আব্দুল্লাহ আল মারুফ চট্টগ্রাম দক্ষিণ সংবাদদাতা>>> গ্রামের পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরেও নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল দিন দিন বেড়েই চলেছে।নগরে ১৫ হাজারের বেশি অটোরিকশা চলছে এর বাইরে চট্টগ্রামে গ্রাম এলাকার জন্য সিএনজি টেক্সি রয়েছে ৪৫ হাজার।গ্রামে রেজিস্ট্রেশনবিহীন টেক্সি রয়েছে আরো অন্তত ৫ হাজার।এই ৫০ হাজার গাড়ি।একটি অংশ নানা কৌশলে নগরীতে চলাচল করছে।দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রাইভেট গাড়ি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া প্রায় দেড় হাজার গাড়ি শহর দাবড়ে বেড়ায়চলে।পুলিশের কাছ থেকে টোকেন নিয়ে অবাধে নম্বরবিহীন অটোরিকশা চলছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। তবে পুলিশ বলছে,আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে নগরে নম্বরবিহীন অটোরিকশা চলছে।দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এসব অটোরিকশা চললেও পুলিশ কিংবা বিআরটিএ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা মিলে, ‘চট্টমেট্রো-থ-১২’ লিখে নগরে অটোরিকশা চলতে দেখা যায়।একাধিক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ জন্য প্রতি মাসে পুলিশকে তিন হাজার টাকা করে দিতে হয়। পুলিশেকে মাসোহারা দিয়েই চলে টোকেন বাণিজ্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. রোকন উদ্দিন বলেন,গ্রামে ২০ হাজার বৈধ অটোরিকশা রয়েছে। গ্রাম এবং শহরে মিলে নম্বরবিহীন অটোরিকশা ১৫ হাজারের কম হবে না।কীভাবে চলছে সেটা আপনারা ভালো বলতে পারবেন। এটা বন্ধ করা দরকার।’বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে,নগরে চলাচলকারী বৈধ অটোরিকশার সংখ্যা ১৩ হাজার।১০ বছর ধরে মহানগর এলাকার অটোরিকশা নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে।তবে গ্রামের অটোরিকশা নিবন্ধন এখনো চলছে।গ্রামে নিবন্ধিত অটোরিকশা প্রায় ২০ হাজার বলে জানা গেছে।অটোরিকশা নম্বরবিহীন চলার কথা স্বীকার করে বিআরটিএর মোঃ মাসুদ আলম পরিচালক(ইঞ্জি.) জানান,নগরে কিছু যায়গায় অটোরিকশা চলছে নম্বর বিহীন।তবে সংখ্যায় কত হবে তা আমাদের কাছে পরিসংখ্যা জানা নেই।আমরা মাঝেমধ্যে এর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করি।তবে এ কাজ বেশি দেখে ট্রাফিক পুলিশ।আমরা তাদেরকেও চিঠি লিখে জানিয়েছি।’বিশ্বস্ত সূত্রে স জানা গেছে,নগরীতে বৈধভাবে চলাচলকারী সিএনজি টেক্সির সংখ্যা ১৩ হাজার ছড়িয়ে গেছে।এর বাইরে চট্টগ্রামে গ্রাম এলাকার জন্য সিএনজি টেক্সি রয়েছে ৪৫ হাজার।গ্রামে রেজিস্ট্রেশনবিহীন টেক্সি রয়েছে আরো অন্তত ৫ হাজার।এই ৫০ হাজার গাড়ির একটি অংশ নানা কৌশলে অবলম্বন করে নগরীতে চলাচল করছে।দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রাইভেট গাড়ি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া প্রায় দেড় হাজার গাড়ি শহর দাবড়ে বেড়ায় প্রতিনিয়ত।সবকিছু মিলে বৈধ টেক্সির সাথে বহুদিন ধরে নগরীতে আরো অন্তত ১৫ হাজার রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি চলাচল করে।একটি সিএনজি টেক্সি রেজিস্ট্রেশন করাতে সরকারকে এককালীন ১৩ হাজার ২০৫ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ করা লাগে।প্রতি বছর দিতে হয় বিভিন্ন ধরনের ভেট ট্যাক্স।কিন্তু রেজিস্ট্রেশনবিহীন টেক্সিগুলোকে ট্যাক্স দিতে হয় না।না এককালীন,না বছর বছর।এতে সরকার প্রতিবছর হারাচ্ছে রাজস্ব ট্যাক্স কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।অথচ নগরীর অলিগলি থেকে রাজপথ সর্বত্র চলছে সিএনজি টেক্সি টোকেন বাণিজ্য।চট্টগ্রাম অটো রিক্সা অটো টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ গতকাল জানান,শহরে ১৩ হাজার টেক্সি চলাচল করে।এর বাইরে কয়েকশ গ্রাম টেক্সি চলতে পারে।ভাড়া বেশি নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন,ভাড়া বেশি নেওয়া হয় এটা অস্বীকার করতে পারব না।কিন্তু চালকেরা পরিস্থিতির শিকার।সরকার সিএনজি টেক্সি মালিকদের প্রতিদিনের জন্য ৯শ টাকা ভাড়া আদায়ের গেজেট করে দিয়ছিল।তবে মালিক পক্ষ ৯শ টাকা মানেন নি।তারা বাড়তি ভাড়া আদায় করে থাকেন।একটি টেক্সির মালিককে যদি দৈনিক এক হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়,চালক তো বাড়তি ভাড়া নেবেই এটা স্বাভাবিক। তাকে গ্যাস কিনতে হয়,পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়।জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন,একসময় নগরে কিছু অটোরিকশা নিবন্ধন করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।তখন অনেকে গাড়ি কিনেছেন।কিন্তু পরে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।পরে তারা আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছে, যাতে তাদের কেউ বিরক্ত না করে।এর বাইরে যদি নম্বর ছাড়া গাড়ি চলে,তাহলে অবশ্যই মামলা হওয়ার কথা।তবে এই বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবো।চট্টগ্রাম মহানগরির পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন,শহরে গ্রাম টেক্সি চলাচল নিষিদ্ধ আছে।রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি চলাচলেরও সুযোগ কোনভাবে নাই।কেউ চোরাগুপ্তা পথে আসলে আমরা তাকে আটক করে। মামলা করি,ডাম্পিং ইয়ার্ডে পাঠিয়ে দিই।মিটার সংযোজন কিংবা ভাড়ার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তে বাহিরে পুলিশের পক্ষে থেকে কিছুই করার নেই।
মন্তব্য