১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
মার্কিন যুবকের সাথে কক্সবাজারের তরুণীর প্রেম অত:পর যা ঘটেছে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের দাফন সম্পন্ন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত শান্তি নিবিড় পাঠাগার পরিদর্শন করেছেন সমাজ সেবা অফিসার কাঞ্চন কুমার দাস সাতকানিয়ায় তারুণ্যের উৎসব কাবাডি ও সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত তানোরে আলোচিত আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা ধাঁমাচাপা চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নতুন সচিব অধ্যাপক ড. একেএম সামছু উদ্দিন কিশোরগঞ্জে শিশু শ্রম ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সমাবেশ ও ৩৫৩০ জন শিশুর মাঝে ব্যাগ-কলম বিতরণ গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্তদের মাঝে চট্টগ্রাম ডিসির কম্বল বিতরন সীতাকুণ্ডে ডাকাত সর্দার গ্রেপ্তার
আন্তর্জাতিক:
  • প্রচ্ছদ
  • অন্যান্য >> কুড়িগ্রাম
  • কুড়িগ্রামে কারারক্ষীদের”জামিন বাণিজ্য”কারাগারে সরবরাহ হয় মাদক
  • কুড়িগ্রামে কারারক্ষীদের”জামিন বাণিজ্য”কারাগারে সরবরাহ হয় মাদক

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি>>> কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দি আসামিদের ঘিরে চলছে “জামিন বাণিজ্য”।খোদ কারারক্ষীরাই এমন বাণিজ্যে জড়িত বলে অভিযোগ ওঠেছে।কয়েকজন কারারক্ষী মিলে তৈরি করেছেন জামিন সিন্ডিকেট।জেলা কারাগারে বন্দি থাকা ও জামিনে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন আসামির সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।কারাগার সূত্র জানায়, জেলা কারাগারে চারটি পুরুষ ও দুটি নারী ওয়ার্ড মিলে মোট বন্দি ধারণক্ষমতা ১৬৩ এর মধ্যে পুরুষ ১৪৫ এবং নারী ১৮ জন।১৯৮৭ সালে জেলা কারাগারে রূপান্তরের পর থেকেই এই কারাগারে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি বন্দি থাকছেন।বন্দির সংখ্যা বাড়লেও কারাগারের ধারণক্ষমতা বাড়েনি।সূত্র আরও জানায়,কারাগারে বন্দিদের বেশিরভাগই মাদক মামলার আসামি।ওয়ার্ডগুলোতে ধারণক্ষমতার বেশি বন্দি থাকায় কারাগারে গাদাগাদি করে বসবাস করতে হয়। এমন পরিবেশ থেকে মুক্তি পেতে জামিন পেতে চলে জোর তৎপরতা।বন্দিদের জামিন আকাঙ্ক্ষাকে পুঁজি করে কারাগারের কয়েকজন কারারক্ষী ‘জামিন বাণিজ্য’ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পর্যন্ত এই চক্রের প্রতিনিধি রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। জামিন চুক্তি দেওয়া কয়েকজন বন্দি ও জামিনে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন আসামির সাথে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।কারাগারে বন্দি থাকা জেলার রৌমারী থানার মাদক মামলার দুই আসামির সাথে কারাগারে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন এই প্রতিবেদক।ওই দুই বন্দি জানান,নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে তা নাকচ হয়।এরপর কারারক্ষীদের ওই চক্র তাদের জামিনের চুক্তি নেন।উচ্চ আদালত থেকে জামিন করিয়ে দেওয়ার শর্তে ওই কারারক্ষীদের তারা আসামিপ্রতি ৫০ হাজার করে টাকা দেন। তবে চুক্তি অনুযায়ী তারা এখনও জামিন করাতে পারেননি। দেশে বিশেষ পরিস্থিতি চলমান থাকায় জামিন পেতে বিলম্ব হচ্ছে বলে তাদের জানানো হয়েছে।ওই দুই বন্দি বলেন, ‘কারারক্ষী রেজাউল জামিনের কাজ নিছে।চুক্তি মোতাবেক আমাদের পরিবার তাকে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে দিছে। আরও আগে জামিন হওয়ার কথা আছিল।কিন্তু দ্যাশের এই অবস্থায় দেরি হইতেছে।’তারা আরও বলেন,বাদশা কথা বলায় দিছে। কারারক্ষী রেজাউল জামিনের দায়িত্ব নিছে।