এম ইদ্রিস ইমন, মোংলা (বাগেরহাট):
কাঁসার শব্দ আর বাদ্যের তালে তালে চারপাশে যেন উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এ লাঠি খেলা দেখার জন্য শতশত মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকেলে মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের গোয়ালীরমেঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শতদল একতা যুবসংঘ এ খেলার আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল এবং মোংলা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাহজাহান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ মন্ডল। খেলাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামজুড়ে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। ঢাক-ঢোল আর সানাইয়ের বাজনার তালে তালে খেলোয়াড়রা লাঠি হাতে নাচ ও কসরত দেখিয়ে উপস্থিত শত শত দর্শকদের মনমুগ্ধ করেন।খেলোয়াড়রা একে অপরের সঙ্গে লাঠি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। লাঠি দিয়ে অন্যের আক্রমণ ঠেকাতে থাকেন।আর এরই মধ্যে নিজের চেয়ে বড় লাঠি নিয়ে অদ্ভুত সব কসরত দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন লাঠিয়ালরা। আর লাঠিয়াল দলের ক্ষুদে এক লাঠিয়ালের কসরত দেখে অবির্ভূত হন প্রবীণ লাঠিয়াল। দল বেধে আগত দর্শকদের সালাম বিনিময় করেন। এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে গোয়ালীরমেঠ গ্রামে হাজির হন শিশু-কিশোর-কিশোরী সহ নানা বয়সের নারী-পুরুষরা।গোয়ালীরমেঠ গ্রামের লাঠিয়াল সর্দার শুকুর আলী এবং ইকবাল হোসেন বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন দিতে আমরা লাঠি খেলা দেখাই। তাদের আনন্দে আমরা মজা পাই। এ খেলা আমাদের পূর্ব-পুরুষের দেখিয়েছেন ।তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামীণ ঐহিত্যবাহী এ খেলাটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।গোয়ালীরমেঠ গ্রামের আয়োজক কমিটি শতদল একতা যুবসংঘ বলেন, মাঠের স্বল্পতা আর ভিডিও গেমসের কারণে আমাদের শিশুরা ঘরমুখো। প্রথমবারের মতো আমরা গ্রামীণ এ খেলার আয়োজন করি। আগামীতে আরও বড় করে লাঠি খেলার আয়োজন করা হবে।মোংলা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাহজাহান সিদ্দিকী বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে হাজির হন সব বয়সের মানুষ। দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন দিতে কিছুটা হলেও পুরানো দিনের গ্রামীণ চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পান বয়ো-বৃদ্ধরা।
মন্তব্য