মো. দিদারুল ইসলাম,পেকুয়া (কক্সবাজার) থেকে >>> অবহেলিত গ্রামীণ সড়কগুলোতে নিজের অর্থায়নে সংস্কার কাজ করে আলোচনায় এসেছেন তরুণ সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী মো. আলমগীর। কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নে তাঁর একক উদ্যোগে প্রায় ১১টি চলাচল অনুপযোগী সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। এতে ১৪টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ দৈনন্দিন যাতায়াতে সরাসরি উপকৃত হয়েছেন।বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়াখালী গ্রামের সন্তান মো. আলমগীর বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কিন্তু ব্যস্ততার মাঝেও তিনি ভুলে যাননি জন্মভূমির মানুষের কষ্টের কথা। এলাকার দীর্ঘদিনের অবহেলিত সড়কগুলোর বেহাল চিত্র দেখে নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসেন তিনি।জানা যায়, ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবপাড়া থেকে পূর্ব জালিয়াকাটা সড়ক, কুতুবপাড়া থেকে পশ্চিম জালিয়াকাটা বেড়িবাঁধ, দক্ষিণ বারৈয়্যাকাটা থেকে চরপাড়া হয়ে বারবাকিয়া বাজার সংযোগ সড়কের আংশিক অংশ, পশ্চিম পাহাড়িয়াখালী সড়ক, মধ্যম জালিয়াকাটা সাইক্লোন শেল্টার সড়ক, ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক, বুধামাঝির ঘোনা থেকে নতুন পাড়া সড়ক, এবং জালিয়াকাটা ব্রিজ থেকে রাহাত আলী পাড়া পর্যন্ত সড়কসহ মোট ১১টি সড়কে ইট, বালি ও মাটি ফেলে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছেন তিনি।এছাড়া তাঁর প্রচেষ্টায় ছনখোলার জুম ও আবাদিঘোনা ছড়ার উপর সরকার নির্মিত মিনি সেতু এবং আবাদিঘোনার কাঠের সেতুর সংস্কারও নিজের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। ফলে দুর্গম এলাকার মানুষের চলাচল এখন অনেক সহজ হয়েছে। কয়েকটি নতুন কালভার্ট নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনও করেছেন তিনি।স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাশেম, আমির হোছন ও চট্টগ্রাম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাফি জানান, “দীর্ঘদিন এসব রাস্তায় হেঁটে যাওয়া ছিল দুরূহ। বৃষ্টির সময় তো প্রায় চলাচলই বন্ধ হয়ে যেত। এখন গাড়ি চলে, শিক্ষার্থীদেরও কষ্ট লাঘব হয়েছে। আমরা চাই, আগামী ইউপি নির্বাচনে এমন জনবান্ধব আলমগীর ভাই চেয়ারম্যান হোন।”স্থানীয়রা জানান, বারবাকিয়া ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু জাফর-এর সন্তান আলমগীর পারিবারিকভাবেই সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে অনুরাগী। এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের পাশে থাকা তাঁর নেশা ও প্রেরণা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাঁর এ উদ্যোগকে মানবিক ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন। তাঁদের বিশ্বাস, “এমন উদ্যোগ যদি প্রতিটি এলাকায় নেওয়া হয়, তবে গ্রামের চেহারাই বদলে যাবে।”নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন, “মানুষের ভোগান্তি দেখে চুপ থাকতে পারিনি। সরকার বা জনপ্রতিনিধিদের অপেক্ষায় না থেকে নিজেই কাজ শুরু করেছি। সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি যেন মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়।”তিনি আরও বলেন,“আমাদের কক্সবাজারের প্রিয় নেতা আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদ সাহেব গুম হওয়ার পর থেকে উন্নয়নে এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তিনি ছিলেন দলমত নির্বিশেষে সকলের শ্রদ্ধার পাত্র, নিরেট দেশপ্রেমিকের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সমাজের বিত্তবান ও তরুণ প্রজন্ম যদি তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে আসে, তবে গ্রামবাংলার রূপ বদলে যাবে।”উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু তাহের বলেন, “বারবাকিয়া ইউনিয়নের কিছু রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ, তবে এখনো কেউ আমাদের অবগত করেনি। আলমগীর সাহেবের মতো উদ্যোমী মানুষ সমাজে আছেন বলেই জনগণের দুর্ভোগ কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আছে। তাঁর উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়।”গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যক্তি উদ্যোগে এমন মানবিক পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়। সমাজের অন্যান্য তরুণ উদ্যোমী ব্যক্তিরাও যদি এগিয়ে আসেন, তবে দেশজুড়ে গ্রামীণ জীবনের চিত্র পাল্টে যেতে পারে — এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।











মন্তব্য