২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
এশিয়ান লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড পেলেন মৃধা ফারুকুল ইসলাম রাজবাড়ী জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার ও চোর চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামার বাড়ী যাওয়া হলো না সাফওয়ানের স্ট্রাক চাপায় মৃত্যু পেকুয়ায় ডাম্পার-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১আহত ১ তানোরে হত্যা মামলায় তালিকাভুক্ত আসামী আটক ড. ইউনূস অপারগ হলে বিকল্প খুঁজে নেবে জনগণ: সালাউদ্দিন আহমেদ ভারতীয় কোম্পানির ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের চুক্তি বাতিল করলো সরকার তরুণদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান জানালেন ডা. জুবাইদার ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়াতে দেশে ফিরবেন পিনাকী-ইলিয়াস ও কনক! প্রধান উপদেষ্টার পাশে একটা টক্সিক সার্কেল রয়েছে’
  • প্রচ্ছদ
  • অন্যান্য >> চট্টগ্রাম
  • পূর্বেকার ঘটনা এখনো আমাদের মনে ঘৃণার সৃষ্টি হয় এবং এটার জন্য কেবল খুনি হাসিনা ও তার দোসররা-ই দায়ী চট্টগ্রামে সমন্বয়ক সারজিস আলম
  • পূর্বেকার ঘটনা এখনো আমাদের মনে ঘৃণার সৃষ্টি হয় এবং এটার জন্য কেবল খুনি হাসিনা ও তার দোসররা-ই দায়ী চট্টগ্রামে সমন্বয়ক সারজিস আলম

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    এম,এ কাশেম,বিশেষ প্রতিনিধি চট্টগ্রাম>>> সমন্বয়ক ও ছাত্রনেতাদের স্বজনদের কান্না এবং আবেগঘন পরিবেশ দেখে সমন্বয়ক সারজিস আলমের চোখে ও পানি।খুনীরা যেন আর কোনো ভাবেই পুনর্বাসনের সুযোগ না পায় সেই আশাবাদ এবং দৃঢ় প্রত্যয় সমন্বয়ক সারজিস আলমের।জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে নিহত চট্টগ্রাম বিভাগের ১০৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই সহায়তা দেয়া হয়।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।এসময় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে তারা সাক্ষাৎ করেন এবং প্রতিটি পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় এ অনুষ্ঠান।এ সময় সমন্বয়ক ও ছাত্রনেতাদের দেখে নিহতের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।তাদের কেউ হারিয়েছেন বাবাকে,কেউ সন্তান, কেউ বা হারিয়েছেন প্রাণপ্রিয় স্বামীকে।তাদের কান্নায় পুরো মিলনায়তন জুড়ে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।চারদিকে শুধু কান্নার আওয়াজ।যে নীরবে বসে আছে তাদের ও চোখে পানি।এ দৃশ্য দেখে চোখ ভিজে উঠে অনেক উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদেরও।অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই আন্দোলনের একটি ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।তা দেখে আরও আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।কোনো ভাবেই স্বজন হারানোর বেদনা ভুলতে পারছেন না তারা।এ সময় সারজিস আলমকে জড়িয়ে ধরে এক শহীদের মা বিলাপ করে করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।পরিবারের একমাত্র অবলম্বনকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি তারা যেনো কোনো ভাবেই ভুলতে পারছেন না।তাদের এ শোক কোনোদিন শেষ হবে না।রাষ্ট্র যাতে তাদের এ ত্যাগের কথা ভুলে না যায় সেই অনুরোধ জানান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।রাষ্ট্র যেনো সবসময় তাদের পাশে থাকে এবং সকল শহীদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করে-সেই দাবিও জানান তারা।এ সময় প্রয়োজনে আবার আন্দোলনে নামার ডাক দিয়ে সারজিস আলম বলেন, শেখ হাসিনা ও তার দোসররা নতুন রূপে ফিরে আসতে চাইছে। ষড়যন্ত্র করছে নানামুখী।তাদের প্রতিহত করতে প্রয়োজনে ছাত্র–জনতা আবারও সড়কে নামবে।