কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি>>> নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত এক বখাটে যুবকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।গ্রেপ্তারকৃত প্রধান অভিযুক্ত তারেক মিয়া (২৫) নামে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের মুন্সীপুর গ্রামের মো. শাহআলম মিয়ার ছেলে।সে বিবাহিত এক সন্তানের জনক।ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা ও মার ভাষ্য,তাদের সন্তান স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ।বিদ্যালয়ের আসা যাওয়ার পথে প্রায়শ বিরক্ত করতো তারেক।গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দিনগত রাতে প্রকৃতি ডাকে ওই কিশোরী ঘরের বাহিরে বের হন।ঘরে আসতে দেরি দেখে তার মাসহ বাড়ীর লোকজন সারারাত খোঁজাখুঁজি করেন।ওই কিশোরীর বুধবার সকাল পর্যন্ত সন্ধান না পেয়ে যখন থানা পুলিশের নিকট যাবেন।এ মুহূর্তে ওই কিশোরীকে স্থানীয় দুই মহিলা ভুক্তভোগীকে তাদের বাড়ীতে দিয়ে যান।পরে কিশোরীটি তার মাসহ পরিবারের লোকজনের নিকট ইশারায় ঘটনাটি খুলে বলে।পরে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন যে,গত মঙ্গলবার রাতে অপহরণ করে তার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী কিশোরীকে মুন্সীপুর গ্রামের তারেক মিয়ার নিজ বাড়ীতে নিয়ে যায়।তারেক তাদের বাড়িতে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীকে তার ঘরে নিয়ে সারারাত আটকে রাখে।এ সময় তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তারেক মিয়া।পরে বৃহস্পতিবার সকালে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা থানায় গিয়ে মো. তারেক মিয়াকে প্রধান অভিযুক্ত ও আলমগীরকে সহযোগী আসামি করে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি তারেকর বসতবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।এ বিষয়ে অভিযুক্তের মা পেয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলের সাথে ওই মেয়ের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।আমার বিবাহিত ছেলের কাছে সে বিয়ে বসতে চাই।সে তার নিজের ইচ্ছায় মঙ্গলবার রাতে আমাদের বাড়ীতে আসে।পরের দিন সকালে আমার বোন ও ভাবিদের দিয়ে মেয়েকে তাদের বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। এখন জানতে পারলাম আমার ছেলে তারেকের নামে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দিয়েছে।যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।এবিষয়ে ভুক্তভোগী কিশোরীর চাচা বলেন,আমার ভাতিজী যদিও বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। দেখতে খুব সুন্দর।বিদ্যালয়ের পড়াশোনা করে।প্রায় দুই বছর আগে আমার ভাতিজাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তারেক ও তার পরিবারের লোকজন।বয়স কম থাকায় আমরা বিয়ে দিতে রাজি হয়নি।আর তারেকের স্বভাব চরিত্র ভালো না।সে বখাটে ছেলে।পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারেক আমার ভাতিজীকে অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষণ করেছে।আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।এবিষয়ে স্থানীয় ইউপির সাবেক সদস্য মো. জামাল উদ্দিন বলেন,তারেক নামে ছেলেটি এলাকায় চিহ্নিত ছ্যাঁচোড় হিসেবে পরিচিত।তার স্বভাব চরিত্র ভালো না এলাকাবাসী সবাই জানেন।এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,গত বৃহস্পতিবার প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করে কিশোরীর বাবা।পরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তারেক মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।আজ শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত তারেক মিয়াকে নেত্রকোনা জেলা আদালতে আর ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দির জন্য পাঠানো হয়েছে।এ ছাড়াও মামলাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পলাতক সহযোগী আসামি আলমগীরকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চলছে ।
মন্তব্য