আর এ লায়ন সরকার নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি>>> একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে নৌকার এজেন্ট মিলন মিয়া হত্যায় সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও তার ভাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম মেল্লাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।নিহত মিলনের স্ত্রী পারভীন বেগম বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় এ মামলা করেন।মামলার অপর আসামিরা হলেন- আজিজুল হক,বকুল মিয়া,আজিজুল, মো. সোহেল মিয়া,পিয়াল হায়দার ও আমজাদ।মামলায় সিরাজুল ইসলাম মোল্লাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তৎকালীন শিবপুর মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ থাকাকালীন সময় মামলারকে রুজু করা হয়।মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়,৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ সনে ভোটের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও তার ভাই তাজুল মোল্লাসহ তাদের লোকজন কুন্দারপাড়া কেন্দ্রে প্রবেশ করে জোরপূর্বক সিংহ প্রতীকে সিল মারার চেষ্টা করেন।এ সময় নৌকার এজেন্ট মিলন মিয়া বাধা দিলে তাকে টেনেহিঁচড়ে কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যায়।পরে তাকে এলোপাতাড়ি মারধরের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।নিহত মিলন মিয়ার স্ত্রী পারভিন বেগম বলেন, আমার স্বামী সারা জীবন নৌকার জন্য জানপ্রাণ ছিলেন।এ কারণেই ওনাকে নৌকার এজেন্ট করা হয়।কিন্তু তা-ই কাল হল তার। যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই।নিহতের ছোট ভাই সাত্তার মিয়া বলেন,এমপি সিরাজ মোল্লার উপস্থিতিতে সিংহ প্রতীকের ব্যালটে সিল মারা হচ্ছিল।তা দেখে নৌকার এজেন্ট হিসেবে থাকা আমার ভাই বাধা দেয়।তখন এমপির লোকজন আমার ভাইকে ধাওয়া করে হত্যা করে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় পরবর্তীতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।এছাড়াও সিরাজ মোল্লা ও তার স্ত্রী তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম চিঠি পাঠিয়ে তলব করেন।আ ১০ জুন ২০১৯ সালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিরাজুল ইসলামকে কমিশনে হাজির হতেও বলা হয়।এ সম্পর্কিত সংবাদে টেলিভিশন মিডিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইন ও সংবাদপত্রে তাকে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ ঐসময় বলেন,সিরাজুল ইসলাম মোল্লা কখনো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন না। মিডিয়াগুলো তাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে।কারো ব্যক্তিগত দুর্নীতির দায় আওয়ামী লীগের নন।আর তিনি তো আওয়ামী লীগের কেউ নন।প্রসঙ্গত: সিরাজুল ইসলাম মোল্লা আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।দলীয় মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হওয়ায় দশম জাতীয় সংসদে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন।ওই নির্বাচনে তিনি জয়ী হলেও সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।এলাকায় বিএনপির সাবেক মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুইয়ার সমর্থিত লোক হিসেবে পরিচিত ছিল।মান্নান ভুইয়ার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ডোনার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।২০১৪ সালে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে মান্নান ভুইয়া ও জামাত-বিএনপির ভোট ও কালো টাকার প্রভাব বিস্তার করেই তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন।তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় স্বর্ণ চোরাচালানি ও জাল টাকার মামলার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।২০২৪ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে দ্বিতীয়বারেরমত বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।তিনি পেয়েছেন ৫৬,৭৭৯ ভোট,তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি খান পেয়েছেন ৪৫,১১৫ ভোট।২০২৪ এ বিজয়ের পরপরই শুরু হয় সিরাজ মোল্লার পরিবার তন্ত্রের রাজনীতি নিজ স্ত্রীকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানানোর জন্য ব্যস্ত হন।কালো টাকার বিনিময়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে নেন শিবপুর আমি মহিলা লীগের সভাপতি ফেরদৌসী ইসলামকে,নির্বাচনে রেশ কাটতে না কাটতেই সিরাজ মোল্লার আপন ছোট ভাই শিবপুর পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।নরসিংদী জেলা আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি শিল্পপতি মোঃ সামসুল ইসলাম মোল্লা, সিরাজ মোল্লা এমপি থাকাকালীন সময় অবৈধ সম্পদ, অন্যের জমি দখল,টেন্ডার বাজি করে বনে যান এডাল সম্পত্তির মালিক।আরো বিস্তারিত দ্বিতীয় সংখ্যায়।
মন্তব্য