দিদারুল আলম (৫০) সহ পারিবারের অন্যান্য সদস্যগন আমার ভাতিজা মোঃ সোহেল (৩০) বিবাহের বিষয়ে,পারিবারিকভাবে আমাদের বাড়ীতে বৈঠক বসি। এমতাবস্থায় ঘটনার ১নং বিবাদীর নেতৃত্বে উপরোক্ত বিবাদীগনসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন বিবাদী বেআইনী ভাবে দলবদ্ধ হয়ে হাতে লোহার রড, রামদা, গাছের বাটাম, লাঠি-সোটা ইত্যাদি নিয়া আমাদের বসত বাড়ীর উঠানে,প্রবেশ করে এবং আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে, আমাদের বাড়ীতে থাকা সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে।তখন আমিসহ আমার ভাই ভিকটিম মোঃ দিদারুল আলম বিবাদীদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে সকল বিবাদীগন আমাদের উপর আক্রমন করে। আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী (এক পা কাটা) হওয়ায় আমার স্ত্রী উম্মে ছালমা আমাকে বিবাদীদের কবল হতে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে যায়। তখন ৩নং বিবাদী লোহার রড দিয়া আমার ভাই কে বারি মারলে উক্ত বারি আমার ভাইয়ের বুকের নিচে পেটের উপরে লেগে মারাত্মক জখম হয়। তাৎক্ষনিক আমার ভাই চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন আমার ভাই মোঃ জাবেদ, আমার চাচা সুফিয়ান কামাল,চাচাত ভাই জুবায়ের, মোরশেদুল আলম গন জখমী মোঃ দিদারুল আলমকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে বিবাদীগন,তাহাদেরকেও এলোপাথাড়ি মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে। ডাক-চিৎকার শুনে স্থানীয়,লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসলে, বিবাদীগন আমাদেরকে ঘটনার বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিলে আমাদেরকে পুনঃরায় মারধর করবে বলে হুমকি প্রদান করে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ সময় সুযোগ মতে আমাদেকে হত্যা করিয়া লাশ ঘুম করবে মর্মে বিভিন্নপ্রকার হুমকি-ধমকি প্রদান করে পালিয়ে যায়। তখন আমরা উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় আমার ভাই জখমী মোঃ দিদারুল আলম (৫০) কে উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসার জন্য সাতকানিয়া থানাধীন আলফা হাসপাতালে নিয়ে গেলে,কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষা করে আমার ভাই কে মৃত ঘোষনা করেন এবং অন্যান্য জখমীগন সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে। ঘটনার বিষয়ে আমি স্থানীয় গন্য-মান্য ব্যক্তিদেরকে অবহিত করে আত্মীয়-স্বজনের সাথে পরামর্শ করে থানায় এজাহার দায়ের করতে বাধ্য হই।নিহতের স্ত্রী বলেন,মসজিদ কমিটি ইস্যু নিয়ে আমার স্বামীকে সারোয়ার,সাইফুল,বাদশা,মৌলবী তাহের,আমার স্বামীকে হত্যা করে,মৌলবী তাহের আমার স্বামীর গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে, অপরজন রামদা ও রট দিয়ে আঘাত করে,আমি এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই আমি অপরাধীদের ফাঁসি চাই।অভিযুক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ আবু তাহের বলেন। আমি দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ ওই মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি,ছয় মাস পূর্বে মসজিদের মতোয়াল্লি সকলের মতামতের ভিত্তিতে আমাকে আবার সভাপতি দায়িত্বভার তুলে দেন। তারা আমি সভাপতি হওয়াতে এই নারকীয় হত্যার ঘটনা ঘটাইছে যাহা পার্শ্ববর্তী অনেক লোক সরাসরি দেখেছেন,আমি এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের তদন্ত সাপেক্ষে ফাঁসির দাবী জানাচ্ছি।সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)জাহেদুল ইসলাম বলেন, মসজিদে কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধের জের নিয়ে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ ঘটনায় একজন মারা গেছেন। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য