মোঃ সবুজ মিয়া: ফুলিয়ারচর প্রতিনিধি;
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাইনবোর্ডে বাসস্ট্যান্ডের নাম নিজেদের গ্রামের নামে নামকরণকে নিয়ে দুইদল গ্রামবাসির সংঘর্ষে আহত হয়েছে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক। ২০টিরও বেশী বাড়ি-ঘর ও দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও আগুনের ঘটনা ঘটেছে।আজ শনিবার (১২) আগস্ট সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আকবরনগর ও মিরারচর গ্রামবাসির মধ্যে এই সংঘর্ষ চলে।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় চার ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছেন ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আকবরনগর ও মিরারচর এই দুই গ্রামের নিয়ন্ত্রণে আকবরনগর-মিরারচর বাসস্ট্যান্ডটি। মুখে মুখে দূর-দূরান্তের লোকজন এটিকে মিরারচর বাসস্ট্যান্ড নামেই ডেকে থাকে। কিন্তু এটি মানতে নারাজ আকবরনগর গ্রামের মানুষ।এই দ্বন্দ্বে বেশ কয়েক বছর আগে দুইদল গ্রামবাসির এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বাসস্ট্যান্ডটির নামকরণ করা হয় “আকবরনগর-মিরারচর” বাসস্ট্যান্ড। এই যৌথ নামেই এতো বছর যাবত চলে আসছিলো।কিন্তু অতিসম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ ভুলক্রমে তাদের একটি সাইনবোর্ডে “আকবরনগর বাসস্ট্যান্ড” লেখায় দুই গ্রামবাসির মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। মিরারচর গ্রামের লোকজনের দাবি, আকবরনগর গ্রামের লোকেরা ষড়যন্ত্র করে সড়ক ও জনপথকে ম্যানেজ করে এই কাজটি করেছে।এই সন্দেহ থেকে গত ১০ জুলাই সোমবার এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ লিপ্ত হয় দুই গ্রামের লোকজন। এতে উভয় গ্রামের শতাধিক লোক আহত হওয়াসহ অর্ধশত দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হয়।খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে এই নিয়ে ভৈরব থানায় উভয়পক্ষকে নিয়ে এক সালিশ দরবার হয় এবং দুই গ্রামের সংযুক্ত নাম হবে ওই বাসস্ট্যান্ডের নাম-এই সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।কিন্তু সিদ্ধান্ত না মেনে আকবরনগর গ্রামের লোকজন মিরারচরের লোকজনদের বাসস্ট্যান্ড যেতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে বাঁধা দেয় বলে অভিযোগ মিরারচর গ্রামের লোকজনের।অপরদিকে আকবরনগর গ্রামের লোকজনদের দাবি, বাসস্ট্যান্ডের সমস্ত জায়গা-জমি তাদের। বাসস্ট্যান্ডটি পড়েছেও আকবরনগর মৌজায়। শুধুমাত্র কয়েকটি দোকান ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান আছে মিরারচরের লোকজনের। আর এইটিকে পূঁজি করে তারা নিজেদের গ্রামের নামে বাসস্ট্যান্ডটির নামকরণ করতে চায়। এই অন্যায় দাবি কিছুতেই মেনে নেবে না আকবরনগর গ্রামবাসি।এই নিয়ে গত দুইদিন ধরে উভয় গ্রামের লোকজনের মাঝে উত্তেজনার পর আজ সকালে যার যার এলাকার মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ এমন কি শিশু-কিশোররাও।
মন্তব্য