১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
সোনারগাঁয়ে জামায়াতের গণসংযোগ ফুলবাড়ীতে খাদ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যবহার করায় জরিমানা ও সিলগালা মোংলা উপজেলা মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার(কাজী) কল্যান সমিতির নতুন কমিটি গঠন দেশের ৩৫ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান সাতকানিয়া কাঞ্চনা এ.কে.বি.সি ঘোষ ইনিস্টিউট উচ্চ বিদ্যালয়ের (কাঞ্চনা হাইস্কুলের)এডহক কমিটি গঠন চট্টগ্রামে বাঁশখালী জাতীয়তাবাদী ফোরামের নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা: সভাপতি রানা, সম্পাদক রাসেল রাঙ্গুনিয়া আলমশাহপাড়া কামিল মাদরাসা মাদরাসা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলন ও পুনর্মিলনী ১৯ এপ্রিল ৬৬ দফা সংস্কার প্রস্তাবের ১৬টি নিয়ে মতানৈক্য বিএনপির: সালাহউদ্দিন আহমেদ নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারসহ তিন শর্ত পূরণের দাবি জামায়াত আমিরের টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস
আন্তর্জাতিক:
চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেইনবো ফাউন্ডেশনের মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নতুন সংকট আরাকান আর্মি! ভারতে অস্ত্র কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ,চরম ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বিপিএলে খুলনাকে হারিয়ে জয়ে ফিরল রাজশাহী বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, মিলান ইতালির আয়োজনে ৫৩ তম মহান বিজয় দিবস উদযাপিত দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি ১০ ডিসেম্বর দামেস্কে ঢুকে পড়েছেন বিদ্রোহীরা,পালিয়েছেন আসাদ বাংলাদেশিদের না পাওয়ায় ধস নেমেছে ভারতের পর্যটন ব্যবসায় কলকাতা মিশনে ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করল বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক তায়কোয়ানদো প্রতিযোগিতায় ভিয়েতনামে যাচ্ছে রাজশাহীর মারিন আশরাফী 
  • প্রচ্ছদ
  • অর্থনীতি >> আন্তর্জাতিক >> জাতীয় >> ঢাকা >> ঢাকা
  • অসমাপ্ত আত্মজীবনীর নেপথ্য কথা
  • অসমাপ্ত আত্মজীবনীর নেপথ্য কথা

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    কলমে ডাক্তার ফারহানা মোবিন ঢাকা >>>> যুগে যুগে কিছু মানুষ পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেন যে মানুষগুলো তাদের কর্মগুণে বেঁচে থাকা অবস্থায় হয়ে ওঠেছেন জীবন্ত কিংবদন্তী। এমনই কিছু বিশাল বটবৃক্ষ হলেন বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বীর নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা, মমতাময়ী জগত বিখ্যাত নারী মাদার তেরেসা, অমর বিপ্লবী নেতা চে গুয়েভারা, আমেরিকার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন প্রমুখ। যুগে যুগে পৃথিবীতে এই মানুষগুলোর কর্মগুণ, নেতৃত্ব, মানুষকে ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করেছে। এই মানুষগুলোর জীবন-যাপন পদ্ধতি, তাঁদের আদর্শ আমাদের জন্য হয়ে উঠেছে আলোর মশাল। 

    আমাদের বাংলাদেশের জন্য এমনই একজন আলোর মশাল হলেন জাতির জনক বীর নেতা, সংগঠক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে মানুষটি পৃথিবীতে জন্ম না নিলে পৃথিবীর ইতিহাসে লাল সবুজ এর পতাকার জন্ম হতোনা। আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের দাস হয়েই থাকতাম। আমরা কোনও দিন মাথা উঁচু করে সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতামনা। 

    আমাদের বীর নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিনি জন্ম গ্রহণ করেন ১৯২০ সালে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে লেখাপড়া করেন। 

    ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম নেতা তিনি। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে তাঁর রাজনৈতিক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নির্বাচিত হয়। এই অর্জন ছিল স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের জন্মের জন্য অন্যতম মাইলফলক।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন কিংবদন্তী নেতা, একজন বড় মাপের সংগঠক, একজন সুবক্তা। লেখালেখিতেও তিনি ছিলেন ভীষণ পারদর্শী। তাঁর লেখা বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শুধু মাত্র বই নয় জাতির দিক নির্দেশনার এক জীবন্ত দলিল।

