বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয়র বাড়ি,বাজার,রাস্তাঘাট,শিক্ষালয়, কর্মস্থল থেকে শুরু করে যেকোনো জায়গাতেই নারীরা যৌণ হয়রানি,
টোনটিং, অশ্লীল কথাবার্তা ও আচরণের শিকার হয়।এই আচরণ নিয়ে প্রতিবাদ ও মুখ খোলাই হোলো মি টু।
বর্তমানে মি টু সম্পর্কে ধারণা >>
তথ্য প্রযুক্তির যুগে আজও আমরা অনেকেই জানিনা মি টু এর বিষয়টি।ফেসবুকের যুগে আজ নারীরা অনেকটাই মুখ খুলতে পারে তাদের সাথে হয়ে যাওয়া অশ্লীল মুহূর্তগুলো নিয়ে।আজ নারীরা তাদের সাথে হয়ে যাওয়া কুমুহুর্তগুলো নিয়ে অনেকটাই বলতে পারে।যৌনতা বা যৌন হয়রানিও আজ অকপটে স্বীকার করতে পারে। তবে সেটা হয়তো কিছু।
তবে মি টু ধারণা সম্পর্কে ব্যাপ্তির যেন কোথাও আজও সেভাবে প্রভাব পরেনি।বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলগুলোতে এখনও এই “মি টু” শব্দটি সেভাবে প্রকাশ ঘটেনি বললেই চলে।হয়তো কলেজ,ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়ারা কিছুটা জানলেও,গ্রামাঞ্চলগুলোতে এই আলোচনার ব্যাপক প্রসার ঘটেনি।
মি টু এর সমাধান ” কি সম্ভব? >>> উত্তর:আসলে যৌন হয়রানি হওয়ার ফলে একটা নারী কখনই অশৌচ হয়ে যায়না।এটা আজও নারীরা বোঝেনা।যারা বোঝে তারা তাদের সাথে হয়ে যাওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করে।কারোও অনুমতি ছাড়া কাউকে স্পর্শ করা যায়না।এটা স্বাভাবিক ও আইনগত ব্যাপার।তেমনি কোনো নারী ধর্ষণ,শ্লিলতাহানী,টোনটিং বা যৌনতামূলক কথাবার্তার দ্বারা অপমান হলে সেই নারী কিন্তু অশুদ্ধ হয়ে যায়না এটা প্রতিটি নারীকে বুঝতে হবে।এবং প্রতিটি মায়ের দায়িত্ব,কর্তব্য মেয়েকে বোঝানো ও মেয়েকে তৈরী করে দেওয়া যাতে তার সাথে হওয়া ঘটনার মুখ খুলতে পারে।প্রতিবাদের মানসিকতা তৈরী করে দিতে হবে পরিবারের থেকেই।”মি টু” এর ধারণার প্রসার ঘটানো প্রয়োজন।এটাও বুঝতে হবে এবং মেনে নিতে হবে যে কোনো পুরুষের দ্বারা যৌন হয়রানিমূলক বা অশ্লীলতার শিকার হওয়া মানেই কিন্তু অশৌচ নয় বরং প্রতিটি নারীকে এই বিষয়গুলো নিয়ে মুখ খোলা নিয়ে সহজ হতে হবে।
যৌন হয়রানির বিষয়গুলোকে লজ্জ্বার নয় বরং প্রতিবাদের।সে হোক না বাড়ির লোক বা স্কুল শিক্ষক বা কোচ >> প্রতিবাদের জায়গা হিসেবে পরিবারের কাছে আগে জানাতে হবে।তারসাথে পুলিশ-প্রশাসন/বি.ডি.ও/এস.ডি.ও/ডি.এম/মহিলা সংগঠন/এন.জি.ও কে জানাতে হবে।অনেক পরিবার আছে যারা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল নয়, তারা ভয় পাবেননা।এমন অনেক উকিল আছেন যারা ফ্রি তে মামলা লড়ে।তাদের বারকাউন্সিলে পেয়ে যাবেন খোঁজ করলে।প্রয়োজন হলে কলেজগুলোর সংসদে গিয়ে জানাতে পারেন।
