২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম:
লোহাগড়ায় যুবদলের উদ্দেগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় একজন নিবেদিত মানুষের নাম রিয়াজুল ইসলাম কাওছার। আজ তার শুভ জন্মদিন। ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার খতমে কুরআন-আলোচনা সভা ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা ফটিকছড়িতে দিনে-দুপুরে ফ্ল্যাট বাসার তালা ভেঙে চুরি নড়াইলের আমাদা কলেজে ষষ্ঠবার্ষিকী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত সাঙ্গু ইউনিয়ন চট্টগ্রাম এর প্রতিবাদ কর্মসূচি সফলভাবে অনুষ্ঠিত। তানোরে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা কোম্পানীগঞ্জে রামপুর ইউনিয়নে হতদরিদ্রের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ। চাটখিলে সাংবাদিকের উপর হামলা থানায় অভিযোগ
আন্তর্জাতিক:
  • প্রচ্ছদ
  • সাহিত্য
  • চাইনা থাকতে বৃদ্ধাশ্রমে
  • চাইনা থাকতে বৃদ্ধাশ্রমে

      বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন

    লেখকঃ সাদেকুল ইসলাম

    পবিত্র রমজান শেষের দিকে, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বাসায় গিয়ে মনোস্থির করলাম,এবার ঈদ উৎযাপন করবো একটা বৃদ্ধাশ্রমের অসহায় লোকদের সাথে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ, ঈদের দিন সকালে মিষ্টান্ন নিয়ে গেলাম এক বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে গিয়ে সবার সাথে কথা বললাম, মিষ্টান্ন(সেমাই) খাওয়ার সময় এক বৃদ্ধ(৭০) প্লেট হাতে নিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু বিসর্জন?? করতে লাগলো।

    ওনার কান্না দেখে এগিয়ে এসে বসে পরলাম তার পাশে। কাধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলাম,”বাবা আপনি কাঁদছেন কেন?”উত্তরে বৃদ্ধ লোকটি বলতে লাগলেন তার জীবনে ফেলে আসা অতীত স্মৃতির কিছু গল্প।হাউ মাউ করে ডুকরে কাঁদতে লাগলেন, আর পাগলের মতো বিলোপ করে বলতে লাগলেন,

    “আজ খুব মনে পরতেছে আমার ছেলে নিলয়ের শৈশবের কথা। ও যখন ছোট্ট ছিল,তখন ওর মা হঠাৎ তাকে রেখে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ও সবসময় কাঁদতো,আমি তার জন্য কোথাও যেতে পারতামনা,

    তাকে সবসময় আগলে রাখতাম আমার বাহুডোরে। তাকে না খাইয়ে আমি কোনোদিন এক ফোটা পানিও মুখে দিতামনা,তাকে না ঘুমিয়ে আমি কখনোই দু’চোখ বুজতাম না।এসব বলতে বলতে বৃদ্ধ হুহু করে কেঁদে?? দিলেন,,,,,,,,,নিজেকে সংযত করে তিনি আবার বলতে লাগলেন,

    “আমি যখন একাই সব কাজ করতাম,তাকে সামলাতাম, আমার খুব কষ্ট হতো,তখন সবাই বলতো আমাকে একটা বিয়ে করতে,আমি না করে দিয়েছিলাম।কেন জানেন? তার সৎ মা যদি তাকে আদর না করে এই ভয়ে।ও যখন বড় হয়ে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো তখন শুরু হলো তার আর আমার মাঝে দূরত্ব।মি বাসায় আর ও থাকতো বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে। ও না চাইতেই আমি ওর সব চাওয়া পুরন করতাম।তার কোনো কিছুতেই অভাব রাখতাম না।ও গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে ভালো একটা চাকুরী নিলো,কিছুদিন পর বিয়ে করলো।

    হুহুহুহু.????..(ডুকরে কেঁদে উঠে বৃদ্ধ)

    বিয়ের পর ও আমকে শহরে নিয়ে যায় ওর বাসায়। কিছুদিন বউমা, আমি ও সে, আমরা একসাথে বেশ ভালোই ছিলাম।একদিন হঠাৎ করে আমি অসুস্থ হয়ে পরলাম, আমার বাম পা অবস হয়ে গেলো, চিকিৎসা করার পরেও খুব বেশি একটা সুস্থ হতে পারলাম না। আমি হাটতে পারতাম না বলে আমার হাতের নাগালে সব এনে দেয়া লাগতো, কিছুদিন সহ্য করলেও আসতে আসতে বউমা ও আমার ছেলে বিরক্ত হয়ে গেল আমার উপর, আমার যত্ন নেয়াটা তাদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে গেলো।

    আমায় রেখে আসলো বৃদ্ধাশ্রমে।বৃদ্ধের কথা গুলো শুনে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। টপটপ করে গড়িয়ে পড়লো চোখের পানি।আমি হতভম্ব হয়ে শুনতে লাগলাম তার করুন ইতিহাস। বৃদ্ধ দুহাতে তার চোখের পানি মুছে আবারো বলতে লাগলেন,বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে কেমন জানি আমার দম বন্ধ হয়ে আসে বাবা।

    আমার ছেলের কথা খুব মনে পড়ে। জানিনা ও কেমন আছে?ও তো ভুলেও এই বৃদ্ধ বাবাটার খবর নেয়না।এখানকার খাবার খাইতে আর ভালো লাগেনা, কতদিন ভালো কিছু খাইনা।ছোট বেলায় তাকে কত আদর করে খাওয়াতাম, সেই স্মৃতি খুব মনে পড়ে।

    বৃদ্ধ হুহু করে কাঁদতে?? লাগলো আর চিৎকার করে বলতে লাগলো, “ও খোকা! তোর এই বাবা টাকে নিয়ে যা তোর কাছে!আমি কোনো আবদার করবোনা, ধরবোনা কোনো বায়না।শুধু তোর পাশে থেকেই মরতে চাই,তোকে ভীষণ ভালোবাসিরে খোকা!

    আমি আর ‘থাকতে চাইনা বৃদ্ধাশ্রমে”।

    মন্তব্য

    আরও পড়ুন

    You cannot copy content of this page