    ২০০৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তাঁর পিতার লেখা চারটি খাতা এসে পৌঁছে। খাতাগুলোর পৃষ্ঠা জুড়ে সময়ের বিবর্তন অক্ষরগুলো প্রায়ই অস্পষ্ট, লালচে হয়ে যাওয়া পাতা। পিতার প্রিয় সন্তান শেখ হাসিনা মুহূর্তেই তাঁর পিতার হাতের লেখাগুলো চিনে ফেললেন। খাতা চারটা হাতে নিয়ে বাধভাঙ্গা কান্না আবেগ উনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল। 

    ছোট বোন শেখ রেহানাকে খাতাগুলো দেখালেন। পাহাড় সম শোক, পরিবারকে হারানের ব্যথা অশ্রুধারা হয়ে ঝরতে থাকলো দুই বোনের চোখ দিয়ে। খাতা চারটি ছিল বঙ্গবন্ধুর লেখা আত্মজীবনী। ১৯৬৭ সালের মাঝের দিকে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি থাকাকালীন সময়ে তাঁর লেখা তিনি লিখে শেষ করতে পারেননি। লেখাগুলো শুধুমাত্র লেখা নয় সেসব ছিল একজন মহীরুহের প্রবল দেশ প্রেম, মানব প্রেম আর চেতনার আলোয় আলোকিত এক প্রামাণ্য চিত্র। যে প্রামাণ্য চিত্র লেখা হয়েছে প্রবল দেশপ্রেম, মানব প্রেম, দেশের মানুষকে পশ্চিম পাকিস্তানীদের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করার জন্য শপথ, খাতা চারটির পাতাগুলো ছিল একেবারেই জরাজীর্ণ। একটু আঘাত লাগলেই ছিড়ে যাবে এমন করুন অবস্থা। 

    মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হত্যার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামীলীগের এক সমাবেশে চালানো হয় গ্রেনেড হামলা। হামলায় মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী আইভী রহমানসহ মোট চব্বিশজন মারা যান। সৌভাগ্যবশত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে যান। তিনি চোখের সামনে চব্বিশজন মানুষকে হারানের শোকে কাতর হয়ে পড়েন। দুঃখ কষ্টের সাগরে তিনি যখন ভাসছিলেন ঠিক তখনই এই চারটা খাতা উনার হাতে এসে পৌছে। 

    প্রধানমন্ত্রীর এক ফুফাতো ভই সেই চারটা খাতা উনাকে দিয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রীর আরেক ফুফাতো ভাই হলেন শেখ ফজলুল হক মনি। তিনি ছিলেন বাংলার বাণীর সম্পাদক। উনার অফিসের টেবিলের ড্রয়ার থেকে পাওয়া গিয়েছিল সেই চারটা খাতা। ধারনা করা হয় বঙ্গবন্ধু হয়তো লেখাগুলো টাইপ করতে দিয়েছিলেন বই প্রকাশ এর জন্য।

    খাতা চারটার মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধুর বংশ পরিচয় স্কুল-কলেজ, শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ড, দেশের জন্য চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশের অভাব, বিহার, কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, প্রাদেশিক মুসলীম ছাত্রলীগ ও মুসলীমলীগের রাজনীতি সহ বিভিন্ন বিষয়ের বর্ণনা। 

    দেশ ভাগ হয়ে যাবার পর থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, দেশের মানুষের জীবন যাপনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষন ছিল খাতাগুলোর প্রতিটি লেখা জুড়ে। খাতার পাতাগুলো এতো নরম হয়ে গেছিল যে হাত দিলেই ছিড়ে যাবে, এমন একটা অবস্থা। 

    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, উনার ছোট বোন শেখ রেহানা, সাংবাদিক বেবী মওদুদসহ আরও কয়েকজন পালাক্রমে লেখাগুলোকে খুব সাবধানে ফটোকপি করে বার বার পড়েছেন। কারণ অধিকাংশ লেখা ছিল ভীষন ঝাপসা। কোথাও কোথাও লেখা ছিল একেবারেই অস্পষ্ট। ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে লেখা উদ্ধারের কাজ করতে হয়েছিল। 

    খাতাগুলোর লেখা পড়তে যেয়ে অগনিত বার প্রধানমন্ত্রী ও শেখ রেহানা চোখের জলে ভাসতেন। শেখ রেহানা অসংখ্যবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন, হলদে পৃষ্ঠা গুলোতে হাত বুলিয়ে উপলব্ধি করার চেষ্টা করতেন পিতার আঙ্গুলের স্পর্শ। বড় বোন শেখ হাসিনা বরাবরের মতোই শেখ রেহানার ভরসার আশ্রয়স্থল হয়ে ছোট বোনকে সান্তনা দিয়েছেন। বাবার লেখা আত্মজীবনী পড়তে যেয়ে বার বার স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন। অদম্য ইচ্ছা পিতৃ প্রেম আর দেশের মানুষকে মহান একা নেতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মহৎ ইচ্ছা থেকেই প্রকাশ পায় বঙ্গবন্ধুর লেখা। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির পুরো লেখা জুড়ে প্রবল দেশপ্রেম। জেলখানায় বন্দী অবস্থায় থেকেও দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন, পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন নক্ষত্রের মতো জলজল করে জলছে। 

