আনোয়ার হোসেন-কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধঃ>>>
জ্যৈষ্ঠের প্রখর রোদ।তীব্র গরম।তপ্ত বাতাস।চামড়া পোড়া গন্ধ।সব কিছু মিলেই যেন ভুগিয়ে তুলেছে প্রাণ প্রকৃতিকে।এমন প্রকৃতিতে যারপনা পচা গরমে স্বস্তির নিশ্বাস মিলছে না কোথাও।এতে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে সবকিছু।তবে সব ক্লান্তি ভুলে একদণ্ড শান্তির পরশ নিয়ে হাজির হয়েছে সোনালু।সোনালু ফুল প্রকৃতিতে জুড়ে কাচা সোনা ঝরা রঙ ও সুভাস যেন সতেজ করে দিচ্ছে মানুষের মন। বলা হচ্ছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে প্রাণ প্রকৃতিতে ফোটা ঝলমল আলোয় উদ্ভাসিত সোনালু ফুলের কথা।সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলার পুটিমারী পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার নুরু স্যানেটারি কারখানায় গাছভর্তি হালকা সবুজাভ পাতা আর মখমলে হলুদের মিশেল।এই যেন রাজযোটক(যা বর-কনের শুভসূচক অতি প্রশস্ত মিলন)!থোকা থোকা ফুল নিয়ে ঝাড়বাতির মতো ঝুলে আছে শাখায় শাখায়। অথবা কোন তরুণীর কর্ণে জড়িয়ে থাকা হলুদ গুচ্ছ। তাই মনে আসে নজরুলের সেই গানের কলি,‘কর্ণে দোলাবো তৃতীয়া তিথি চৈতী চাঁদের দুল’। গনগনে রৌদ্রতাপেও এমন প্রশান্ত সৌরভ নিয়ে আসে সোনা বরণ সোনালু। সূর্যের প্রখরতায় যখন জ্বলছে ধরণী,তখনি একরাশ হলুদের স্নিগ্ধতা নিয়ে ধরায় এসেছে এই সোনালু ফুল।গ্রীষ্মের গরমাগরম প্রকৃতি।খরতাপে পুড়ছে পুরো উপজেলা।কিন্তু উল্টোটি হচ্ছে সোনালুর বেলায়।প্রখর রোদে ছাই ভস্ম হওয়া দূরে থাক,সোনালুকে আরও কাঁচা সোনা রঙের মনে হচ্ছে।থোকা থোকা ফুলে আপনা আপনি চোখ চলে যায়। অনেক দূর থেকে নজর কাড়ে।তখন ভোতা অনুভূতিগুলো জাগ্রত করে তুলে।এসময় ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ পথিক নিজের অজান্তেই গেয়ে ওঠেন- এ কী সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে…। উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার আজিজার রহমান জানান,সোনালু ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া ফিস্টুলা।এ ফুলের আদিনিবাস হিমালয় অঞ্চল ধরা হলেও বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান ও মায়ানমার অঞ্চল জুড়ে রয়েছে এর বিস্তৃতি।বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এবং সড়ক-মহাসড়ক,বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান্ বন জঙ্গলে, গ্রামীণ রাস্তার ধারে ছোট বড় সোনালু গাছ দেখা যায়। তবে বাংলাদেশে অঞ্চল ভেদে নামেও রয়েছে ভিন্নতা। সোনালু গাছের পাতা ও বাকল ভেষজগুণ সমৃদ্ধ,যা ডায়রিয়া ও বহুমূত্র রোগে ব্যবহৃত হয়। উঁচু ভূমি সোনালু গাছ উৎপাদনের জন্য উপযোগী স্থান।সোনালু ফুল এ উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেকগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই প্রকৃতির ভারসাম্য ও সৌন্দর্য ধরে রাখতে পথের ধারে বাসা-বাড়ির আনাচে কানাচে বেশি করে সৌন্দর্য বর্ধক বৃক্ষরোপণ করতে হবে।এতে যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি অক্সিজেনের অভাবও পূরণ হবে।
মন্তব্য