আবদুর রাজ্জাক, কক্সবাজার :আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুক দাবীর অভিযোগে মামলা হয়েছে।চলতি বছরের গত ১৬ জুলাই বান্দরবান-চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেছেন রুমা (ছন্দনাম)নামের এক নারী কর্মী।সে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকার জনৈক এনামুল হকের মেয়ে।মামলায় কক্সবাজার পৌরসভার পূর্ব টেকপাড়ার কালুরদোকান এলাকার বাসিন্দা মাস্টার সৈয়দ আহমদের পুত্র আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)’র উখিয়ার ১৮ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাইট-ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টে কর্মরত আহমদ ইউসুফ জামিল(৩২)কে আসামি করা হয়েছে।বাদীর আইনজীবী দীপঙ্কর দাশ জানিয়েছেন, নির্যাতনের শিকার নারী কর্মী রুমা একই আইএনজিও সংস্থার অধিনস্থ এনরুট ইন্টারন্যাশনালে একই প্রকল্পে কর্মরত। একই সাথে চাকরির সুবাদে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ওই নারী এনজিও কর্মীকে ইউসুফ জামিল বিভিন্ন সময়ে প্রেম নিবেদন করত: এক পর্যায়ে দু’জনের সম্মতিতে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।পরবর্তীতে গত বছরের ২৬মে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ১৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে ওই নারী কর্মীর সাথে আহমদ ইউসুফ জামিলের বিয়ে হয়।বিয়ের পর অর্থাৎ ৩১মে স্বামীর অধিকারে ওই নারী কর্মীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে বাধ্য করে স্বামী ইউসুফ জামিল। বিয়ের কিছুদিন পর স্ত্রীকে স্বামী ইউসুফ জামিলের নিজ গৃহে তুলে নেওয়ার কথা থাকলেও সুচতুর স্বামী বিভিন্ন তালবাহনা করতে থাকে, এক পর্যায়ে বাড়ি নির্মাণের কথা বলে স্ত্রীর কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা আদায় করেন।পরবর্তীতে ঘরে তুলে নিতে আরো ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং দাবীকৃত টাকা না দিলে অন্য নারীকে বিয়ে করবে বলে হুমকি প্রদান করে এনজিও কর্মকর্তা ইউচুফ জামিল।এসব বিষয়ে নির্যাতনের শিকার ওই নারী এনজিও কর্মী আইওএম সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টে একাধিকবার অভিযোগ করলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।পরে নিরুপায় ওই নারী কর্মী বাদী হয়ে বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে আসামি এনজিও সংস্থা আইওএম কর্মকর্তা ইউসুফ জামিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।গত ১৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে যৌতুক দাবীর দায়ে অভিযুক্ত ইউসুফ জামিলকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কক্সবাজার কারগারে প্রেরণ করে।এই ঘটনার পরপরই রোহিঙ্গা ক্যাম্প জুড়ে নারী এনজিও কর্মীদের মাঝে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। ইউসুফ জামিলদের কাছে অন্যান্য নারী কর্মীরা কতটুকু নিরাপদ তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন সুশীল সমাজে। এসব নারী আসক্ত ও যৌতুক লোভী কর্মকর্তাদের অপসারণ করা অতীব জরুরী বলে মনে করেন সচেতন মহল।
মন্তব্য