
আব্দুল্লাহ আল মারুফ>>>
১৬ বছর আগে একদিন সকালে বড় বোনের সাথে ঝগড়া করে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই মর্জিনা আক্তার পাপড়ি ৷উঠে পড়ে পাশের রেলস্টেশনের একটি ট্রেনে ৷১৬ বছর আগে একদিন সকালে বড় বোনের সাথে ঝগড়া করে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই মর্জিনা আক্তার পাপড়ি ৷কিছু বুঝে ওঠার আগে পাপড়ি কে নিয়ে ছেড়ে দেয় ট্রেনটি ৷এভাবে আনুমানিক ১২ বছর বয়সে পরিবার থেকে হারিয়ে যায় পাপড়ি ৷কখনো ভাবেনি দীর্ঘ ষোল বছর পর আবার সে খুঁজে পাবে পরিবারকে৷এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ বসবাস করা আমেরিকার এক নাগরিকের জন্য ৷
সোমবার ৩১ শে জুলাই নগরের আগ্রাবাদ হোটেলের ১৬ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া চট্টগ্রামের কাল সূরা এলাকার বাবুল মিয়া ও চেমন আর বেগম দম্পতির চতুর্থ মাইয়া পাপড়ি তুলে দেওয়া হয় তার পরিবারের কাছে ৷এই উপলক্ষে একটি আনন্দ উৎসবের আয়োজন করে বিজয় ইন্টারন্যাশনাল ও সমাজসেবা অধিদপ্ত ৷এতদিন পর পরিবারকে খুঁজে পাওয়া আনন্দে আত্মহারা পাপড়ি বলেন,বোনের সাথে রাগ করে চলে যাই ৷বুঝতে পারিনি এভাবে সবার থেকে হারিয়ে যাব৷যখন সেফহোমে ছিলাম নিজেকে খুব অসহায় মনে হতো৷আমি জানিনা কে আমি,কোথা থেকে এসেছি৷একদিন বার্লিন পরিবারের সাথে পরিচয় হয় ৷তাদের ৫ সন্তানের মত আমাকেও তারা সাত বছর পালন করেন ৷পাপড়ি আরো বলেন ,আমি নিজেই জয়া মায়ের কারণে আজ স্বাবলম্বী হয়েছি৷এছাড়া আমার বাবা-মা ভাই বোন সবাইকে আবার দেখতে পেয়েছি ৷বড় হয়ে জয়া ও জ্যাকব বার্লিনের মত মানবিক মানুষ হতে চান বলে জানান তিনি৷১৬ বছর পর মেয়েকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া চেমন আরা বেগম বলেন, মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে প্রায় কান্না করতাম৷ ভেবেছিলাম এই জীবনে হয়তো মেয়ের সাথে আর দেখা হবে না ৷মেয়েকে খুঁজে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে ৷বিজয় ইন্টারন্যাশনালের সিইও জয়া বার্লিন বলেন,আমি আগে একটি এনজিওতে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করতাম ৷বাংলাদেশ মূলত আসি এখানের এতিম অসহায় সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করতে৷ এসেই ফরিদপুরের সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও নির্বাচন কেন্দ্রে যোগাযোগ করি ৷২০১৬ সালে যেখানেই পাপড়ি সহ অনেকগুলোমেয়েদের সাথে পরিচয় হয় । বার্লিন বলেন,পাপড়ির কষ্টগুলো আমাকে বেশি স্পর্শ করে৷আমি আদালতের মাধ্যমে তাকে আমার প্রতিষ্ঠান বিজয় ইন্টারন্যাশনালে নিয়ে যাই৷পাপড়ির সাথে আমার একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়৷পাপড়ি থেকে জানার চেষ্টা করি তার ঠিকানা lতার যা মনে ছিল তা সে বলে৷তারপর তাকে নিয়ে চট্টগ্রাম আসি ৷এভাবে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার পরিবারের সন্ধান পায় ৷সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন ফরিদপুর সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পূর্ণবাসন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এসএম সুজাউদ্দিন রাশেদ জানান,২০১২ সালে একদিন সকালে রাস্তার ধারে বসে কান্না করছিল মেয়েটি তাকে দেখে কিছু পথচারী কি হয়েছে জানতে চাইলেও কিছু বলতে পারেনি সে ৷পরে তা পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।এরপর আদালতের মাধ্যমে তার স্থান হয় ফরিদপুর সেফহোমে ৷সেখানে দুই বছর থাকার পর উন্নত জীবনের জন্য তাকে পাঠানো হয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পূর্ণবাসন কেন্দ্রে ৷সেখানেই তার সাথে পরিচয় আমেরিকান এক নাগরিক জয়া বার্লিন জ্যাকব বার্লিন দম্পতির সাথে৷পাপড়িকে আদালতের মাধ্যমে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যায় ৷