নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নানা অনিয়ম ও দূর্নীতিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। “বানিজ্য সংগঠন বিধিমালা-১৯৯৪” কে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে লিপ্ত বর্তমান পকেট কমিটি’র নেতারা। আইন অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা, নানাবিধ সমস্যা সমাধানসহ শিল্প সংক্রান্ত নীতি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি দেশে বিদেশে বিভিন্ন সভা সেমিনারে অংশ গ্রহণসহ ব্যবসায়ীদের জন্য প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে এবং ব্যবসা উন্নয়নে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করবে। কিন্তু রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এসবের ধারধারেনা।ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিয়ম মাফিকভাবে প্রতি দুই বছর অন্তর নির্বাচন হলেও সাধারণ ব্যবসায়ীরা কখনও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না, ভোট দেয়াতো দূরের কথা। প্রহসনের নির্বাচনে নির্ধারিত ব্যক্তিরাই বার বার হন নির্বাচিত। ২০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদে প্রতিবছর ২০ জন নমিনেশন উত্তোলন করেন যদিও বা দু’একজন অতিরিক্ত তুলে থাকেন সেটিও একটি খেলা কারণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তাঁরা তাঁদের নমিনেশন প্রত্যাহার করেন। এর ফল শ্রুতিতে দেখা যায় প্রতিবারই পূর্বের ব্যক্তিই নির্বাচিত হচ্ছেন. কেউ কেউ তো আজীবণের জন্য পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হয়ে গেছেন। প্রতিবার নির্বাচনে নমিনেশনের সময় আসলেই দেখা যায় বহিরাগত কিছু ব্যক্তি চেম্বার ঘিরে রাখে যাতে নির্ধারিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ নমিনেশন তুলতে না পারে। এ সকল বহিরাগতদের চেম্বারের ফান্ড হতে বিপুল আপ্যায়ন এবং সেবা প্রদান করা হয়। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি, যার প্রমান নির্বাচন কালিন খরচের হিসাব এবং সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া যাবে। এবার নির্বাচনেও (২০২৩-২৬) যারা নমিনেশন তুলতে গেছেন তাদের যেমন বাধা দেওয়া হয়েছে তেমনি তাঁদের নানা ধরণের অপ্রয়োজনীয় কাগজ এবং মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিদায় করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি ব্যবসায়ী মহলে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।নাম প্রকাশ না করা শর্তে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচন বোর্ডে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা থাকলেও অজানা এক কারণে ডিসি অফিসের মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। ডিসি অফিসের কোনো প্রতিনিধি কখনই চেম্বার ভবনে আসেন না, এমনকি কখনই ভোটারদের বৈধতা যাচাই করেন না। সদস্য হবার সুনির্দিষ্ট নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। চেম্বারের আদিকাল থেকেই সদস্যপদ নবায়নের ক্ষেত্রে বিলম্ব ফি প্রদানের রয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম। বিলম্ব ফি যেমন সদস্য ঝড়ে যাওয়া হ্রাসে সাহায্য করে তেমনি চেম্বারের এটি একটি বাড়তি আয়, কিন্তু কিছু অযোগ্য সদস্য অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে চেম্বারকে বিতর্কিত করা হয় বিলম্ব ফি হ্রাস করে।
