নিজস্ব প্রতিবেদক >>> আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে নিজ নিজ প্রার্থীকে মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম দফায় বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করলেও দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে মুমুর্ষ অবস্থায় রেখে ৩৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নের তালিকা ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বরিশাল-৩ আসনে (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) দলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জয়নুল আবেদীনের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই বরিশাল-৩ আসনের বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, জয়নুল আবেদীন এলাকায় জনবিচ্ছিন্ন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে তার কোন যোগাযোগ নাই। অনেকে তাকে কোনদিন দেখেও নাই এবং তার সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। এছাড়াও তিনি ৮ম ও ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন। ঐ সময় তিনি বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানারকম বিষোদাগার ও মিথ্যা প্রচারণা করে বক্তব্য প্রদান করেন। ঐ দুই সংসদ নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হতে পারেননি। পাশাপাশি বিএনপির প্রার্থীরাও পরাজয় লাভ করেন। বিএনপি প্রার্থীদের পরাজয়ের মূল কারণ ছিল আম-কলসের প্রার্থী এডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া এলাকায় আসতে পারেন না। এলাকার সাথে তার যোগাযোগ খুবই কম। মনোনয়ন ঘোষণার পর তা বাতিল করে নতুন মনোনয়নের দাবিতে গত ৪ ডিসেম্বর সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দাবি জানান মুলাদী উপজেলা বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। বাবুগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন কর্মসূচি পালিত না হলেও নেতাকর্মীদের মাঝে রয়েছে চাপা ক্ষোভ। তারা বলেন, যে নেতা দুই দুই বার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে প্রার্থীদের পরাজয় ডেকে এনেছেন তাকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় কেউ খুশী হতে পারেননি। এ আসনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, মুলাদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আঃ ছত্তার খান মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তাদের একজনকে মনোনয়ন দিলে বরিশাল-৩ আসনের কোন বিরোধ থাকার কথা ছিল না। তাতে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হতে সামান্যতম বেগ পেতে হতো না। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বিএনপির প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা ও বিজয়ী হতে বড় ধরণের ঝুঁকি থাকতে পারে। এলাকার সাধারণ মানুষ জানান, মুলাদীতে আঃ ছত্তার খানের ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তিনি কখনই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ব্যক্তির স্বার্থে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি বা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কোন কাজ করেননি। অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল আঃ ছত্তার খানই পাবেন এবারের মনোনয়ন। বরিশাল-৩ আসনে বেগম সেলিমা রহমান একজন ভাইটাল প্রার্থী। তিনি দলের স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী। তাকে মনোনয়ন দিলে সহসায়ী আসনটি বিএনপির ঘরে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এ আসনে জামায়াত, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবে। জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু বর্তমানে জেলে থাকলেও নির্বাচনকালীন সময়ে তার জামিন হলে সেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। এছাড়াও সাবেক অতিরিক্ত সচিব হারুন-অর-রশিদ বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে থাকতে পারে। সেই হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের বক্তব্য অনুযায়ী তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করে মনোনয়ন দেয়া উচিত ছিল বলে সর্বমহলে ধারণা।











মন্তব্য