জুলাই আন্দোলনের নৃশংসতার বর্ণনা দিয়ে সারজিস বলেন,এখনও যার এই আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফ্যাসিস্টের সাফাই গাইছে তারা শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া কীট।যা সে এতো বছর লালন করেছে।এসব কীটদের যদি পাখা গজায় তাহলে আজ থেকে ৫ বছর পর তারা শহীদ পরিবারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। তিনি বলেন,খুনিরা যেনো কোনো ভাবেই পুনর্বাসনের সুযোগ না পায় সে জন্য সচেতন থাকতে হবে।প্রয়োজনে আবারও জীবন বাজি রাখতে আমরা প্রস্তুত।আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরে সারজিস বলেন,জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যায় বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকাণ্ডের কারণে পুলিশের পোশাক দেখে এখনো ভীতির সৃষ্টি হয়।এ সময় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে সারজিস আলম বলেন,এই খুনি বাংলাদেশ পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানকে পশুর মতো ব্যবহার করে বাংলাদেশের মানুষকে নরপশুর মতো খুন করেছে। আপনাদের পোশাক দেখে এখনো আমাদের ভীতির সৃষ্টি হয়। এখনো আমাদের মনে ঘৃণার সৃষ্টি হয় এবং এটার জন্য কেবল খুনি হাসিনা দায়ী এবং আপনাদের ব্যক্তিত্ব দায়ী। আপনারা ক্ষমতার লোভে,পদের লোভে ওই পোশাকটিকে ধারণ করে অপব্যবহার করে সারা বাংলাদেশে নানারকম কুকর্মে সহযোগিতা করেছেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, নতুন করে এই বাংলাদেশে ওই পোশাক পরে কিছু পুলিশ সদস্য আবার একটি দলের হয়ে কাজ করছে। দয়া করে ওই পোশাকটা খুলে রেখে চলে যান। আমরা কিন্তু জীবন দিতে শিখে গিয়েছি।সারজিস আরও বলেন,সেনাবাহিনী যদি চাইতো ৫ আগস্ট ১০ হাজার মানুষকে খুন করে হাসিনাকে মসনদে বসিয়ে রাখতে পারতো।কিন্তু তারা সেটা করেনি। তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের সম্মানের কথা চিন্তা করেছেন।এখনো শহীদদের নিয়ে মামলা ব্যবসা বলে সারজিস আলম বলেছেন, এই দেশে কোনো দালাল ও তোষামোদকারীর আর জায়গা হবে না।শহীদ ভাইদের নিয়ে এখনো মামলা ব্যবসা হচ্ছে।আমরা আর এগুলো দেখতে চাই না।আন্দোলনে স্বজন হারানোদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,আপনাদের শক্ত হতে হবে।এই খুনগুলোর বিচার বাংলাদেশে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কথা বলে যাবো।যে কেউ যদি আপনাদের নিয়ে ছেলেখেলা করার চেষ্টা করে– কোনো প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আমরা বাংলাদেশে যুদ্ধ ঘোষণা করবো।আর্থিক সহায়তা কখনো পরিবারের অভাব পূরণ করতে পারবে না উল্লেখ করে সারজিস বলেন, ছেলে হারানো মা–বাবা, বাবা হারানো সন্তান, স্বামী হারানো স্ত্রীসহ অসংখ্য মানুষের দিনের পর দিন কান্না দেখতে দেখতে আমরা মেন্টালি ট্রমাটাইজড।তিনি আরও বলেন,নতুন বাংলাদেশে এখনো সেই খুনিদের নাম উচ্চারিত হয়।নানাভাবে সাফাই গাওয়া হয়।ওদের রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে কথা বলা হয়।খুনিরা হচ্ছে একেকজন প্যাথলজিক্যাল কিলার।ওই কিলার গোপালগঞ্জের শেখ পরিবার থেকে উঠে এসেছে।এই খুনি বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশের মানুষকে নানাভাবে খুন করেছে।কিন্তু তারা মিডিয়া সহ পুরো বাংলাদেশকে জিম্মি করে রাখায় এগুলো সামনে আসেনি এতোদিন।জানা যায়, ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ এর উদ্যোগে ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ শিরোনামে এ সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় চট্টগ্রাম বিভাগের ১৫২ শহীদ পরিবারের মধ্যে ১০৫ পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে চেক হস্তান্তর করা হয়।বাকি পরিবার গুলোকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া শেষে চেক পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, রাসেল আহমেদ সহ অন্যান্যরা।

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page