১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
তানোরে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের গাছ চুরির ঘটনা ধাঁমাচাঁপা বাসাইল কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত দুর্গাপুরের নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল পেকুয়ায় ৫ টি বসতবাড়ি পুডে ছাই,ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ইউ এন ও তানোরে দাদন ব্যবসায়ীর লাঞ্ছনা সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা  রাজশাহীতে তালাকপ্রাপ্ত নারীকে ধ/র্ষ/ণের প্রধান আসামি গ্রেপ্তার সুনামগঞ্জে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া কর্মরত সাংবাদিকদের মাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা লালমনিরহাটে মা-বাবা-ছেলে মিলে প্রতিবেশীর সন্তানকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগ শুক্রবার লাখো রোহিঙ্গার সমাগমে গণইফতার: অংশ নেবেন আন্তোনিও গুতেরেস ও ড.ইউনুস উখিয়ায় রোহিঙ্গা কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
আন্তর্জাতিক:

ইট ভাটার পতিত জমি থেকে কোটি টাকার ধান উৎপাদন।

  বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

মোঃ সজিব উদ্দিন,জেলা প্রতিনিধি,চুয়াডাঙ্গা >>>

ইটভাটার পতিত জমি থেকে কোটি টাকার ধান উৎপাদন দেশে এক ইঞ্চি জমিও পতিত থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনায় চুয়াডাঙ্গার ইটভাটার পতিত প্রায় ৩৭৫ বিঘা জমিতে চলতি আউশ মৌসুমে ধান চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া কিছু ইটভাটায় এবছর সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইটভাটার এসব পতিত জমি থেকে এবার ৩০০ মেট্রিক টন আউশ ধান উৎপাদনের আশা করছে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উৎপাদিত এসব ধান ও সবজির বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ জেলায় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় ২ হাজার বিঘার বেশি জমি রয়েছে। বৈশাখ মাস থেকেই ইটভাটার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রায় ৬ মাস এসব জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকে। ইটভাটার এসব পতিত জমি উপযোগী করে চাষ করা সম্ভব।  ২০২০ সালে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম চুয়াডাঙ্গাতে ৩০৪ বিঘা ইট ভাটার পতিত জমিতে ধান চাষের কার্যক্রম শুরু হয়। চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান এর উদ্যোগে দামুড়হুদায় ২১৭ বিঘা জমিতে ধান চাষ শুরু হয়। ওই বছরে চুয়াডাঙ্গা সদরে ৫৫ বিঘা, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৭ বিঘা, জীবননগর উপজেলায় ১৫ বিঘা ধান চাষ হয়। এরপর ২০২১ সালে ৩২৭ বিঘা, ২০২২ সালে ৩৫৫ বিঘা ইটভাটার জমিতে ধান চাষ হয়। চলতি বছরে এ জেলার চার উপজেলায় সর্বমোট ৩৭৫ বিঘা ইট ভাটার পতিত জমিতে ধান ও সবজি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামুড়হুদা উপজেলায় ২৫০ বিঘা, চুয়াডাঙ্গা সদরে ৭৫ বিঘা, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩০ বিঘা ও জীবননগর ‍উপজেলায় ২০ বিঘা ইট ভাটার পতিত জমিতে চাষ করা হয়েছে। ইটভাটায় ধান উৎপাদন লাভজনক হওয়ার কারণে দিন দিন চাষের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সকল ইটভাটা চাষের আওতায় চলে আসলে এ থেকে আরো অতিরিক্ত আউশ ধান উৎপাদন সম্ভব হবে। খাদ্যের উদ্বৃত্তের তালিকায় নতুন দিগন্ত উন্মেচিত হবে। সেই সঙ্গে ইটভাটাগুলো আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান বলেন, দেশে এক ইঞ্চি জমিও পতিত থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনায় আমরা অকৃষি পতিত জমির খোঁজ করি। সে অনুযায়ী আমরা দেখি বর্ষাকালীন সময়ে ইটভাটার জমিগুলো প্রায় ৬ মাস পতিত থেকে যায়। ইটভাটার মালিকদের নিয়ে আলোচনা করে এ সম্পর্কে বলি এবং চাষ সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করি