কিশারগঞ্জ (নীলফামারী)প্রতিনিধি>>> নীলফামারীর কিশােরগঞ্জে গবাদিপশুর মধ্যে মারাত্মক হারে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসজনিত রোগ লাম্পি স্কিন।এ রোগে সহস্রাধিক আক্রান্তসহ গত দেড় মাসে ২শতাধিক গরুর মৃত্যু হয়েছে।লাম্পি স্কিন একটি ছোঁয়াচে রোগ,তাই দ্রুত এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ছে।যা দিন-দিন আক্রান্ত ও গরু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গা-ছাড়া ভাব কর্মকান্ডে হাতুড়ে ও পল্লী চিকিৎসকদের পোয়া-বারো হয়েছে।এতে ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষকরা গরুর চিকিৎসায় মোট অংকের টাকা খরচ করেও মৃত্যু ঠেকাতে না পারায় আতঙ্কিত ও দিশাহারা হয়ে পড়েছে।সরেজমিনে জানা যায়,এ রোগে আক্রান্ত হয়ে বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুড়াকুটি গ্রামের জয়নোন কোর্ট এলাকার ছফিল,রফিকুল,জাহেদুল,সাইয়াদার ও শামসুলের ১টি করেসহ মোট ৩৬টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।কিশােরগঞ্জ বাজারের তপন মোহন্ত ও ইসমাইল যদুমনি গ্রামের পেয়ারুল,মোকলেছার,ফজলুর ও এজিদুলের ১টি করেসহ মোট ৩৩টি।পুটিমারী ইউনিয়নের মন্থনা গ্রামের সেলিম, রুহুল,আজিজুল ও মাজেদুলের ১টি করেসহ মাট ২০টি।এছাড়া রনচন্ডি ইউনিয়নের চতুর পাড়া গ্রামের হুমান,ওলিয়ার, নজরুল,ওয়াজেদের ১টি করেসহ ১৮টি।চাঁদখানা নগরবন গ্রামের আলমগীর,ডোঙ্গার লিপি বেগম ও আমীরের ১টি করেসহ মোট ১২টি।মাগুড়া ইউনিয়নে ৩৪টি।গাড়াগ্রাম ইউনিয়নে ৩২টি।বড়ভিটা ইউনিয়নে ১৮টি।নিতাই ইউনিয়নে ১৫টিসহ ২শতাধিক গরুর মৃত্যু হয়েছে।উত্তর দুরাকুটি জয়নোনকোর্ট গ্রামের কৃষক জাহেদুল ইসলাম ও ছফিল উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,প্রাণিসম্পদ অফিসের চিকিৎসককে খবর দিলেও এলাকায় আসেনা।পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়ে ৮হাজার টাকা খরচ করেও ছফিলের ১টি ও ৩ হাজার টাকা খরচ করে জাহেদুলের ১টি গরু মারা গেছে।আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করাতে মালিকরা হিমশিম খাচ্ছে।তারা জানান,হঠাৎ গরুর শরীর গরম হয়ে জ্বর আসে।চামড়ায় গুটি গুটি হয়ে ফোসকা পড়ে।এরপর সেখানে চামড়া উঠে ক্ষতের সৃষ্টি হয়,পচন ধরে দূর্গ্ধ ছড়ায়।পা ফুলে যাওয়াসহ গলার নিচে পানি জমে।এসময় গরু অনেকটা খাওয়া ছেড়ে দেয়।ফলে ক্রমান্বয়ে দূর্বল হয়ে পড়ে এবং মারা যায়।এদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বলছেন,আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখতে হবে।গোয়ালঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।প্রয়োজনে গরুকে মশারির মধ্যে রাখতে হবে।তবে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই।এটা ভাইরাসজনিত রোগ,নিয়মের মধ্যে থাকলে এমনিতেই এই রোগ সেরে যাবে। প্রয়োজনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে এবং আমরা তাদের সঠিক পরামর্শ দিতে প্রস্তুত।উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নূরুল আজীজ জানান,এ উপজেলায় ১লাখ ২৬ হাজার গরু রয়েছে।গত ১ মাসে চিকিৎসার জন্য অফিসে নিয়ে আসা লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত ২৫২টি গরুর মধ্য ৩৬টা মারা গেছে।মাঠ পর্যায়ে আক্রান্ত ও মৃত্যু গরুর কোন পরিসংখ্যান অফিসে নাই।এ রোগে আক্রান্ত গরুর জন্য প্রাণি সম্পদ দপ্তর অথবা ভেটেরিনারি সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে।
মন্তব্য