
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি মোঃ সোহেল রানা >>>রবিবার (১১ মে) বান্দরবান প্রেসক্লাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, বান্দরবান জেলা শাখার উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আসা বিভিন্ন নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম এবং তাদের স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।বক্তারা জানান, ইউপিডিএফের নেতা মাইকেল চাকমা সম্প্রতি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা চলাকালে তিন পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন, যা দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলে তারা মনে করেন।আলোচনায় অংশ নেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, বান্দরবান জেলা শাখার সভাপতি আসিফ ইকবাল, কেন্দ্রীয় নেতা জিকো ত্রিপুরা, সুনয়ন চাকমা ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন দিলে অশান্তি ও রক্তপাত বাড়বে, দেশের অখণ্ডতা ক্ষুণ্ন হবে এবং ইতিহাসে বহুবার প্রমাণ হয়েছে যে এই ধরনের দাবিগুলি দেশ-বিরোধী।বক্তারা আরও বলেন, ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মতো সংগঠনগুলি অতীতে হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি, গুম ও অন্যান্য সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এই সংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক স্বীকৃতি দিলে দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি বিঘ্নিত হবে।তারা দাবি জানান, এসব সংগঠনের সকল কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ এবং নেতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি, পার্বত্য অঞ্চলে সেনা ও পুলিশ ক্যাম্প বৃদ্ধি, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় । সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ বান্দরবান পার্বত্য জেলার সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মাহমুদ বলেন, ১৯০০ সালের ব্রিটিশ শাসন বিধি বাতিল না হওয়ায় বাঙালির মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। দেশের স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলায় অনেক সেনা ও সাধারণ জনগণ প্রাণ হারিয়েছেন।তারা আরও জানায়, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হলে বৈষম্যহীন ও সমতা ভিত্তিক উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ।বক্তারা বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ ঝুঁকি নিয়ে জনমত গড়ে তুলতে সচেতনতা ও প্রতিবাদী কার্যক্রম জোরদার করা হয়।সংগঠনটি সরকারের প্রতি পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে:১. ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কেএনএফসহ সকল সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা।২. দেশদ্রোহী নেতাদের (মাইকেল চাকমা, সন্তু লারমা, দেবাশীষ রায়) গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনা।৩. পার্বত্য এলাকায় সেনা ও পুলিশ ক্যাম্প বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা।৪. সীমান্তে বিজিবির নতুন বিওপি স্থাপন করে অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ।৫. ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসন বিধি বাতিল করে পাহাড়ি-বাঙালি বৈষম্যহীন সম্প্রীতির পরিবেশ নিশ্চিত করা।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি জমির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক তানিবির হোসেন ইমন, সুয়ালক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সুমনসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।