পেকুয়া প্রতিনিধি >>> ধান চাষে খরচ ও সময় বাঁচিয়ে ফলন বাড়াবে সমলয় পদ্ধতি। প্রচলিত পদ্ধতি বাদ দিয়ে একই জাতের বীজ দিয়ে ট্রেতে বীজতলা তৈরি, রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ এবং কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে কর্তন করার পদ্ধতিই হচ্ছে ‘সমলয়’। ধান চাষে শ্রমিক সংকট নিরসন, উৎপাদনে অতিরিক্ত খরচ ও সময় বাঁচায় এ পদ্ধতি। পদ্ধতিটি নতুন হলেও দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে।কক্সবাজারের পেকুয়ায় মঙ্গলবার (১৪জানুয়ারী) সকাল ১০ টায় উপজেলা মিলনায়তনে ৫০ একর জমিতে বোরো সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের শুভ উদ্বোধন অনুষ্টান ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রাসেল এর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা,সকল উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং কৃষক কৃষাণীরা।পেকুয়া উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি পূর্ণবাসন কর্মসূচির আওতায় পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের হাজিরঘোনা গ্রামে ৫০ একর জমিতে বোরো চাষ সমলয় পদ্ধতিতে ব্রি ৭৪ ধানের চাষাবাদের শুভ উদ্বোধন করা হয়। জমির উপরিভাগের মাটির সাথে জৈব সার সংমিশ্রণে প্লাস্টিকের ট্রেতে ধান বীজ বপন করে ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে এই বীজ চারা রোপণের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠে। এতে করে বাড়তি সারের প্রয়োজন হয় না। ট্রেতে চারা উৎপাদনে জমির পরিমাণ কম লাগে। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র দিয়ে চারা একই গভীরতায় সমানভাবে লাগানো যায়। ফলে ফলনও বৃদ্ধি পায়। একসঙ্গে চারা রোপণ করায় ধানও একসঙ্গে পাকে এবং তা একসঙ্গে কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে কর্তন করে কৃষকেরা ফসল ঘরে তুলতে পারে।বক্তব্যে পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রাসেল বলেন, পদ্ধতিটি কৃষকের জন্য নতুন হলেও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এ ব্যাপারে কৃষদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এতে শ্রমিক সংকট নিরসন হওয়ার পাশাপাশি সময় ও খরচ এবং রোগবালাইও কম হয়। তিনি আরো বলেন,শুরুতে এই চাষে কৃষকদের আগ্রহ কম থাকলেও পরবর্তীতে সমলয় পদ্ধতি নিয়ে তাদের সাথে বিস্তর আলোচনার পর তারা আগ্রহী হয়। এখন স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে।প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কৃষি কাজে যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করতে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা তৈরি করেহ এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী করতে পারলে কৃষি খাতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে।
মন্তব্য