২০শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
ছাতকের চরমহল্লা ইউনিয়নে পূর্ববিরোধের জেরে দু”পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত ধানকাটা-আলু রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা রাঙ্গুনিয়ায় মৎস্যজীবীদের ছাগল পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত তানোরে অনিরাপদ পদ্ধতিতে কীটনাশক ব্যবহার, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কৃষকরা ফরিদপুরের নগরকান্দায় জোরপূর্বক জমির ধান কেটে নেওয়ায় থানায় অভিযোগ বাংলাদেশে ইন্টার্নশিপ করতে যাওয়া মালদ্বীপের শিক্ষার্থীকে হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা। সাতকানিয়া একতা ট্রাক্টর মালিক শ্রমজীবী সমবায় সমিতির মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত! নড়াইল-২ আসনে খেলাফত মজলিসের লিফলেট বিতরণ ও গন সংযোগ বরেন্দ্রে চলছে আমন কাটা-মাড়াই মহোৎসব বাম্পার ফলনের আশা তবুও দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক নেছারাবাদে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত
  • প্রচ্ছদ
  • সাহিত্য
  • “নুনের বেজায় দাম”
  • “নুনের বেজায় দাম”

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    লেখকঃ সাদেকুল ইসলাম
    বাফলা,রনচন্ডী-৫৩২০, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী।

    অনেকদিন আগের কথা।সেকালে করিম নামে এক বাবু সাব ছিল।যিনি সরকারি অফিসে সামান্য মাইনের চাকুরী করিত। তাহা দিয়া কোনো মতে তাহার ৩ সন্তান ও স্ত্রী লইয়া সংসার চলিত।চাকুরীর জন্য বাবু সাবকে স্ত্রী পরিজন,পরিবার ফালাইয়া দেশের অন্যত্রে থাকিতে হইতো।

    সেবার রোজার মাস,এক রাত্রে বাবু সাব মনে মনে ভাবিতে লাগিলো,এবার ঈদে আমার ২ পুত্রের লাগি ২খানা নতুন জামা কিনিতে হইবে,ছোট্ট মাইয়ার লাগি একখানা লাল টুকটকে ফ্রক লইয়া যাইতে হইবে।
    সাথে সহধর্মিণীর লাগিয়া একখানা তাঁতের শাড়ি লইতে হইবে।
    তাহারা বেজায় খুশি হইবে ইহা দেখিয়া। এমনটি ভাবিয়া বাবু সাব ঘুমিইয়া পরিলেন।
    পরদিন প্রাতের কালের বাবু সাব অফিসে গেলেন, গিয়া দেখিলেন তাহার উপরের কর্মকর্তা সাহেব তাকে জানাইয়া দিল, “করিম বাবু ঈদের পরে আপনার বদলি হইবে অন্যত্রে।
    তাই ঈদের ছুটিতে আপনি একেবারেই আপনার সকল কিছু লইয়া বাসায় যাইবেন।

    করিম বাবুর মন খানা বিমর্ষ হইয়া গেলো।তবুও কিছুই করিবার নাই,অফিসের আদেশ মানিতেই হইবে।অতঃপর করিম বাবু তাহার সব কিছু গোছগাছ করিয়া ঈদের ছুটিতে যাইবার জন্য প্রস্তুত হইলো।সারাদিন রোজা রেখে সান্ধকালে বাবু সাব নাস্তা খাইয়া নৈশভোজের জন্য আহার প্রস্তুত করিতে লাগিলো। কাজের মেয়ে না থাকায় বাবুসাব নিজেই রাধিয়া খাইতো।
    বাবুসাব অন্ন রাধিয়া,ডাল রাধিতে লাগিলো।বাসায় তেমন কিছু না থাকায় বাবুসাব ভাবিলো সামান্য দুখানা আলু সিদ্ধ করিয়া উহার ভর্তা বানাইয়া খাইলে বেশ তৃপ্তি পাইবো বটে।

    রাত্রি তখন ১০টা,আলু সিদ্ধ করিয়া বাবুসাব ভর্তার লাগি পেয়াজ,লঙ্কা কাটিয়া আলু ছানা করিয়া যেইনা নুন দিতে যাইবে অমনি দেখে নুনের পাত্র খালি।ভর্তায় দেয়ার মতো নুনটুকুও নাই।বাবুসাব পরিয়া গেলেন ব্যাপক চিন্তায়, শেষে তিনি ভাবিলেন কালকে তো বাড়িতে চলিয়া যাইতে হইবে, তাই ২ টাকা দিয়া সামান্য কিছু খোলা নুন কিনিয়া আনিয়া ভর্তা বানাইতে হইবে।তাই তিনি ২ টা টাকা লইয়া বাজারে গেলেন নুন কিনিবার লাগি।গিয়ে দেখেন সব দোকান বন্ধ,অনেক খোঁজাখুঁজির পরে দেখিতে পাইলেন একখানা দোকানে মিটিমিটি ল্যাম্পোর আলো জ্বলিতেছে।

    আলো দেখিয়া বাবুসাব জলদি করিয়া সেখানে গেইলেন, অতঃপর দোকানদারকে বলিলেন,”ভাই, আমারে ২ টাকার সামান্য কিছু নুন দিন”।
    দোকানদার তাহার কথার জবাব না দিয়া তাহার মুখপানে চাহিয়া রইলো।বাবু সাব আবারো কহিল,ভাই আমারে ২ টাকার সামান্য নুন দিন।এবার দোকানদার রেগে গিয়া বলিলেন, “কোথা হতে আসে এসব ভিখারির দল! নুন কিনিতে হইলে ১কিলোগ্রাম কিনিতে হইবে,না হইলে নুন কিনিতে পাইবেন না
    (১কিলোগ্রাম নুনের দাম ১০টাকা)।
    এসব ছোটলোকের মতো ২-৫ টাকার নুন বেচি না”।
    বাবু সাব ২টাকা লইয়া গিয়েছিলেন বলিয়া দোকানদারকে আর কিছু বলিতে চাইলেন না। অন্য সব দোকান বন্ধ দেখিয়া বাবুসাব বাসায় ফিরিয়া আসিলেন।

    সেদিন বাবুসাবের নৈশভোজ আর হইলোনা।নুনের অভাবে ডাল আর ভর্তা করিতে পারিলেন না।যেভাবে ছিলো সেগুলো ঐভাবেই তা রাখিয়া দিলেন।
    বিমর্ষ মনে বাবু সাব বলিতে লাগিলেন, হায়রে! নুনের জন্য ভর্তা বানাইতে পারিলাম না।
    এত দেখি নুনের বেজায় দাম!

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page