ও বিভিন্ন প্রনোদনার আওতায় সহায়তা প্রদান করি। শুরুর দিকে আমরা দামুড়হুদা উপজেলায় ৩২ ইটভাটায় চাষের মাধ্যমে শুরু করি। পরবর্তীতে বর্ষাকালীন বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করেছি। চাষের পর তারা আবার ইটভাটার যে কার্যক্রম সেটা সেভাবেই কাজে লাগাতে পারছে। এতে ইটভাটার কার্যক্রমের কোনো প্রকার ব্যাঘাত ঘটছে না। যার কারণে এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ইটভাটা মালিক আক্তারুজ্জামান বলেন, আমরা ইটভাটা বন্ধের সময় পতিত জমিতে এখন ধান ও সবজির চাষ করছি। এ সকল চাষ ইটভাটার শ্রমিকরাই করছে। এতে করে অন্য সময় তাদের ছয় মাস বেকার বসে থাকতে হতো। এখন চাষ করার কারণে তাদের আর বেকার বসে থাকতে হচ্ছে না। আমরা যেমন ধান উৎপাদন করে লাভবান হতে পারছি তেমনি শ্রমিকদেরও কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে জমি পতিত ফেলে না রেখে ধানের আবাদ করা লাভজনক। প্রত্যেক ভাটা মালিকের উচিত জমি পতিত না রেখে চাষ করা।  ইটভাটা শ্রমিক আশরাফ আলী বলেন, আমরা এই বর্ষার মৌসুমে ইটভাটার পতিত জমিতে ধান চাষ ও সবজি চাষ করছি। যার মাধ্যমে আমাদের বেকার বসে থাকতে হচ্ছে না। ইটভাটা শ্রমিক মোশারেফ হোসেন বলেন, আমরা আগে প্রায় ছয় মাস বেকার বসে থাকতাম। এখন ইটভাটার এসব পতিত জমিতে চাষের মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। আবার চাষ থেকে ধান-চাল ও সবজি উৎপাদন করে সেগেুলো দিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারছি।ইট ভাটা ম্যানেজার জাহিদুল হক বলেন, প্রতি বছর বৈশাখ মাস থেকে প্রায় ৬ মাস ইট ভাটার ইট উৎপাদন বন্ধ থাকে। এরপর ইটভাটায় অনেক জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। ইটভাটার শ্রমিকরাও বেকার বসে থাকত। এসকল জমিতে আমরা ধান ও সবজি চাষ করছি। ধানের চেয়ে লাউ চাষে লাভ বেশি হওয়ার কারণে এবছর আমরা প্রায় ২০ বিঘা জমিতে লাউ চাষ করছি।চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় যেসব অকৃষি পতিত জমি আছে সেগুলো চাষের উপযোগী করে চাষ করা যায় তার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। ২০২০ সাল থেকে ইটভাটার পতিত জমিগুলো কাজে লাগিয়ে চাষ শুরু করেছি। এবছরও আমরা এ জেলার ইটভাটার ৩৭৫ বিঘা পতিত জমিতে ধান, সবজি ও ঘাস চাষ করার ব্যবস্থা করেছি। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে ধান ও সবজি উৎপাদনে খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয়। এতে করে ইটভাটা মালিক ও শ্রমিক উভয়ই লাভবান হতে পারছে। আমরা ইটভাটা মালিকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে চলেছি যার কারণে চাষের পরিমাণ প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইটভাটার পতিত জমিতে চাষ চুয়াডাঙ্গায় প্রথম শুরু হলেও এর সুবিধা প্রচার হওয়ার কারণে পার্শ্ববর্তী জেলাসহ সারা দেশেই এটা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ইট ভাটার বেকার শ্রমিকরা কৃষি কাজ করে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সুনামগঞ্জে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া কর্মরত সাংবাদিকদের মাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা
লালমনিরহাটে মা-বাবা-ছেলে মিলে প্রতিবেশীর সন্তানকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগ
শুক্রবার লাখো রোহিঙ্গার সমাগমে গণইফতার: অংশ নেবেন আন্তোনিও গুতেরেস ও ড.ইউনুস
উখিয়ায় রোহিঙ্গা কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নতুন সংকট আরাকান আর্মি!
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ দল কর্তৃক ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট পরিদর্শন
বাংলাদেশ ব্যাংকস্ এমপ্লয়ীজ ফেডারেশনের উদ্যোগে শ্রম সংস্কার কমিশন মতামত আলচনা সভা।
কক্সবাজারে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

You cannot copy content of this page