
মোঃ নাহিদ উজ্জামান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি>>>>
আমার এলাকার কোন মানুষ যেন রাস্তাঘাটে চলাচল করতে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার না হয়। ভালভাবে গন্তব্যস্থানে পৌঁছিতে পারে। সেই জন্য আমি ১০/১২বছর যাবত নিজের উর্পাজিত অর্থ দিয়ে এলাকার যেখানে ভাঙ্গা রাস্তা দেখতে পাই, সেখানেই মেরামতের কাজ শুরু করি। যতদিন বাঁচবো ততদিনই আমি জনকল্যানমুলক একাজটি করবো ইনশাল্লাহ। কথাগুলো বললেন জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের পোড়াডিহি গ্রামের মৃত সাজেমান হকের ছেলে দিন মজুর ও ভ্যানচালক মিস্টার আলি( ৬০)। বুধবার সকালে মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল চৌকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা মেরামতের সময় তার সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি জানান আমি জনগণের কল্যাণে মনাকষার গোপালপুর, কুঠির ঘাট,পারচৌকা,রানীনগর, হাঙ্গামী,হাউসনগর,মনাকষা,বিনোদপুরের ক্যাপড়াটোলা, কালিগঞ্জ, বিশ্বনাথপুর, শ্যামপুরের চামা বাজার, দুর্লভপুরের কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গা রাস্তা মেরামত করে যাতায়াতে জনগণের ভোগান্তির শিকার হতে রক্ষা করেছি। এ কাজের জন্য আমি কারো নিকট হতে কোন টাকা পয়সা নিই না। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করি,তা থেকে সামান্য কিছু সংসারে খরচ করি।বাকী টাকা সঞ্চয় করি। কয়েকদিনের টাকা সঞ্চয় করে সেই টাকা দিয়ে ইট, বালু ও সিমেন্ট কিনে রাস্তা মেরামত করি।এভাবেই আমি রাস্তা মেরামতের কাজ করি। যেখানে আমি খুব আনন্দ পাই।কারণ আমার একাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ির গৃহবধু মৌসুমী বেগম জানান মিস্টার অত্যন্ত গরীব মানুষ। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি ভ্যান চালিয়ে উপার্জিত টাকা সংসারে খরচ না করে জনগণের কল্যাণে রাস্তা মেরামত করে। আমাদের বাড়ির সামনে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হযে পড়েছিল। মিস্টার আলি সেটি মেরামত করে যাতায়াতের উপযোগী করে জনভোগান্তি দুর করেছে। মিস্টার আলির স্ত্রী শাহাজাদী বলেন অভাবের সংসারে আমার স্বামী ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করে তা সবই রাস্তা মেরামতের কাজে খরচ করে দেই। বার বার অনুরোধ করে সে আমার কথা শুনে না। তাই এখন আর কিছু বলিনা। তার পুত্রবধূ হাসিনা বেগম জানান আমার শুশুর কিস্তির ১২ হাজার তুলে, বাড়ি করার জন্য কেনা ইট, বালু সিমেন্ট, এমনকি বাড়ি একদিকের ওয়াল ভেঙ্গে সে ইট গুলোও নিয়ে গিয়ে রাস্তা মেরামত করেছে। তার কাজের জন্য আমাদেরে বাড়ির কাজে বন্ধ আছে।তার বাড়ির আশে পাশের সাইফুল ইসলাম,মোত্তালেব হোসেন,কাজিরুল ইসলাম,কদমাবানু বেগম, নার্গিস বেগম,জমিলা বেগম সহ প্রায ২০/২৫জন নারীপুরুষ একই ধরনের কথা বলেন। রাস্তায় চলাচলকারী,রিক্সা, ভ্যান, অটো, মাহেন্দ্র, সিএনজি সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের চালক সেলিম,হাবলূ, ধুলু,সহ ১৫-২০জন চালক জানান, মনাকষা হতে বাঘরালী হয়ে কালিগঞ্জ – জমিনটোলা পর্যন্ত এ রাস্তা ভেঙ্গে চলাচলের অযোগ্য হয়েছিল । একমাত্র মিস্টা আলি তা নিজের টাকা দিয়ে রাস্তা মেরামত করায় আমরা ঠিকমত যানবাহন চালাতে পারছি।তবে এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মির্জা শাহাদাৎ হোসেনের মন্তব্য নিতে গিয়ে মন্তব্য না দিয়ে দুজন মিডিয়া কর্মী চরমভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন ভাইরাল হবার জন্য কি ১০ বছর থেকে এরকম কাজ করে আসছেন আপনারা কে ভিতরে ঢোকার পারমিশন কে দিলো এখান থেকে বের হয়ে জান কোন কথা নেই আমি কোন সাংবাদিক কে বুঝি না
এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত বলেন মিস্টার গরীর হলেও তার মধ্যে দেশপ্রেম আছে। আমাদের উচিত তাকে উৎসাহ দেয়া। আমি তাকে উপজেলা পরিষদ থেকে পুরস্কৃত করবো ইনশাল্লাহ।