    একজন মানুষ দেশের মানুষকে ভালোবেসে নিজের জীবনের জন্য কতোটা ঝুঁকি নিতে পারেন জেল নির্যাতন কতোটা সহ্য করেছেন, মানুষের কল্যাণে নিজেকে কিভাবে বিসর্জন দিয়েছেন, লেখাগুলো সেই প্রত্যয়ের কথাই বলে। 

    বহুবিধ তথ্যের সমৃদ্ধ এই বইটিতে পাকিস্তান আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, বাঙালির স্বাধীনতা, অধিকারের আন্দোলন, এই দেশের মানুষকে ধ্বংস করে দেবার জন্য পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর বিভিন্ন ধরনের চক্রান্তের ঘটনার উল্লেখ রয়েছে এই বইয়ে।

    প্রধানমন্ত্রীর মতে, এই বই এর ঘটনাগুলোর সূত্রধরে অনেক অজানা ঘটনার গবেষণা করা সম্ভব। খাতাগুলোতে জেলারের স্বাক্ষর দেওয়া অনুমোদনের পৃষ্ঠাগুলো অক্ষত ছিল। তারিখগুলো দেখে ঘটনার ব্যাখ্যা, বিস্তার ও লেখার সম্পাদনার কাজে সুবিধা হয়েছিল। 

    লেখাগুলোর সম্পাদনা, সংশোধন এর কাজ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও সাংবাদিক বেবী মওদুদ। এরপরে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, প্রধানমন্ত্রী এবং বেবী মওদুদ পান্ডুলিপির সম্পাদনা, টিকা লেখা, স্ক্যান, ছবি নির্বাচনের কাজগুলো সম্পন্ন করেন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শেখ রেহানা। 

    এই গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত লিখেছেন। ১৯৬৬-৬৯ সালে কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দী থাকাকালীন সময়ে একান্ত নিরিবিলিতে তিনি লিখেছেন জাতির জন্য অমূল্য এক ইতিহাস। আত্মজীবনী প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই তিনি তার এই চারটা খাতার লেখাগুলো টাইপ করতে দিয়েছিলেন কিন্তু তিনি ঘাতকদের হাতে মারা যান। তাই বইটি আর প্রকাশ পায়নি। ভাগ্যের বিম্ময়কর খেলায় লেখাগুলো দীর্ঘ বছর পরে ২০০৪ সালে এসে পৌছে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার হাতে। 

    সীমাহীন পরিশ্রম আর ধৈর্য্যরে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অবশেষে মহামূল্য এই স্মৃতি কথাগুলো মুদ্রণে রূপ নেয়। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ নামে জাতির হাতে পৌছে যায় এক চেতনার ইতিহাস, এক মহান নেতার স্বপ্নগাঁথা।

    ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শুধুমাত্র একটি বই নয়, এটি একটি জীবন্ত দলিল, সোনার অক্ষরে মুদ্রিত মহান এক দেশপ্রেমী নেতার জীবনদর্শন। বইটি দেশ গড়বার জন্য বিরল এক দিক নিদের্শনা।

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    সাতকানিয়া কাঞ্চনা এ.কে.বি.সি ঘোষ ইনিস্টিউট উচ্চ বিদ্যালয়ের (কাঞ্চনা হাইস্কুলের)এডহক কমিটি গঠন
    চট্টগ্রামে বাঁশখালী জাতীয়তাবাদী ফোরামের নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা: সভাপতি রানা, সম্পাদক রাসেল
    সাতকানিয়ায় বাংলা নববর্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা ও লোকজ মেলা
    ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের বাস্তবায়নে চট্টগ্রামে ক্লাইমেট স্ট্রাইক ২০২৫ উদযাপিত
    চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশন’ এর গঠনতন্ত্র, কার্যবিধি প্রণয়ন সংক্রান্ত সভা
    শ্রেণিভিত্তিক নয় বিষয়ভিত্তিক কক্ষ প্রয়োজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী তৈরি করতে।
    বন্ধুকে নিয়ে প্রেমিকাকে ধর্ষণচেষ্টা, অতঃপর…
    চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল থেকে কঠিন হুঁশিয়ারি

    You cannot copy content of this page