মোহাম্মদ কেফায়াত উল্লাহ টেকনাফ উপজেলা প্রতিনিধ>>>৩০ মাফিয়ার হাতে জিম্মি কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প। মাদক ইয়াবা-আইস কারকার, অস্ত্র চোরাচালান, অপহরণ, খুন, গুম, ডাকাতিসহ অন্তত ১২ ধরনের অপরাধের নেতৃত্ব দিচ্ছে এরা। রোহিঙ্গাদের ৩৩টি ক্যাম্পে এদের কথাই শেষ কথা। এদের নির্দেশে যেমন লাশ পড়ে, এদের নির্দেশেই অরাজকতা চলছে প্রতিটি ক্যাম্পে।
মিয়ানমারের নিষিদ্ধ সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), ইসলামী মাহাজ, জমিয়তুল মুজাহিদীন ও আল ইয়াকিনের নেতা এরা। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে এসে এরা এ সংগঠনের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। এদের প্রত্যেকের রয়েছে অবৈধ অস্ত্রের ভান্ডার। অস্ত্রের ভান্ডারে রয়েছে অত্যাধুনিক একে ৪৭সহ চায়নিজ ভারী অস্ত্র।
এরা প্রত্যেকেই অস্ত্র পরিচালনায় প্রশিক্ষিত। নিজেরাও তাদের সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আর এদের কাছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও অসহায়। এ ৩০ মাফিয়ার নেতৃত্বে রয়েছে অন্তত ৫০ হাজার সন্ত্রাসী, যাদের মধ্যে রয়েছে ১০ হাজার রোহিঙ্গা; যারা সশস্ত্র অবস্থায় প্রস্তুত থাকে। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরেজমিনে অনুসন্ধানে এমন সব আশঙ্কাজনক তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, খুনোখুনি, অপহরণ, গুম, লুটপাটসহ নানা জঘন্য অপরাধজনক ঘটনার নেতৃত্বে থাকছে এ ৩০ মাফিয়া। তবে আশঙ্কাজনক খবর হচ্ছে, খোদ রোহিঙ্গা নিধনকারী বলে পরিচিত প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার সরকারও গোপনে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গ্রুপ সৃষ্টিতে ইন্ধন দিচ্ছে।এ খবর সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও ভাবিয়ে তুলেছে।সরেজমিনে জানা যায়, বর্তমানে শিবিরগুলোয় আল ইয়াকিন নামে একটি সশস্ত্র রোহিঙ্গা গ্রুপ বেশ সক্রিয়। আল ইয়াকিনের বেশির ভাগ সদস্য আগে আরএসও নামক সংগঠনে ছিল। আল ইয়াকিনকে অনেক রোহিঙ্গাই আরসা হিসেবে বলে থাকে। সংগঠনটিতে রয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা তরুণ ও যুবক। সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছে আল ইয়াকিন বা আরসা নামের সশস্ত্র সংগঠনটি একটি বড় ধরনের আতঙ্কের নাম। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের কাছে আরেক ত্রাস হিসেবে পরিচিত হচ্ছে ‘ডাকাত বাহিনী’। ডাকাত বাহিনীটি আবার ‘নবী হোসেন বাহিনী’ নামেও পরিচিতি পেয়েছে। প্রায় প্রতিটি শিবিরেই রয়েছে রোহিঙ্গা ডাকাত নবী হোসেন বাহিনীর তৎপরতা। মালয়েশিয়া থেকে ফিরে আসা রোহিঙ্গা নবী হোসেন, ইউনুস, মৌলভি আইউবসহ আরও বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার নেতৃত্বে থাকা বাহিনীটির প্রত্যেকের কাছেই রয়েছে অস্ত্রশস্ত্র। এ বাহিনীর সদস্যরা রাতে এমনকি দিনেও ডাকাতি, ছিনতাইসহ খুনখারাবিতে জড়িত। তবে তিনি এখন আল ইয়াকিনের নেতা। তাকে ধরতে বিজিবি ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। নবী হোসেনসহ এ ৩০ মাফিয়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সুড়ঙ্গ করে অবস্থান করত। যাদের সাহায্য করেন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীরা। এরা এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। ব্যাপক অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর সঙ্গে কথা বলে এ ৩০ মাফিয়া সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে।এ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে পাহাড়ের গহিনে। যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কখনো পৌঁছাতে পারেনি।