সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জে এক ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের বিরুদ্ধে স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই অফিসের এক কাজের মহিলার সাথে গোপনে পরকীয়া,অভিসার ও গর্ভবর্তী করে অতপর মন্দিরে গিয়ে বিয়ে কাজ সম্পন্ন করায় স্বামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে স্ত্রীর অভিযোগ দায়ের।চলতি বছরের গত ২৮ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়ন পরিষদের সচিব টিটু রঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে এ অভিযোগটি দায়ের করেন সমীরা রানী তালুকদারের মেয়ে অভিযুক্ত সচিব টিটু রঞ্জন দাসের সহধর্মিনী মণি রানী তালুকদার(৩৬)।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,২০১২ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারী উভয়পক্ষের পরিবারের অভিভাবকদের সম্মতিক্রমে সনাতন ধর্মীয় রীতি নীতি অনুসরন করে টিটু রঞ্জন দাসের সাথে অভিযোগকারী মণি রানী তালুকদারের বিবাহ কার্য সম্পন্ন হয় । তাদের দাম্পত্য জীবন ভালভাবে চলায় ২০১৩ সালের ৩রা মার্চ তাদের একটি পূত্র সন্তান জন্মগ্রহন করে।গত ২০১৮ সালের ১৫ই ফেব্রæয়ারী সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে অটোগাড়ি র্দূঘটনায় তাদের শিশু সন্তানটি গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ছেলের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে এবং শারীরিক সমস্যার কারণে আরেকটি সন্তান জন্ম দিতে কিছুটা বিলম্বিত হয় বলে তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।মণি রানী তালুকদার জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার ৪৬নং শ্রীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। দম্পতি স্বামী টিটু রঞ্জন দাস ও তার সহধর্মিনী মণি রানী তালুকদারের শারীরিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০২২ সালের ৩রা আগষ্ট দুই মাসের ছুটি নিয়ে উভয়ই পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের চেন্নাই শহরে যান। স্ত্রী মণি রানী তালুকদারকে চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাই শহরে রেখে গত ২রা সেপ্টেম্বর স্বামী টিটু দেশে এসে তাড়ল ইউনিয়নে কর্মস্থলে যোগদান করেন এবং ঐ অফিসের কাজের এক মহিলার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে অবৈধ মেলামেশা করে অন্তঃসত্বা করেন এবং পরে ঐ মহিলাকে সুনামগঞ্জ শহরের বাদির নিজস্ব বাসায় এনে রেখে দেন।পরবর্তীতে ঐ বছরের ৪ নভেম্বর পূনরায় স্বামী টিটু তার স্ত্রী মণি রানী তালুকদারকে দেখতে ভারতের চেন্নাই শহরে যান এবং দেখে স্ত্রীকে রেখে ১৩ই ডিসেম্বর টিটু দেশে ফিরে আসেন। বাদি অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ করেন তিনি চিকিৎসা শেষ না করেই নিজের চাকুরীর কথা বিবেচনায় রেখে চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের নিকট ২/৩ মাসের সময় নিয়ে তিনি চলতি বছরের ১৩ই ফেব্রুয়ারী তিনি (মণি রানী)দেশে ফিরে আসেন। তিনি দেশে এসে জানতে পারেন তার স্বামী তার কোন লিখিত অনুমতি ছাড়াই তার অজান্তে তার অফিসের ঐ মহিলার সাথে অবৈধ মেলামেশার এক পর্যায়ে মহিলাটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।মহিলাটির নাম হচ্ছে ইতি রানী দাস(২৫)। তিনি দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রামের মৃত খোকা চন্দ্র দাসের মেয়ে । টিটু ঐ মহিলাটিকে একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে গোপনে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে মহিলাটিকে নিয়ে সিলেটে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করলেও প্রথম স্ত্রী হিসেবে টিটু তার স্ত্রী মণি রানী তালুকদারের কোন খোঁজখবরই নিচ্ছেন না বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।এদিকে স্বামী টিটুর যৌতুকের চাহিদা পূরণ করতে স্ত্রী মণি রানী তার বাবার বাড়ি হতে যৌতুক বাবত ৬ লাখ টাকা,তার শিক্ষকতা জীবনে চাকুরীর সমস্ত টাকা এবং ব্যাংক থেকে আরো ৮ লাভ টাকা লোন তুলে সমস্ত টাকা স্বামী টিটু রঞ্জন দাসের হাতে তুলে দেন এবং শহরের ষোলঘর এলাকায় ২.৬১ শতক জায়গা দু”জন মিলে খরিদ করেন। কিন্তু স্বামী টিটু রঞ্জন দাস সুকৌশলে খরিদকৃত জায়গাটুকু তার নামে রেজিষ্ট্রি করে নেন এবং খরিদকৃত জায়গাতে ৫০/৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলা ফাউন্ডেশনে দু”তলা বিল্ডিংয়ের বাসার কাজ সম্পন্ন করে স্বামী স্ত্রী দুজন মিলে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে হিন্দু ধর্মের নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে অফিসের কাজের মহিলা ইতি রানী দাসকে বিয়ে করে বাসায় তুলে এনে স্বামী টিটু তার গ্রামের বাড়ি হতে পিতা কবিন্দ্র দাস,মা ও মামাতো ভাই কৌশিক দাসকে বাসায় এনে অভিযোগকারী মণি রানী তালুকদারকে বাসা থেকে গাঢ ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন বলে তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন। তিনি বর্তমানে শহরে স্বজনদের বাসায় অবস্থান করছেন।এ ব্যাপারে অভিযোগকারী মণি রানী তালুকদার সাংবাদিকদের জানান,তিনি স্বজনদের বাসায় থেকে কর্মজীবন পরিচালনা করলে ও তার স্বামী টিটু রঞ্জন দাস তাকে অভিযোগ তুলে নিতে এবং আগামীতে কোন ধরনের মামলার আশ্রয় নিলে বিভিন্নভাবে হুমকি দামকী দিচ্ছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। তিনি তার স্বামী টিটুর দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মণির স্বামী টিটু রঞ্জন দাসের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবী করেন। তবে দ্বিতীয় আরেকটি বিয়ে করার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,আমার প্রথম স্ত্রী মণির বাচ্ছা নেয়ার সক্ষমতা নেই। কেননা ইতিমধ্যে তাকে নিয়ে ভারতের চেন্নাইয়ে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, প্রচুর টাকা খরচ করলে ও ডাক্তার বলেছে মনির কূলে বাচ্চা আসার কোন সম্ভাবনা নেই। মনি আমাকে বাচ্চার মুখ দেখবে বলে আরেকটি বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছিল তাই বিয়ে করেছেন বলে তিনি জানান।এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি তদন্ত করতে ডিডি এলজিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে,তদন্ত সাপেক্ষে দোষ প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##
মন্তব্য