আনোয়ার হোসেন-কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ>>>
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে আধুনিক প্রযুক্তিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক চাহিদা থাকায়,কম খরচে অধিক লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন তারা।উপজেলা কৃষি অফিস জানায়,গ্রীষ্মকালীন চাষের মাধ্যমে পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।এ লক্ষে চলতি খরিপ মৌসুমে (২০২৩-২৪) গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার ক্ষুদ্র-প্রান্তিক চাষিদের মাঝে“কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর” আওতায় বিনামূল্যে বীজ, সার ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।গতকাল শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়,সদর ইউপির ইসমাইল দোলা পাড়া গ্রামের কৃষক ফজলুল হক ও একই গ্রামের কৃষক মজনু মিয়া একদম উঁচু পানি নিকাশি জমিতে বেড তৈরি করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে বীজ তলা তৈরির কাজে ব্যস্ত।এসময় ফজলুল হক বলেন,এ এলাকার জমি উচুঁ বেলে দোআঁশ হওয়ায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে একেবারেই উপযোগী।ভারি বৃষ্টিপাত হলেও জমি ঢালু হওয়ায় পানি জমেনা।এতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে তেমন ভয় থাকেনা। ফলনও ভাল হয়।বিশেষ করে বর্ষাকালে অনেক নিচু এলাকায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষাবাদ করতে পারেনা।শীতকালের চাষাবাদকৃত পেঁয়াজের মজুদ শেষ হয়ে যায়।ফলে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়।এসময় ভাল বাজার মূল্য পেয়ে লাভবান হওয়া যায়।স্থানী বাজারে পেঁয়াজের চাহিদাও পূরণ করা যায়।এজন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার আব্দুল লতিফ স্যারের পরামর্শে আমি ১বিঘা ও অপর কৃষক মজনু মিয়া ১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষের প্রস্তুতি গ্রহন করেছি।শুক্রবার বন্ধের দিনও তিনি (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা) বীজতলায় উপস্থিত থেকে উত্তমরুপে বীজতলা তৈরি,সুষম সার ব্যবহার,পরিমানমত বীজ বপন,পানি নিস্কাশন,পলিথিন ঢেকে চারা উৎপাদনসহ পেঁয়াজ চাষে নানা দিকনির্দশনামূলক পরামর্শ দেন।উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন,আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশে পেঁয়াজের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে মাঠ পর্যায়ে খুব জোরোসোর কাজ করা হচ্ছে।এ লক্ষে চলতি বছর ৭৫ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা গ্রহন কর হয়েছে।৭৫ জন কৃষককে পেঁয়াজ চাষে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন,নাসিকা রেড এন্ড ৫৩ জাতের উচ্চ ফলনশীল বীজ,সার বিতরণ করা হয়েছে।যেহেতু বর্ষা মৌসুম এজন্য পেঁয়াজ চাষের জন্য কৃষককে কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলা হচ্ছে।চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলার বেড অবশ্যই উঁচু জমিতে করতে হবে।জমির পানি নিকাশি ব্যবস্থা যেন খুব ভালো হয়।বর্ষার হাত থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।মূল জমিতে ৪০-৪৫দিনের চারা লাগাতে হবে। চারা লাগানোর ৭৫ দিনের মাথায় ফসল ঘরে তুলে তা বাজারজাত করতে পারবে।এর ফলে আমদানি নির্ভরতা কমবে।বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ হবে।হেক্টরে ফলন হবে ১০-১২ মেট্রিকটন।কৃষকরাও ভাল বাজার মূল্য পেয়ে লাভবান হবেন।মাঠপর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকের পাশে থেকে বীজতলা তৈরি ও পেঁয়াজ চাষে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছে।
মন্তব্য