গত রোববার (২৫ আগস্ট) তাদের জামিন হওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা জামিন আদেশ পাননি বলে জানান এই দুই বন্দি।এই দুই বন্দি দাবি করেন,পুলিশ এক নারীকে দিয়া আমগো মাদক মামলায় ফাঁসায় দিছে। আমরা মাদক কারবারি না।পৃথক ঘটনায় গ্রেফতার হলেও তাদেরকে ‘ফাঁসাতে’ একই নারী জড়িত বলে দাবি এই দুই যুবকের।এই দুই বন্দির জামিন চুক্তি ও কারাগারে জামিন চক্রে জড়িত কারারক্ষীদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, সম্প্রতি এই চক্রের মাধ্যমে চুক্তিতে জাহের আলী ফকির নামে এক বন্দি জামিনে মুক্তি পান।জাহের আলীর সাথে যোগাযোগ করে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।৫ থেকে ৭ জন কারারক্ষী এই জামিন বাণিজ্যে জড়িত।এদের মধ্যে কারারক্ষী রেজাউল করিম,বাদশা মিয়া,গোলাম মোস্তফা,আসলাম হোসেন ও আল-আমিনের বিরুদ্ধে চুক্তিতে জামিন করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, অভিযুক্ত কারারক্ষীদের মধ্যে আসলাম হোসেন সমন্বয়কারী। তার পরামর্শে অন্য কারারক্ষীরা বন্দিদের সাথে জামিনের চুক্তি করেন।পরে আদালতে গিয়ে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ আইনজীবীদের মাধ্যমে জামিনের ব্যবস্থা করেন।কারারক্ষী রেজাউলের জামিন বাণিজ্যের বিষয়টি কারাগারে মোটামুটি সকলের জানা।এই চক্রে আদালতের কয়েকজন অসাধু কর্মচারীও জড়িত।কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া একাধিক আসামির সাথে কথা বলে জানা গেছে,শুধু জামিন নয়, কারাগারের অভ্যন্তরে মাদক সরবরাহে কয়েকজন কারারক্ষী জড়িত।এই কারারক্ষীদের মধ্যে অনেকে মাদকাসক্ত রয়েছেন।কারাগারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, জামিন সিন্ডিকেট,মাদক সরবরাহসহ বিধি বহির্ভূত কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকমাস আগে কয়েকজন কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছিল।কিন্তু চক্রটি পুরোপুরি ভাঙা সম্ভব হয়নি। ‘শক্তিশালী’ এই চক্রের কাছে কারা কর্মকর্তারাও অনেকটা অসহায় আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন।অভিযোগের বিষয়ে জানতে কারারক্ষী রেজাউল করিমের সাথে কারাগারে গিয়ে দেখা করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।পরে তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।আরেক কারারক্ষী আসলাম হোসেন বলেন ‘আমি এসবে জড়িত নই।আমি ভিতরে দায়িত্ব পালন করি না,অফিসে দায়িত্ব পালন করি।কেউ বলতেও পারবে না যে আমি এধরনের কাজ করি।কেউ বলে থাকলে সেটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বলছে। তবে যাদের নাম বলছেন (রেজাউল সহ অন্যরা) তারা জামিন কন্ট্রাক্ট করে বলে কারাগারে অনেকে জানে। কারারক্ষী বাদশা জড়িত আছে কিনা আমার জানা নেই।পুরাতন আসামিরা নতুন আসামিদের সাথে আলাপ করে জামিন চুক্তিকারী কারারক্ষীদের সাথে আলাপ করিয়ে দেয়।পরে ওই কারারক্ষীরা তাদের নির্ধারিত আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের ব্যবস্থা করেন।যোগ করেন আসলাম।জানতে চাইলে কারাগারের জেলার আবু ছায়েম বলেন‘আমরাও এমন অভিযোগ পাই। কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। নানা অভিযোগ থাকায় এর আগে কয়েকজন কারারক্ষীকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল।বর্তমানে কর্মরত কারও বিরুদ্ধে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে মাদকাসক্তের অভিযোগ প্রমাণে ডোপ টেস্ট করা প্রশ্নে জেলার বলেন ‘আমি মনে করি কর্তৃপক্ষ তেমন ব্যবস্থা নিতে পারেন এবং নেওয়া উচিৎ।জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন‘কয়েকজন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছিল।তাদের বদলিও করা হয়েছে। আরও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page