আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধি >>> নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে গ্রামীণ প্রকৃতিতে নজর কাড়া সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে বৈচিত্র্যময় ও রোমান্টিক উদ্ভিদ লজ্জাবতী। শুধু সৌন্দর্যই নয়,লজ্জাবতী ঔষধি গুনের সাথে সাধু সাধ্বী মেয়ে মত যেন লাজেরও সীমা নেই। পর পুরুষের ছোঁয়া পেলে সারা অঙ্গে শিহরণ তুলে লাজুক লতা লজ্জাবতী লাজ শরমে মরে যায়। তাই তো,লাজুক লতা লজ্জাবতী তাহার লাজের সীমা নাই,একটু ছুলেই থিরথিরিয়ে লাজে মরে যায়,লজ্জাবতী ডেকে বলে,ছুয়ো না তুমি আমায়,ওই ছোয়াতে হৃদয় কাঁপে কোথায় তারে পাই। এমন ভরা যৌবনে উৎলা আর লাজ শরমে টইটুম্বুর লজ্জাবতী নিজেকে না ছোঁয়ার নানা আকুলি-বিকুলি করলেও রেহাই মিলেনা দুষ্ট মনা মানুষের কাছে। তাদের একটু নজরে এলে থমকে দাড়িয়ে মসকরার ছলে আলতো ছুঁয়ে লজ্জাবতীকে লজ্জা দিয়ে ভীষন আনন্দ উপভোগ করে। গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত এ উদ্ভিদ নানা ভেষজ ঔষধি গুনে ভরপুর। আগে প্রকৃতি জুড়ে এর ব্যাপক সমাহার ছিল। এখন নানাবিদ কারণে এ উদ্ভিদ হারিয়ে গিয়ে দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে। কালেভদ্র এর দেখা মেলে উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি মাছুয়া পাড়া গ্রামের মেঠো পথের ধারে। এসময় দেখা গেছে নানা আগাছার মাঝে লজ্জাবতী লকলকে বেড়ে উঠে শাখা প্রশাখার সবুজ চিরল চিরল পাতার ক্যানভাসে তুলার মত নরম স্নিগ্ধ কোমল গোলাপি রঙের দৃষ্টিনন্দন ফুল ফুটে সেখানকার প্রকৃতিকে বর্ণিল করে তুলেছে। চিড়ল চিড়ল পাতা আর গোলাপী আভার ফুলের শোভন যেন এক নিমিষেই হৃদয় প্রাণ হরণ করে নেয়। এক বার নজরে পড়লে দৃষ্টি ফেরানো দায়। এ সময় মনে অজান্তে গেয়ে ওঠে ও চোখে চোখ পড়েছে যখনি তুমি হলে মনের রাণী,তোমার দৃষ্টি যেন ছোবল হানে যখন তখন শুধু আমার প্রানে,ওরে কালনাগিণী…। ওই গ্রামের বাসিন্দা ফুলপ্রেমী মুগ্ধ বলেন, প্রকৃতিগতভাবে জন্মে থাকা স্পর্শকাতর লজ্জাবতী গাছ বেশ মজার । শুধু এর চিড়ল পাতাই নয়, হালকা গোলাপী রঙের আভায় ঝাড়বাতির মত অনিন্দ্য বর্ণিল ফুল দেখতেও ভীষন সুন্দর। যা নিজের নামের মিতালিতে অন্যরকম মুগ্ধতা কাজ করে। এর পাতা আসলেই লাজুক প্রাণ। স্পর্শ করলেই পাতা নেতিয়ে পড়ে। আর নেতিয়ে পড়ার অনুভূতি হৃদয়ের মাঝে অন্যরকম দোলা দেয়। পড়ে আবার পাতাগুলো আপন মনে মেলে ধরে নিজেকে বিকশিত করে তুলে। লজ্জাবতী আসলে উদ্ভিদ জগতে অনন্য এক লাজুক প্রাণ। স্থানীয় প্রবীণরা জানায়,লজ্জাবতীর শুধু লজ্জা ও ফুলের সৌন্দর্যই নয়, এর রয়েছে নানা ভেষজ ওষধি গুন। যা আগে লজ্জাবতী গাছের শিকড়,পাতা ও মূল বিভিন্ন জটিল- কঠিন রোগের চিকিৎসার কাজে ব্যহৃত হত এবং ঝোপঝাড়ে,পথের ধারে লজ্জাবতীর ব্যাপক সমাহার ছিল। এখন আধুনিক চিকিৎসার ভিড়ে এর কদর না থাকার পাশাপাশি নানাবিধ কারণে এ উদ্ভিদের হারিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন,রোমান্টিক লজ্জাবতী সাধারণত পথের ধারে,ঝোপঝাড়ে জন্মে। সারা বছর ফুল ফুটলেও এখন লজ্জাবতী ফুলের ভরা মৌসুম।
মন্তব্য