মোঃ জুয়েল রানা কলমাকান্দা(নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ>>>
নেত্রকোণার কলমাকান্দায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ধাক্কায় প্রান গেল বারো বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীর। এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কলমাকান্দা বাজারে ফলের দোকান ঘরে সামনের পাকা সড়কে। নিহত শিশু শিক্ষার্থী অর্ঘ্য রায় হলো-পাশ্ববর্তী জেলার মধ্যনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের গলহা গ্রামের ক্ষীরদিস রায়ের একমাত্র সন্তান ও কলমাকান্দায় মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।নিহতের বাবা বর্তমান কলমাকান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাঁনপুর এলাকায় বসবাস করেন। সে পেশায় একজন খুচরা ওষুধ ব্যবসায়ী।প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে , বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর পরই অর্ঘ্য রায় তার বাবার ওষুধের দোকান কাছে যাওয়ার জন্য নিজ সাইকেলযোগে রওনা হয়। পথিমধ্যে কলমাকান্দা বাজারে চাউল মহাল সংলগ্ন পৌঁছলে সড়কে জ্যাম দেখতে পাই সে। পরে সাইকেল নিয়ে তরকারি মহালের ভিতর দিয়ে ঘুরে ফলের দোকান ঘর সামনে প্রধান পাকা সড়কে ফের জ্যামে আটকা পড়ে সে। তার কাঁদে ছিল একটি স্কুলব্যাগ।এসময় তার পিছনে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সামনে একটি লরি নামে পরিবহনের গাড়ী ছিল। হঠাৎ একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা দিলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লরির পিছনের বডিতে লেগে সাইকেলটি দুমড়ে মুছরে যায়। এতে করে গুরুতর আহত হয় ওই শিশুটি । পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় অর্ঘ্য।এবিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শামীম আরা নিপা বলেন, মুমূর্ষ অবস্থায় শিশু অর্ঘ্যকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।বিকেলে সরেজমিনে হাসপাতালে গেল দেখা যায়, নিহত শিশু অর্ঘ্যকে একনজর দেখার জন্য হাসপাতাল প্রাঙ্গণে নেমেছে মানুষের ঢল। মরদেহ দেখে অনেকেই অশ্রু সিক্ত নয়নে ফিরে যাচ্ছেন। একটু দূরে একমাত্র সন্তান হারানোর ব্যথায় চিৎকার করে কাঁদছেন বাবা -মা । একটু পরপরই শুধু চিৎকার করছেন আর বলছেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার সব শেষ, আমি কারে নিয়ে থাকব। নিহত সন্তানের কথা বিলোপ করে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা । বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা। সন্তানের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর থেকে বাবা-মায়ের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠেছে পরিবেশ। এ ঘটনায় কলমাকান্দা বাজারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। নিহতের মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ওইদিন রাতে আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য