২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • এক্সক্লুসিভ >> রাজশাহী >> শীর্ষ সংবাদ >> সিলেব্রিটি >> সোস্যাল মিডিয়া
  • বাঘায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পিয়ন জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ।
  • বাঘায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পিয়ন জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ।

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    আবুল হাশেম রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি<<>>

    রাজশাহীর বাঘায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পিয়ন জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ও অনিয়মের অভিযোগ করেছে একজন গাভী গরুর ক্ষতি গ্রন্থ খামারী। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় করোনা কালিন সময়ে গাভী গরুর ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের সরকারী প্রনোদনা সাধারণ কৃষক (গরু পালনকারী)দের দেওয়ার নিয়ম থাকলেও অবৈধভাবে কৌশল খাটিয়ে নিজ নামে এবং পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনদের নামে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। এমনই অভিযোগ করেছেন গাভী গরুর ক্ষতিগ্রস্ত খামারি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে লিখিত অভিযোগ করেছেন পৌরসভাধীন গাঁওপাড়া গ্রামের গাভী গরুর ক্ষতিগ্রস্ত খামারি মোঃআঃ বারী বাবুল।অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, বাঘা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে অফিস সহকারী (পিয়ন) পদে কর্মরত জাহাঙ্গীর হোসেন মনিগ্রাম ইউনিয়নের ভানুকর গ্রামের মৃত আমানুল্লাহ ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় করোনা কালিন সময়ে সরকার ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের প্রনোদনা প্রদান করেছেন। এই প্রনোদনা প্রকৃত গাভী পালনকারী বা ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের পাওয়ার কথা। কিন্তু অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অফিসে নিজের প্রভাব ও কৌশল খাটিয়ে অবৈধভাবে পিয়ন জাহাঙ্গীর নিজের নামে এবং পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনদের নামে প্রায় দশ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যাদের কোন প্রকার গরু নেই, তাদের নামে উক্ত টাকা উত্তোলন করেছেন তিনি।

    প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানাযায়, করোনা কালিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। যাদের দশটা বা এর অধিক গাভী ছিলো তাদের বিশ হাজার, ৭/৯ টা থাকলে পনেরো হাজার এবং ছয়টি থাকলে তাদের নয় হাজার টাকা করে একবার প্রদান করেছে সরকার। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস শুধু তালিকা করে পাঠিয়েছে, বাকি যাচায় বাছাই সহ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ) ও ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে মন্ত্রণালয়। তবে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে কর্মরত কেউ এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেনা।

    অনুসন্ধানে জানা যায়, মনিগ্রাম ইউনিয়ন এর মীরগঞ্জ ও ভানুকর গ্রামে বাসিন্দা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রনোদনা তালিকায় ৭৮ নং সিরিয়ালে উক্ত দপ্তরের অফিস সহকারী(পিয়ন) জাহাঙ্গীর হোসেন ( একাউন্ট নং ৪৬১২০০২০ ৮২৫৭৩), ৮১ নং সিরিয়ালে তার মেয়ে আন্তু জান্নাতবান্না , ৪৩৩ নং সিরিয়ালে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী লিমা খাতুন ( যে কোন দিনই গাভী পালন করেনি), ৪৩৯ নং এ শ্যালক শাহিন আলী ( গাভী নেই) ,৪৪১ নং এ ফুপা শ্বশুর আব্দুল হাকিম, ৪৪২ নং এ বন্ধু তোসলিম উদ্দিন, ১৫১ নং এ ভাবি নার্গিস পারভীন, ৪৪৯ নং এ শ্যালক শাহিন আলীর স্ত্রী নিলুফা ( একই বাড়িতে দুইটা) ৪৪৩ নং এ চাচাতো ভাই রেজাউল করিম, ৪৪৫ নং এ ফুপাতো ভাই হাফিজুল ইসলাম এর নাম ও মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়। তবে তারা কতো টাকা করে প্রনোদনা পাবেন এই বিষয়ে তাদের নেই কোন ধারণা, তাদের ভাষ্যমতে সব জাহাঙ্গীর জানেন। জাহাঙ্গীরই আমাদের নাম তালিকায় দিয়েছে।উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীর হোসেন একজন অফিস সহকারী পদে কর্মরত। কিন্তু তিনি একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাছপাড়া কেন্দ্রের নির্বাচনী ডিউটি ( পুলিং অফিসার ) করতে দেখাগেছে।এদিকে শাহিন আলীর বাড়িতে অনুসন্ধানে সরোজমিনে দেখা যায় শাহিন আলী ও তার স্ত্রী নিলুফা দুজনেই তালিকা ভুক্ত। তবে শাহিন জানায়, প্রাণিসম্পদ অফিসের পিয়ন জাহাঙ্গীর হোসেন আমার দুলাভাই, তিনি আমাদের নাম তালিকা ভুক্ত করেছে। আমি একবার ৮৫০০ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু তার স্ত্রী নিলুফার নাম প্রনোদনা তালিকায় থাকলেও সে টাকা পাইনি।আব্দুল হাকিমের ছেলে বলেন, এর আগে প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে এসে ছবি উঠায় নিয়ে গেছে, কিন্তু এখনো কোন সহায়তা বা টাকা পাননি।রেজাউল করিম বলেন, অনেকদিন আগে একবার ১০হাজার টাকা পেয়েছেন।এ বিষয়ে অভিযোগকারী মোঃ আঃ বারী বলেন, আমি একজন গাভী গরুর ক্ষতি গ্রন্থ খামারী। অথচ আমি কোন প্রকার সরকারী প্রনোদনা পাই নাই । কিন্তু জাহাঙ্গীর হোসেন একজন অফিসের পিয়ন হয়ে এতবড় দুর্নীতি করে নিজের নামে ও পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন সহ ১০ জনের নামে সরকারি প্রনোদনা গ্রহণ করেছে। যা কোন ভাবেই আমাদের বোধগম্য নহে।জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টা অস্বীকার করে বলেন, করোনা কালিন সময়ে এই তালিকা আমরা করিনাই। তৎকালীন সময়ে এলজিবিডি প্রকল্পের দ্বায়িত্বে থাকা ইয়োলো আমিনুল ইসলাম ও ভিএন রোকনুজ্জামান স্যারেরা তালিকা ও যাচাই-বাছাই করেছেন। এতে আমার কোন হাত নেই।এদিকে সরকারি প্রণোদনার টাকায় অনিয়মকারী পিয়ন জাহাঙ্গীর ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে প্রণোদনা না পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা।বাঘা উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা (ভিএস) ডাঃ মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রণোদনার সময় আমি অন্যত্র দায়িত্বে ছিলাম, এখানে এসেছি সবে মাত্র। তবে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সরকার তিন স্তরে প্রণোদনা প্রদান করেছে। এদের মধ্যে যাদের দশটা বা এর অধিক গাভী ছিলো তাদের বিশ হাজার, ৭-৯ টা থাকলে পনেরো হাজার এবং ছয়টি থাকলে তাদের নয় হাজার টাকা করে একবার প্রদান করেছে সরকার। তবে প্রাণী সম্পদ অফিসে কর্মরত কেউ এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেনা।

    মন্তব্য

    <img class=”alignnone size-full wp-image-29676″ src=”https://bdsangbadpratidin.com/wp-content/uploads/2024/05/IMG_20240503_224849-2.jpg” alt=”” width=”100%” height=”auto” />

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page