এদের কাছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও অসহায়। এ ৩০ মাফিয়ার নেতৃত্বে রয়েছে অন্তত ৫০ হাজার সন্ত্রাসী, যাদের মধ্যে রয়েছে ১০ হাজার রোহিঙ্গা; যারা সশস্ত্র অবস্থায় প্রস্তুত থাকে। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরেজমিনে অনুসন্ধানে এমন সব আশঙ্কাজনক তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, খুনোখুনি, অপহরণ, গুম, লুটপাটসহ নানা জঘন্য অপরাধজনক ঘটনার নেতৃত্বে থাকছে এ ৩০ মাফিয়া। তবে আশঙ্কাজনক খবর হচ্ছে, খোদ রোহিঙ্গা নিধনকারী বলে পরিচিত প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার সরকারও গোপনে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গ্রুপ সৃষ্টিতে ইন্ধন দিচ্ছে।এ খবর সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও ভাবিয়ে তুলেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, বর্তমানে শিবিরগুলোয় আল ইয়াকিন নামে একটি সশস্ত্র রোহিঙ্গা গ্রুপ বেশ সক্রিয়। আল ইয়াকিনের বেশির ভাগ সদস্য আগে আরএসও নামক সংগঠনে ছিল। আল ইয়াকিনকে অনেক রোহিঙ্গাই আরসা হিসেবে বলে থাকে। সংগঠনটিতে রয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা তরুণ ও যুবক। সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছে আল ইয়াকিন বা আরসা নামের সশস্ত্র সংগঠনটি একটি বড় ধরনের আতঙ্কের নাম। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের কাছে আরেক ত্রাস হিসেবে পরিচিত হচ্ছে ‘ডাকাত বাহিনী’। ডাকাত বাহিনীটি আবার ‘নবী হোসেন বাহিনী’ নামেও পরিচিতি পেয়েছে। প্রায় প্রতিটি শিবিরেই রয়েছে রোহিঙ্গা ডাকাত নবী হোসেন বাহিনীর তৎপরতা। মালয়েশিয়া থেকে ফিরে আসা রোহিঙ্গা নবী হোসেন, ইউনুস, মৌলভি আইউবসহ আরও বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার নেতৃত্বে থাকা বাহিনীটির প্রত্যেকের কাছেই রয়েছে অস্ত্রশস্ত্র। এ বাহিনীর সদস্যরা রাতে এমনকি দিনেও ডাকাতি, ছিনতাইসহ খুনখারাবিতে জড়িত। তবে তিনি এখন আল ইয়াকিনের নেতা। তাকে ধরতে বিজিবি ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। নবী হোসেনসহ এ ৩০ মাফিয়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সুড়ঙ্গ করে অবস্থান করত। যাদের সাহায্য করেন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীরা। এরা এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। ব্যাপক অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর সঙ্গে কথা বলে এ ৩০ মাফিয়া সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে।হাফিজ ফজলুল কবির। বয়স ৪৫। তার জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা মিয়ানমারের মংডু হাজিবিল। তিনি কোরআনে হাফেজ এবং সশস্ত্র সংগঠন আরসার নায়েবে আমির। উখিয়ার শরণার্থী শিবির ১ নম্বর বালুখালী ৮/ই ক্যাম্পের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও আইস পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি অত্যাধুনিক রাইফেল ৪৭ চায়নিজ জি-থ্রি ও জি-ফোর অস্ত্র চালনায় পারদর্শী।মাওলানা হামিদ হোসেন। ডাকনাম সাহেব। তার স্থায়ী ঠিকানা এবং জন্মস্থান যুম্মনখালি। তিনি কোরআনে হাফেজ। আরসার সক্রিয় সদস্য। বালুখালী ক্যাম্পের ব্লক জিতে বর্তমানে বসবাস করেন। অত্যাধুনিক রাইফেল একে ৪৭ চায়নিজ জি-থ্রি ও জি-ফোর অস্ত্র চালনায় পারদর্শী।হাফেজ নুর মোহাম্মদ। বয়স ৩২। তার জন্ম এবং স্থায়ী ঠিকানা মিয়ানমারের মংডুর লেডিন। বালুখালী শিবিরের ১৭ নম্বর ব্লকের ৮/ই ক্যাম্পে তিনি বসবাস করেন। অত্যাধুনিক রাইফেল একে ৪৭ চায়নিজ জি-থ্রি ও জি-ফোর অস্ত্র চালনায় পারদর্শী।রহমত করিম। মিয়ানমারের মংডু তার স্থায়ী নিবাস। জন্ম সেখানেই। আছেন কুতুপালং ক্যাম্পে। আরসার সদস্য। হত্যা, ডাকাতি, লুট, অপহরণ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। ইয়াবা ও আইসের ডিলার। তার কাছে একে ৪৭ থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে। তিনি অস্ত্র চালনার একজন প্রশিক্ষকও।