আচ্ছা প্রতিবাদই কি সমাধান? প্রতিবাদ তো হয় বিচার পাওয়ার আর্তনাদের।মেয়েদের সাথে কোনোরকম ক্ষারাপ কিছু না ঘটে সেদিকে পদক্ষেপ নিতে হবে।সেক্ষেত্রে প্রতিটি নারীকেই এগিয়ে আসতে হবে।নারীদের সাথে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোকে ঘৃণা বা অশৌচ নয় বরং সহজভাবে দেখতে হবে।যদিও বিষয়টি সহজ নয়।শুধুমাত্র নির্ভীকভাবে আলোচনা করতে হবে বা আলোচনার সুযোগ দিতে হবে প্রত্যেক নারীকে।বোঝাতে হবে এটা লজ্জার বিষয় নয়,বিষয়টা অপমানের।তাই নিজের অপমান বিরুদ্ধে লড়ার জন্য সোচ্চার হতে হবে।
কোনো পুরুষের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হওয়া মানে অশৌচ হওয়া নয় বরং সেটা অত্যাচার ও অপমান হওয়া।তাই সমাজে নারীদের প্রতি এই অত্যাচার থামাতে নারীদেরই এগিয়ে আসতে হবে ও ভূমিকা নিতে হবে।প্রতিটি নারীর পুত্র সন্তান পাঁচ বছর হওয়ার পর তাকে পরাশোনা ভালো করে করতে হবে, ডাক্তার/ইন্জিনিয়ার হওয়ার সাথে শেখাতে হবে নারীদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করার বিষয়টি।
আসলে পরিবারে দুই সন্তান অর্থাৎ কন্যা ও পুত্র সন্তান থাকলে দুটি সন্তানের জন্য দুরকম ঘরোয়া শিক্ষা বরাদ্দ থাকে।কন্যা সন্তানকে শেখানো হয় কোনো ছেলের দিকে না তাকাতে।সময়মতো ঘরে আসতে।
কন্যা সন্তানকে রাখাই সেভাবে হয় যেখানে কন্যা সন্তান সম্পূর্ণরুপে সুরক্ষিত থাকবে >>
সেক্ষেত্রে পুত্র সন্তানদের শিক্ষাটাও একটু অন্যরকম।সেক্ষেত্রে কোনো মেয়েকে কোনো পুত্র সন্তান কোনো ঝাড়ি মারল বা টোনটিং করল কিনা সে নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা থাকেনা মায়েদের।মায়েদের শুধু চিন্তা থাকে তাদের কন্যা সন্তানকে যাতে কোনো ছেলেই চোখ তুলে না দেখে বা যৌন হয়রানির শিকার না হয়।এক্ষেত্রে একজন পুত্র সন্তানের নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মানের বিষয়টি পুরোটাই সেই ছেলের উপর যায়।তাকে বাড়ির থেকে আর কেউ শিখিয়ে দেয় না।সেই ছেলেকে নিজেকে বুঝে নিতে হয়।আর একেকটি ছেলে যে যেভাবে নিতে পারে বা বিষয়টি দেখে।
তাই ধর্ষণ/ইপ্টিজিং/ অশ্লীলতা এগুলিকে গোড়া থেকে উপচে ফেলতে হলে নারীদের ভূমিকা প্রথম থাকে।প্রত্যেক নারীর উচিৎ হবে পুত্র সন্তান একটু বড়ো হবার পর তাকে শেখানো নারীদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করার জন্য।আর এই নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় এওয়ারনেস অনুষ্ঠান অত্যন্ত জরুরী।
প্রিয়াংকা নিয়োগী,
সেক্রেটারি জেনারেল অফ ইন্ডিয়া ডব্লিউ.সি.সি.ইন্টারন্যাশনাল।পুন্ডিবাড়ী,ভারত,
মন্তব্য