সকেল হোসেন,আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) >>> জ্ঞাত আয়–বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা মামলায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার কানুপুর গ্রামে ৩ বিঘা ২৫ শতক আবাদি জমির দখল নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।আদালতের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা খানম বৈশাখী রিসিভার হিসেবে আবাদি জমির দখল বুঝে নেন।দুদকের সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের তদন্তে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় কর্মকর্তা ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয়–বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০২৩ সালে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক নওশাদ আলী বাদী হয়ে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।মামলায় উল্লেখ করা হয়, ফজলুর রহমান চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় ১৯ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৬ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৮০ লাখ ১৫ হাজার ২৬ টাকার অস্থাবর সম্পদ জ্ঞাত আয়–বহির্ভূতভাবে অর্জন করেন।আদালত তাঁর হেফাজতে থাকা জয়পুরহাট শহরের সরদারপাড়ার ৬ শতাংশের একটি বাড়ি এবং আক্কেলপুরের কানুপুর গ্রামের ৩ বিঘা ২৫ শতক আবাদি জমি ক্রোকের নির্দেশ দেন। সম্পদগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের আদেশে তফসিলভুক্ত কানুপুরের জমিগুলো দখলে নেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন দুদকের উপপরিচালক মেহেবুবা খাতুন। তিনি বলেন, “আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জমিগুলো রিসিভার হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুঝে নিয়েছেন। এ মামলার চার্জশিট প্রস্তুত করে ইতোমধ্যে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।”অনুমোদনের পর আদালতে চার্জশীর্ট দাখিল করা হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা খানম বৈশাখী বলেন, ফজলুর রহমানের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আদালত আমাকে রিসিভার নিয়োগ করেন। আদালতের নির্দেশনায় কানুপুর মাঠের জমির দখল বুঝে নিয়ে লাল নিশান পুঁতে দেওয়া হয়েছে।অভিযুক্ত ফজলুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার সব সম্পদ বৈধ আয় থেকে অর্জিত। আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ভুলক্রমে কিছু জমি উল্লেখ হয়নি।” তিনি দাবি করেন, ভাইদের জমিজমা নিয়ে পুরোনো দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে বড় ভাই শফিউল আলম তাঁর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করেছেন।তবে বড় ভাই শফিউল আলম এ অভিযোগ নাকচ করে বলেন, “জমিজমা নিয়ে আমাদের দ্বন্দ্ব আছে—এটি সত্য। কিন্তু দুদকে আমরা কেউ অভিযোগ করিনি। দুদকের তদন্তে ছোট ভাইয়ের জ্ঞাত আয়–বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে—এ তথ্য আমি পরে জেনেছি।”

