পটুয়াখালী প্রতিনিধি >>> বাংলাদেশ পুলিশের পুলিশ সুপার পদে কর্মরত আনসার উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার পরেও কিভাবে সে বাহিনীতে বহাল তরিয়তে থাকে এই প্রশ্ন সর্ব মহলের। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। যার মামলা নং-২২, তারিখ : ৭/৯/২০২৪। ঐ মামলায় পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ মোট আসামী ৮৭ জন। এসপি আনাসার উদ্দিন ঐ মামলা ১৭ নং আসামী। এছাড়াও এসপি আনসার উদ্দিনের নানা ক্ষমতার অপ-ব্যবহার ও অপকর্মের বিচার চেয়ে স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে আবেদন করেন, বরিশাল জলার মুলাদী উপজেলার কায়েতমারা গ্রামের ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন বেপারী। গত ১৮ আগষ্ট এই অভিযোগটি করা হয়। ঐ অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায় এসপি আনসার উদ্দিন সর্বশেষ ট্যুরিষ্ট পুলিশের কুয়াকাটা রিজোনে কর্মরত ছিল। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের ২৭ তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা তার বিপি নং-৭৬০৮১২১৬৫০। সরাষ্ট্র সচিবের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয় এসপি আনসার উদ্দিন মুলাদীতে এক আতংকের নাম। তিনি নিয়মিত এলাকায় একিট সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তার সহযোগীতায় ঐ বাহিনী এলাকায় মাদক ব্যাবসাসহ চুরি ছিনতাই ও সর্ব প্রকার অপকর্মের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। এলাকার দুর্বল মানুষের জমি দখল মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা ঐ চক্রের কাজ। অভিযোগে বলা হয় এসপি আনসার উদ্দিন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় ঐ এলাকার ইট ভাটা মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিনামুল্যে বাল্কহেড ভরে নদী পথে ইট এনে স্থানীয় সুলতান বেপারীর জমি জোরপূর্বক দখল করে কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে একটি অট্টালিকা নির্মান করে। যশোর থেকে বদলী হওয়ার পরে তার নিজ এলাকায় মাঝে মাঝে লোকজন আসত। তখন ঐসব লোক বলত পুলিশি ভয় দেখিয়ে বাজার মুল্যের অর্ধেক দামে তাদের কাছ থেকে ইট কিনলেও সেই টাকাও পরিষোধ করেনি আনসার উদ্দিন। ২০২৪ সালে আনসার উদ্দিন বারিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিল। তখন সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরীর প্রশ্নপত্র ফাসের আসামীদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আইনী সহায়তা দিয়েছেন। স্থানীয় মাদক কারবারীদের প্রশ্রয় দেয়ায় আনসার উদ্দিনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সব সময় ক্ষিপ্ত। কিছু দিন আগে তার ভায়রা মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক হলে সে মুলাদী থানার ওসিকে ফোন দিয়ে প্রভাবিত করে। এসপি আনসার উদ্দিনের ভাগিনা স্থানীয় ডা: আবু তালেবের মেয়েকে ধর্ষন করার চেষ্টা ও শ্লীলতাহানী করেলেও আনসার উদ্দিন থানা ফোন করে মামলা করতে দেয়নি। অন্য এক অভিযোগে জানা যায়, ২০১২ সালে স্থানীয় লিয়াকত কাজীর মেয়েকে ধর্ষন মামলায় নিরপরাধ ৩জনকে মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করতে সহায়তা করেছেন এই এসপি আনসার উদ্দিন । কিছুদিন পুর্বেও বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ভাতিজিকে এসপি আনসার উদ্দিনের ভাগিনা ধর্ষন করলেও ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা করতে দেয়নি আসনার উদ্দিন। ছুটিতে আনসার উদ্দিন বাড়ীতে গেলে দাম্বিকতা করে বলে আমার সিদ্ধান্তের বাহিরে কেউ কথা বললে তাকে মামলা দিয়ে শায়েস্তা করা হবে। গত ১১ জুন কলেজ ছাত্রী মোঃ রুনাকে নদীর পারে একা পেয়ে ধর্ষন করে এসপি আনসার উদ্দিনের ভাগিনা তার কোন বিচার বা মামলা করতে দেয়নি আনসার উদ্দিন । জনস্বার্থে এলাকাবাসীর জন্য ৬০ লাখ টাকা ব্যায়ে একিট কালভার্ট নির্মানের কথা থাকলেও এসপি আনসার উদ্দিন প্রভাব খাটিয়ে তার বাড়ীতে ঢোকার জন্য কালভার্টটি সংযুক্ত করে নিয়েছেন। ঐ কালভার্ট শুধু তার বাড়ীতে যাওয়ার জন্যই ব্যবহৃত হচ্ছে। ঐ অভিযোগে আরও বলা হয় এসপি আনসার উদ্দিন একজন সরকারী চাকুরীজিবী হলেও গত উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সংগঠনিক সম্পাদক মো: জহির উদ্দিন খসরুর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারনাসহ প্রার্থীকে জয়ী করতে সকল আয়োজন করেছেন। তার সাথে বরিশাল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরীয়া টিপুর সাথে বিশেষ সক্ষতার কারনে সকল অন্যায়ের অপরাধ করার পরেও পার পেয়ে গেছেন। এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাবেক এক অতিরিক্ত সচিব এর সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকায় বিসিএস ২৭ ব্যাচের পুলিশ অফিসারদেরকে নানারকম হয়রানী করেছেন। ভুক্তভোগীরা হত্যা মামলার এই আসামী আনসার উদ্দিনকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবী করছে। ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে শীগ্রই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। প্রকাশ থাকে যে, আনসার উদ্দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এবং তার বাবা আব্দুল খালেক বেপারী চরকালেখান ইউনিয়ন আঃ লীগের সভাপতি ছিলেন।
মন্তব্য