
সাইফুল ইসলাম বাবু বিশেষ প্রতিনিধি।
গতরাত থেকে চলা অবিরাম ভারী বর্ষণে জৈন্তাপুরে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চারটি টিনের তৈরি বাড়ী পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্হ হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটে নি।শনিবার (৭ই অক্টোবর) ভোর ৪:৩০ মিনিটের সময় উপজেলার ৬ নং চিকনাগোল ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ৬ নং ওয়ার্ডের পূর্ব সাতজনি গ্রামে এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।সেখানকার স্হানীয় ইউ পি সদস্য মো আব্দুল ওয়াদুদ জানান, তার বাড়ীর সন্নিকটে ভোরে হঠাৎ ভারী বর্ষণ চলাকালে কোলেন পাত্রের ঘরের উপর পাহাড় ধসে পড়ে। কিছুক্ষণ পরে অল্প কিছু দূরে প্রতিবেশী আজির উদ্দিনের বাড়ীর পাশেও টিলা মাটি ধসে পড়ে।তবে আজির উদ্দিনের বাড়ী অক্ষত আছে।এরপর কিছুদূরে একই সাথে তিনটি বাড়ীর উপরে পাহাড়ের মাটি ধসে বাড়ীগুলো পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসময় মাটি ধসের কিছু পূর্বে ঘরে থাকা পরিবারের সদস্যরা দ্রূত বেরিয়ে আসলে কোন হতাহত বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটনা ঘটেনি।ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি বাড়ীর মালিক স্হানীয় পাত্র সম্প্রদায়ের অধিবাসী। তারা হলেন লেদই পাত্র,সুদেন পাত্র ও রণ পাত্র। তারা পেশায় দিনমজুর এবং অন্যের জমিতে ঘর বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলো। বর্তমানে তাদের থাকার ঘর পুরোপুরি বসবাসের অনুপোযোগি বলে জানিয়েছেন স্হানীয় ইউ পি সদস্য মো আব্দুল ওয়াদুদ।এদিকে পাহাড়ধসের খবরে দূপুরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সার্বিক খোঁজ খবর নেন এবং তাদের খাদ্য সহায়তা বাবদ তাৎক্ষণিক ১০ হাজার টাকা করে প্রতি পরিবারকে সহায়তা প্রদান করেন। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পূনর্বাসনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। এছাড়াও পাহাড়ের নিকট ঝুঁকি পূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে স্হানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে মাইকিং করে জানানো হয়েছে।কারণ আগামী দুইদিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।এদিকে শনিবার বিকাল ৩ টায় উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।জুম মিটিং এ টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে পাহাড় ধ্বংস হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ও সচেতন করতে মাইকিং করার জন্য সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হচ্ছে, তাই বজ্রপাত থেকে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়।এছাড়াও জুম মিটিং এ জানানো হয়, জৈন্তাপুরে পাহাড়ি ঢলে যদি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তবে স্থানীয় লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সমূহ প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।