ইমরান আহমদ >>> বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম নাটমুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের কাঁচা রাস্তা ছিল দীর্ঘদিন ধরে জনদুর্ভোগের কারণ। রাত হলেই নিকষ অন্ধকারে হারিয়ে যেত পথ—বর্ষায় হতো কর্দমাক্ত, শুকনো মৌসুমে ধুলোয় ধূসর। অথচ, এই রাস্তাটি যাদের সরকারি দায়িত্বে পড়ে, তারা যেন ছিলেন চিরঘুমে আচ্ছন্ন।যেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল উদ্যোগ নেওয়া, বরাদ্দ এনে কাজ বাস্তবায়ন করা—সেখানে তাদের ‘নিরবতা’ যেন ব্যর্থতার ছায়া হয়ে নেমে এসেছে।মানুষ যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে ভয় পায়, তখন যারা ক্ষমতার চেয়ারে বসে আছেন, তাদের ঘুম ভাঙে না কেন? এই প্রশ্ন এখন পুরো ওয়ার্ড জুড়ে।কিন্তু থেমে থাকেনি এলাকা। দাঁড়িয়েছে তরুণরাই, নিজেরাই নিয়েছেন শোভন উদ্যোগ—আর রাতারাতি বদলে দিয়েছেন বাস্তবতা।চাঁদপুর বাজার কল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক আহসান উল্লাহ,ও তরুণ সমাজসেবক তৌহিদুল হক এর একান্ত প্রচেষ্টায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়ছে বলে জানা যায়।আরও পাশে ছিলেন সমাজহিতৈষী রিপন উল্লাহ,মারুফ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মহিবুল্লাহ, ফারুক আহমেদ,জেবুল হোসেন,দেলোয়ার,শাহেদ, তৌহিদুল হক, মিজান আহমেদ , সাইফুদ্দিন, হাফেজ এমরান উল্লাহ, সমাজকর্মী জিয়াউল হক, ফরহাদ, উদীয়মান তরুণ সমাজসেবক শফিকুল ইসলাম আবির, ওয়াহেদুল ইসলাম সহ অনেকেই। এই উদ্যোগে নিজের শ্রম, অর্থ, সময় সব উজাড় করে দিয়েছেন।এই মহৎ উদ্যোগের পাশে ছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জনপ্রিয় ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন ময়ূরও।তিনি এই কাজে ব্যক্তিগত অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন এবং মাঠ পর্যায়ে তদারকি করে সার্বক্ষণিক পাশে ছিলেন। তার এমন সহায়তা এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে।এটা যেন এক নতুন বার্তা—”রাস্তা শুধু ইট-বালু দিয়ে নয়, তৈরি হয় দায়িত্ববোধ আর ভালোবাসা দিয়ে।”এর আগে এ তরুণরাই পুরো এলাকায় নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে লাখ টাকা ব্যয়ে লাইট বসিয়েছিলো, যাতে রাতের আঁধারে কারও চলাচলে সমস্যা না হয়। তারা কখনো সরকারের দয়ার অপেক্ষায় থাকেন না—ডাকে সাড়া দেন প্রবাসী ভাইয়েরাও। যার যা আছে, তাই দিয়েই চলে এলাকার উন্নয়ন।এনাম ভাইয়ের দোকান থেকে স্কুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত এক রাতে ঢালাই হওয়া সেই রাস্তাটি আজ কেবল চলাচলের পথ নয়, এটি একটি প্রতিবাদ, একটি প্রতিজ্ঞা, “আমরা আর কারও ঘুম ভাঙার অপেক্ষায় থাকবো না—আমরা নিজেরা জেগে উঠবো, নিজেরা গড়বো।”সরকারি দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের প্রতি এখন একটাই বার্তা—”সময় থাকতে জেগে উঠুন, নয়তো ইতিহাস আপনাকে ভুলে যাবে, আর মানুষ নিজেরাই সব করে ফেলবে!”
মন্তব্য