আব্বাস মাবুইয়া। বয়স ২৮। মিয়ানমারের কাউপেল আবেগ নামক স্থানে জন্ম। বর্তমানে ক্যাম্পে আছেন। আরসার সদস্য। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য ডাকাতি, খুন ও অপহরণ মামলা। অত্যাধুনিক সব অস্ত্র পরিচালনা করতে পারেন। তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। মিয়ানমারের মংডুর বালুখালীর বাসিন্দা আবু উসামা ওরফে মাওলানা শফি আলম বর্তমানে থাকেন উখিয়ার বালুখালী শিবিরের ৫০/২ ব্লকের ১ নম্বর ক্যাম্পে। মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরসার একজন নেতা। তিনি মাদক ইয়াবা, আইস ও অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানে জড়িত। তার নিজস্ব একে ৪৭সহ ভারী অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। তার গডফাদারের নাম নয়র ইসলাম। ইসমাইল ওরফে আবু রায়হান। ৪৫ বছরের এই রোহিঙ্গার বাড়ি মিয়ানমারের মংডুর শিরখালীতে। উখিয়ার টাইংখালী শরণার্থী শিবিরের ৩০ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস করেন। আরসার সদস্য ইসমাইলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একে ৪৭ রাইফেল। মৌলভি সালমানের বয়স ৪৮। মিয়ানমারের শিরখালী থেকে এসে তিনি এখন টাইংখালীর ১৩ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস করছেন। অস্ত্র ও মাদক কারবার তার প্রধান পেশা।মৌলভি শামসুল আলম ওরফে হাকিম সাহেব। মিয়ানমারের মংডুর মেধি এলাকায় জন্ম। কুতুপালং শিবিরের ১৪ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস করেন। আরসার এই নেতার কাছে একে ৪৭ ও অন্যান্য ভারী অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে বলে ক্যাম্পের সূত্রগুলো জানিয়েছেন। মংডুর হায়েনকালির সানাউল্লাহ এখন বসবাস করেন বালুখালী শিবিরের ৭ নম্বর ক্যাম্পে। ইয়াবা কারবার ও অপহরণ তার মূল পেশা। তার অস্ত্রের ভান্ডারে রয়েছে নানা ধরনের ভারী অস্ত্র। মিয়ানমারের মংডুর ছারিপাড়ায় জন্ম ইহসান ওরফে সুলায়মানের। ১ নম্বর বালুখালীর ৯ নম্বর ক্যাম্পে থাকেন। অস্ত্র ব্যবসা করছেন দীর্ঘদিন ধরে। হাফেজ আজিজ আহমেদ। কোরআনে হাফেজ। মংডুর আইশিক্ষপাড়া স্থায়ী ঠিকানা। বালুখালী ক্যাম্পে বর্তমানে তার বসবাস। আরসার নেতা আজিজের মূল পেশা ইয়াবা কারবার ও অপহরণ। তারও অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে। মিয়ানমারের রামমুয়েলবিলে জন্ম মৌলভি রফিকের। সশস্ত্র সংগঠন আরসার নেতা। থাকেন বালুখালী শিবিরের ৭ নম্বর ক্যাম্পে। ছয় সন্তানের জনক রফিক ইয়াবা কারবারি। অপহরণ বাণিজ্য করছেন নিয়মিত। তার নিজস্ব অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে। মিয়ানমারের মংডুর লুধাইনের বাসিন্দা নূর বাশার এখন বাংলাদেশের অস্ত্রের কারবারি। থাকেন উখিয়া বালুখালী ৯ নম্বর ক্যাম্পে। এসএসসি পাস বাশার আরসার সদস্য। অপহরণ ও ইয়াবা কারবার তার পেশা।মিয়ানমারের মংডুর নারিবির বাসিন্দা জাহিদ হোসেন উখিয়ায় এসে ইয়াবার কারবার করছেন। অপহরণ আর মানব পাচারেও তার নামডাক রয়েছে। তিনি বর্তমানে জামতলীর ১ নম্বর ক্যাম্পে থাকেন।আরসার নেতা জাহিদেরও রয়েছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। মংডুর ফেঅকালির বাসিন্দা মো. সালাম। বর্তমানে বালুখালীর ৮/ই নম্বর ক্যাম্পে বসবাস করেন। অস্ত্র ও মাদক কারবার তার পেশা। মংডুর মেরুল্লার মাওলানা মোস্তাক থাকেন বালুখালী ১৩ নম্বর ক্যাম্পে।মংডুর হায়েখালীর সানাউল্লাহ, জামান্নার রফিক, মিয়ানমারের কিউয়ের বাসিন্দা ওস্তাদ খালিদ, হায়ছোটারার মাস্টার ইউনুস, মংডুর নায়চাডংয়ের মাওলানা জামালসহ ৩০ জন মাফিয়া রয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
মন্তব্য