আনোয়ার হোসেন,কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধি >>> রংপুরের বেওয়ারিশ ও অসহায় রাকিব ইসলাম দোলন নামে এক কিশোরকে জেলা হাজতবাস থেকে মুক্ত করতে এগিয়ে এসে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের মানবিক শিক্ষক রুহুল আমিন। এ কিশোর রংপুরের মাহিগঞ্জ সাত মাথার বাসিন্দা মৃত্যু দুলাল হোসেনের এক মাত্র ছেলে।পরিবার-পরিজন হারা ও আর্থিক সহায়তার অভাবে ৪ মাস ১৩ দিন ধরে হাজতে থাকা কিশোরের জামিনের ব্যবস্থা করেন তিনি। জানা গেছে,কিশোর রাকিব পেটের দায়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলার জলঢাকার ভাঙ্গারীর ব্যবসায়ী আব্দুল মালেকের দোকানে দিন হাজিরার কাজ নেন। ওই ব্যবসায়ীর অনিয়মে কারণে গত সাড়ে ৪ মাস আগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাকেসহ রাকিবকে পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এর পর আদালত থেকে ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক জামিনে বেরিয়ে আসেন। তারও জামিন পাওয়ার সুযোগ থাকলেও প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মত কেউ ছিল না তার পাশে। বিষয়টি জানতে পেরে মানবিক শিক্ষক রুহুল আমিন নিজ উদ্যোগে আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বৃহস্পতিবার (২৭নভেম্বর) সকালে কিশোর রাকিবের জামিন আবেদন দাখিল করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করলে শিক্ষক নিজেই উপস্থিত থেকে কিশোরটিকে হাজত থেকে বের করে আনেন। স্থানীয়রা জানান,রুহুল আমিন শুধু একজন শিক্ষকই নন, সমাজের পিছিয়ে পড়া ও অসহায় মানুষের জন্য তিনি দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে আসছেন। কিশোরটির প্রতি তার এমন মানবিক সহায়তা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পাশাপাশি মানবিক এই উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে কিশোরগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ বলেন, সমাজে এমন শিক্ষকই প্রয়োজন, যারা শুধু বই পড়ান না, মানবিকতাও শেখান।জামিনে মুক্ত হয়ে কিশোর রাকিব শিক্ষক রুহুল আমিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,পৃথিবীতে আমার কেউ নেই। পেটের দায়ে কাজ করতে গিয়ে ব্যবসায়ীর কারণে আমাকে দীর্ঘদিন যাবত নিরুপায় হয়ে হাজতবাস খাটতে হয়েছে। তিনি জামিনের মুক্ত হলেও আমার কোন খোঁজ খবর নেননি। মানবিক স্যারের কারণে আজ আমি মুক্ত। হায়রে নিষ্ঠুর পৃথিবীর মানুষ ব্যবসায়ীসহ আত্মীয়-স্বজন,পাড়া প্রতিবেশী কেউ আমার পাশে দাঁড়ায়নি এবং কোন খোঁজখবরও নেয়নি। এমন নির্মম পরিণতি যেন আর কারো জীবনে না আসে। আজ তিনি আমার পাশে না দাঁড়ালে হয়তো সারা জীবন হাজতেই থাকতে হতো।











মন্তব্য