রাজশাহীর জনগণ তথা রাজশাহীর ব্যবসায়ী মহলের কাছে“রাজশাহী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা” ছিল দেশী বিদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা উন্নয়নের একটি সুযোগ, যা অজানা কারণে বন্ধ করে উদ্যোক্তার নামে নারী সদস্যদের নিয়ে মেলা করার ব্যবসায় মেতে উঠেছেন চিহ্নিত কিছু বোর্ড সদস্য। রাজশাহীতে মহিলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি থাকলেও রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি নারীদের নিয়ে ব্যস্ত যাদের যোগ্যতা না থাকলেও অজানা কারণে তাদের সদস্য করার জন্য দেয়া হচ্ছে নানান সুবিধা ফলে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে চরম অসন্তোষ।অনেক তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল ব্যবসায়ী চেম্বার নেতৃত্বে আগ্রহী হলেও আগে থেকেই ব্যক্তি নির্ধারিত থাকায় নির্বাচনে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আসতে পারছেনা নেতৃত্বে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চেম্বার সচিবালয় কর্মকর্তা জানান, প্রতি বোর্ড সদস্যের নিকট হতে বিপুল পরিমান টাকা নির্বাচিত করার লক্ষে নেয়া হয় যা চেম্বার ফান্ডে কখনই আসেনা। একজন নির্ধারিত বোর্ড সদস্য যিনি নিজ একাউন্টে সেই টাকা জমা রাখেন যার কোন হিসাব থাকেনা, তাঁর আঙ্গুলি হেলনে চলে নানা অপকর্ম। অপকর্ম ঢাঁকতে এবার নতুন একটি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, “ডোনেশনফান্ড” নামে একটি একাউন্ট খুলে সেখানে নির্দিষ্ট এমাউন্টের টাকা রাখা হচ্ছে, তবে চেম্বারের এমন আরো একাউন্ট থাকলেও অডিটে সব একাউন্ট শো করা হয় না।ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংশ্লিষ্ঠতা দেখা যায়“ বার্ষিক সাধারণ সভায়” কিন্তু সেটিকেও ছেলে খেলায় পরিনত করা হয়েছে। এবারের সাধারণ সভা নিয়ম তান্ত্রিক ভাবে হয়নি, সভার কোরাম পূরণ না হলে এক ঘন্টা বিরতি দেয়ার বিধান থাকলেও তা না করে তড়িঘড়ি করে সভা সমাপ্ত করা হয়, যা সভার ছবি দেখলে সহজেই অনুমেয়। বোর্ডের একজন প্রভাবশালী সদস্যের খাবার হোটেল থাকার কারণে যেখানে প্রতি বছর ২৫০ সদস্যই উপস্থিত হন না, সেখানে ৬০০ সদস্যের জন্য প্যাকেট করা হয়। অডিট রিপোর্ট একটু খুটিয়ে দেখলেই এসব অনিয়মের ধারণা পাওয়া যাবে, গত বছর এজিএম এ যতগুলি গিফট কেনা হয়েছিল তা বিতরণ দেখানো হয়েছিল কিন্তু মজার বিষয় হলো এ বছর একই গিফটই দেয়া হয়েছে কিন্তু এ বছর ঐ গিফট কেনা হয়নি, এটি কিভাবে সম্ভব?আসলে বোর্ড অব ডাইরেক্টর গণ চেম্বারে আসেন অফিস চালাতে, বিগত বছর গুলির বোর্ড সভা গুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাওয়া যায় যে, একটি আলোচনা ও গঠন মূলক নয়, সকলেই ব্যস্ত সচিবালয় স্টাফদের নিয়ে, তাঁদের বেতন কর্তন, বেতন স্থগিত এবং তাদেরকে নানা রকম হয়রানিতে ফেলাই যেন মুখ্য কাজ। চেম্বারের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং কর্মচারিদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার সীমাহিন, চেম্বার যেন এক খিস্তি খেউরের আখড়া। তাদের দূর্ব্যবহারের হাত থেকে রেহাই পায়নি মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারিরাও। অভাবের তাড়না এবং উর্দ্ধতনের দুর্ব্যবহারে হতাশায় দু জন কর্মী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এবং একজন হৃদরোগে আক্রান্ত হলে চাকুরি ছেড়ে দেন এবং শারীরিক অসুস্থতার পরও অসহযোগিতার জন্য চাকুরি ছাড়েন একজন। দূর্ব্যবহার করে আরেক কর্মীকে চাকুরিচ্যুত করা হলে তিনি শ্রম আদালতে ইতি মধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেন যার অভিযোগ সনাক্তকরণ নম্বর

